পচা ও বাসি খাবার খাওয়ানোর অভিযোগে ক্যান্টিনে তালা ঝোলালেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা
- Update Time : ০৬:৪৯:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০২২
- / 289
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি:
পচা ও বাসি খাবার খাওয়ানোর অভিযোগে হল ক্যান্টিনে তালা লাগিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পল্লীকবি জসীম উদদীন হলের শিক্ষার্থীরা।
আজ শুক্রবার(২৬ আগষ্ট) দুপুরে খাওয়ার সময় পোকাযুক্ত নষ্ট ভাত পান হলের শিক্ষার্থীরা। পরে ক্যান্টিনের রান্নাঘর থেকে আরো পঁচা খাবার উদ্ধার করে হল বাগানে নিয়ে আসেন তারা । এ সময় শিক্ষার্থীদের সাথে ক্যান্টিনের ম্যানেজার মোবারক হোসেনের বাকবিতণ্ডা হয়। তখন শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে তাকে মারতে উদ্ধত হলে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টায় তাদেরকে থামানো হয়।
ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যান্টিনের সব খাবারই পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত। ভাতের নামে খাওয়ানো হচ্ছে চালের গুড়ি । এ ছাড়া সব ধরণের মাছ-গোশত ও তরিতরকারি বাসি ও পঁচা। এ সময় তারা ম্যানেজার মোবারককে অপসারণ এবং ক্যান্টিন পরিষ্কার ও মানসম্মত করার আগ পর্যন্ত তালাবদ্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দেন।
এ বিষয়ে আইন বিভাগে অধ্যয়নরত কবি জসীম উদদীন হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ক্যান্টিনের খাবার অধিকাংশ সময়ই বাসি থাকে। যে মোটা চালের ভাত দেওয়া হয় সেটা একরকম অখাদ্য। এছাড়া এখানকার বেশিরভাগ ক্যান্টিন বয়ই শিশু বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো সকলেই জানলেও কারও কোনো মাথাব্যাথা নেই।
এসময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন ক্যান্টিন ম্যানেজার মোবারক। তিনি বলেন, পঁচা চালের বস্তা দোকানদার ভুল করে দিয়ে গেছে । এছাড়াও পঁচা গোশতের প্যাকেটের বিষয়ে বলেন, ‘এটি হয়তো কোনো শিক্ষার্থী ক্যান্টিনের ফ্রিজে রেখে গেছে।’
ঘটনার এক পর্যায়ে কবি জসীম উদ্দীন হল প্রাধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, হাউজ টিউটর ড. মো. জহিরুল ইসলাম, হল ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়ালিউল সুমন ওরফে সুমন খলিফা ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান এসে শিক্ষার্থীদের যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শান্ত করেন।
ক্যান্টিনের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা যায়, খোলা রান্না করার ভাতের পাশেই রাখা আছে বাসন ধোয়ার পানি। যেখান থেকে সহজেই পানি ভাতে পড়ে। এছাড়াও ভাতে আছে পোকা। রান্না করা মুরগিতে দেখা যায় পালক। শুধু তাই নয় ফ্রিজের ভেতরের বেশির ভাগ খাবারই পঁচা ও নষ্ট।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, ক্যান্টিন ম্যানেজারকে অনেকদিন ধরেই সতর্ক করা হয়েছিলো। তাকে ভালো খাবার পরিবেশন করার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে৷ তারপরও সে আমাদের কথার কোনও গুরুত্বই দেয়নি। সে শিক্ষার্থীদের পোকা ও দুর্গন্ধযুক্ত খাবার পরিবেশন করেছে। এসব খাবার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। আমরা এই ক্যান্টিন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি।
এসময় প্রাধ্যক্ষ এই পচা খাবারগুলো দেখেন এবং তা ক্যান্টিন ম্যানেজারকে খেতে বলেন। এসব খাবার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত হল ক্যান্টিন বন্ধ থাকবে ।