ত্রাণ নিয়ে বন্যার্তদের পাশে নজরুল বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

  • Update Time : ০৮:৫৪:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুন ২০২২
  • / 293

মো: শুভ ইসলাম, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি সংগঠনের সমন্বয়ে সিলেটের সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে দাড়িয়েছেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

গত শুক্রবার রাত ৩.৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যাল ক্যাম্পাস থেকে ত্রাণের গাড়ি নিয়ে রওনা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি সংগঠনের প্রতিনিধি দল। সকাল ৯ টার দিকে নেত্রকোনার কমলাকান্দা পৌঁছালে এর পর ট্রলার নিয়ে রওনা দেয় সুনামগঞ্জ,জালালপুর, আনোয়ারপুর, শিব রামপুর, আরিফপুর, অনন্তপুর, রাজাপুর, পওল মাটি, মজমপুর এসব গ্রামগুলোতে ৩২৪ টি পরিবারের মাঝে ত্রান বিতরণ করা হয়।

এ বিষয়ে সবগুলো সংগঠনের সমন্বয়ক শাহীনূর রহমান বলেন “নেত্রকোণার খালিয়াজুড়ীতে আমাদের নিলয় মাহমুদ রুবেল ভাইয়ের নেতৃত্বে কাজ চলছে। প্রায় এতোগুলো পরিবারের জন্য রান্না করা খবার এবং শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। সেখানে প্রায় ৪৫০ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। সমন্বিত উদ্যেগে আমরা যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারি।একতাই বল এই স্লোগানকে ধারণ করে আমরা আবারো প্রমাণ করতে পেরেছি মানুষ মানুষের জন্য”।

এছাড়ও নির্ভয় ফাউন্ডেশন পরিচালক মো : আরিফুর ইসলাম বলেন, “সম্মিলিতভাবে কাজ করতে গিয়ে আমাদের প্রধান দুইটি চ্যালেঞ্জ ছিলো সঠিকভাবে সবকিছু সমন্বয় করা এবং সঠিকভাবে উপযুক্ত স্থানে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা। আল্লাহর রহমতে সকল সংগঠনগুলোর আন্তরিক সহযোগিতায় আমরা দু’টি চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলে করে কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। সুনামগঞ্জের দুর্গম হাওর এলাকার পাশাপাশি নেত্রকোনার খালিয়াজুড়িতে বানভাসি মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ পৌঁছে দিতে যারা আর্থিক, কায়িক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সহায়তা করেছেন তাদের প্রতি বানভাসি মানুষদের পক্ষ থেকে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতেও প্রতিটি দুর্যোগে এভাবেই আমরা একত্রিত হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে কাজ করতে চাই”।

জাককানইবির প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি রাফিয়া ইসলাম ভাবনা বললেন “চলমান সংকট তথা বন্যা পরিস্থিতিতে সুনামগঞ্জের ৯টি গ্রামে সাধ্য অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে অসহায় ও বানভাসি মানুষদের পাশে আমরা দাঁড়াতে পেরে আত্মতৃপ্তি বোধ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার সহ যারা আর্থিক সহায়তা প্রদান করে এই কাজকে বেগবান করেছে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আর্ত মানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকতে হলে সকলের একতাবদ্ধ ও সম্মিলিত কাজগুলো খুব ফলপ্রসূ হয়। কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তারই প্রমাণ দিলো। নজরুলিয়ান হিসেবে এ কাজে অংশগ্রহণ করতে পারা আমার জন্য পরম এক পাওয়া”।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেচ্ছাসেবী সংগঠন হাসিমুখে সভাপতি মোহাম্মদ সালমান বলেন “এই বিপর্যয় মুহুর্তে মানবিক ডাকে আমরা ১১টি সংগঠন একত্রিত হই বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য, প্রতিটি সংগঠনের সেচ্ছাসেবীদের অংশগ্রহণ ছিলো স্বতঃস্ফূর্ত। যেখানে কেউ ত্রান নিয়ে যায়না আমরা গিয়েছিলাম সেইখানে। দেশের এইরকম সংকটময় মুহূর্তে আমরা বন্যায় কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুবই আনন্দিত। “হাসিমুখ” সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই ধন্যবাদ, এইরকম মানবিক ডাকে সাড়া দিয়ে সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করার জন্য”।

এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাত্রলীগের সাধারণ মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, “আপনারা সকলেই জানেন বর্তমানে বাংলাদেশের সিলেট,সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা সহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কারনে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ১১টি সেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে।আমাদের এই সংগঠনগুলো বিভিন্ন ভাগে বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে।আমরা বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় কাউন্সিলরদের সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষথেকে আমাদের এই উপহারগুলো পৌছে দিচ্ছি।
তাই আমি চারুকলা অনুষদের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাই এই সেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলোর সাথে মানুষের জন্য কাজ করতে পেরে অনেক আনন্দিত।
আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক মাননীয় উপাচার্য ও আমার চারুকলা অনুষদের ডীন সৌমিত্র শেখর স্যারকে।আরো ধন্যবাদ জানাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের,যারা বিভিন্ন ভাবে আমাদের পাশে থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন”।

যেসকল সংগঠন গুলো একত্রিত হয়ে কাজ করছে সেসব সংগঠন গুলো হলো, রংধনু নির্ভয় ফাউন্ডেশন, জাককনইবি প্রথম আলো বন্ধুসভা, হাসিমুখ, অরণ্য ৭১এরচেতনা, উইমেন_পিস_ক্যাফে, উইমেন_লিডার্স,ক্যারিয়ার ক্লাব, রিসার্চ সোসাইটি,JKKNIU cyclist ,চারুকলা অনুষদ, ষড়ঙ্গ ব্যান্ডদল।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ত্রাণ নিয়ে বন্যার্তদের পাশে নজরুল বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

Update Time : ০৮:৫৪:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুন ২০২২

মো: শুভ ইসলাম, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি সংগঠনের সমন্বয়ে সিলেটের সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে দাড়িয়েছেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

গত শুক্রবার রাত ৩.৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যাল ক্যাম্পাস থেকে ত্রাণের গাড়ি নিয়ে রওনা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি সংগঠনের প্রতিনিধি দল। সকাল ৯ টার দিকে নেত্রকোনার কমলাকান্দা পৌঁছালে এর পর ট্রলার নিয়ে রওনা দেয় সুনামগঞ্জ,জালালপুর, আনোয়ারপুর, শিব রামপুর, আরিফপুর, অনন্তপুর, রাজাপুর, পওল মাটি, মজমপুর এসব গ্রামগুলোতে ৩২৪ টি পরিবারের মাঝে ত্রান বিতরণ করা হয়।

এ বিষয়ে সবগুলো সংগঠনের সমন্বয়ক শাহীনূর রহমান বলেন “নেত্রকোণার খালিয়াজুড়ীতে আমাদের নিলয় মাহমুদ রুবেল ভাইয়ের নেতৃত্বে কাজ চলছে। প্রায় এতোগুলো পরিবারের জন্য রান্না করা খবার এবং শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। সেখানে প্রায় ৪৫০ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। সমন্বিত উদ্যেগে আমরা যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারি।একতাই বল এই স্লোগানকে ধারণ করে আমরা আবারো প্রমাণ করতে পেরেছি মানুষ মানুষের জন্য”।

এছাড়ও নির্ভয় ফাউন্ডেশন পরিচালক মো : আরিফুর ইসলাম বলেন, “সম্মিলিতভাবে কাজ করতে গিয়ে আমাদের প্রধান দুইটি চ্যালেঞ্জ ছিলো সঠিকভাবে সবকিছু সমন্বয় করা এবং সঠিকভাবে উপযুক্ত স্থানে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা। আল্লাহর রহমতে সকল সংগঠনগুলোর আন্তরিক সহযোগিতায় আমরা দু’টি চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলে করে কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। সুনামগঞ্জের দুর্গম হাওর এলাকার পাশাপাশি নেত্রকোনার খালিয়াজুড়িতে বানভাসি মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ পৌঁছে দিতে যারা আর্থিক, কায়িক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সহায়তা করেছেন তাদের প্রতি বানভাসি মানুষদের পক্ষ থেকে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতেও প্রতিটি দুর্যোগে এভাবেই আমরা একত্রিত হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে কাজ করতে চাই”।

জাককানইবির প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি রাফিয়া ইসলাম ভাবনা বললেন “চলমান সংকট তথা বন্যা পরিস্থিতিতে সুনামগঞ্জের ৯টি গ্রামে সাধ্য অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে অসহায় ও বানভাসি মানুষদের পাশে আমরা দাঁড়াতে পেরে আত্মতৃপ্তি বোধ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার সহ যারা আর্থিক সহায়তা প্রদান করে এই কাজকে বেগবান করেছে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আর্ত মানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকতে হলে সকলের একতাবদ্ধ ও সম্মিলিত কাজগুলো খুব ফলপ্রসূ হয়। কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তারই প্রমাণ দিলো। নজরুলিয়ান হিসেবে এ কাজে অংশগ্রহণ করতে পারা আমার জন্য পরম এক পাওয়া”।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেচ্ছাসেবী সংগঠন হাসিমুখে সভাপতি মোহাম্মদ সালমান বলেন “এই বিপর্যয় মুহুর্তে মানবিক ডাকে আমরা ১১টি সংগঠন একত্রিত হই বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য, প্রতিটি সংগঠনের সেচ্ছাসেবীদের অংশগ্রহণ ছিলো স্বতঃস্ফূর্ত। যেখানে কেউ ত্রান নিয়ে যায়না আমরা গিয়েছিলাম সেইখানে। দেশের এইরকম সংকটময় মুহূর্তে আমরা বন্যায় কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুবই আনন্দিত। “হাসিমুখ” সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই ধন্যবাদ, এইরকম মানবিক ডাকে সাড়া দিয়ে সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করার জন্য”।

এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাত্রলীগের সাধারণ মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, “আপনারা সকলেই জানেন বর্তমানে বাংলাদেশের সিলেট,সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা সহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কারনে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ১১টি সেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে।আমাদের এই সংগঠনগুলো বিভিন্ন ভাগে বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে।আমরা বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় কাউন্সিলরদের সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষথেকে আমাদের এই উপহারগুলো পৌছে দিচ্ছি।
তাই আমি চারুকলা অনুষদের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাই এই সেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলোর সাথে মানুষের জন্য কাজ করতে পেরে অনেক আনন্দিত।
আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক মাননীয় উপাচার্য ও আমার চারুকলা অনুষদের ডীন সৌমিত্র শেখর স্যারকে।আরো ধন্যবাদ জানাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের,যারা বিভিন্ন ভাবে আমাদের পাশে থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন”।

যেসকল সংগঠন গুলো একত্রিত হয়ে কাজ করছে সেসব সংগঠন গুলো হলো, রংধনু নির্ভয় ফাউন্ডেশন, জাককনইবি প্রথম আলো বন্ধুসভা, হাসিমুখ, অরণ্য ৭১এরচেতনা, উইমেন_পিস_ক্যাফে, উইমেন_লিডার্স,ক্যারিয়ার ক্লাব, রিসার্চ সোসাইটি,JKKNIU cyclist ,চারুকলা অনুষদ, ষড়ঙ্গ ব্যান্ডদল।