কক্সবাজারে ইজিবাইক ও রিকশা চালকদের আচরণে বিরক্ত পযর্টকরা!

  • Update Time : ১০:০০:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ মার্চ ২০২২
  • / 381

অন্তর দে বিশাল,কক্সবাজার:

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত পর্যটন নগরী কক্সবাজারের ইজিবাইক ও রিকসা চালকদের আচরণে প্রতিনিয়ত বিব্রত-বোধ করছে আগত পযর্টকরা।

করোনা মহামারীর ধকল কাটিয়ে পযর্টন মৌসুম ও সারা বছরের পযর্টকের মুখরিত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সহ কক্সবাজারের বিভিন্ন পযর্টন স্পষ্ট।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকে বাসযোগে সরাসরি কক্সবাজার শহরের কলাতলী ডলফিন মোড় এলাকায় নামে পযর্টকরা। তখন থেকে শুরু হয় পযর্টকদের বিভিন্ন হোটেলে কম দামে রুম বুকিং, কোথায় যাবে জানতে চেয়ে চেয়ে পিছনে ছুটা। তাদের কোন কথার উত্তর না দিলে শুনতে হয় বিভিন্ন কটুকথা। তবে অনেক ক্ষেত্রে লেগে যায় পযর্টকদের সাথে ইজিবাইক ও রিকশা চালকদের ঝগড়া।এনিয়ে তাদের আচরণে ক্ষুদ্ধ পযর্টক ও স্থানীয় অনেকেই।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সাপ্তাহিক ছুটি ও স্বাধীনতা দিবসের টানা দুইদিনের ছুটিতে কক্সবাজারে ভিড় জমিয়েছে লক্ষ লক্ষ পযর্টক।

এখানেও পযর্টকে ভরপুর কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল মোটেল ও পযর্টন স্পষ্ট গুলো। কক্সবাজারে আগত ৯০ ভাগ পর্যটক বাসযোগে নামে শহরের কলাতলী ডলফিন মোড় এলাকায়।সেই স্থানে অবস্থান নেন ইজিবাইক টমটম ও রিকশা চালকেরা।

গাড়ীতে নামার আগেই হা করে থাকিয়া থাকে পযর্টকদের ভাড়ায় নেওয়ার জন্য।পযর্টকরা কিছু বলার আগেই ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করে চালকেরা।

কোথায় যাবেন, সস্তা রুম আছে,আমার গাড়িতে উঠেন এই বলেই বিরক্ত করতে থাকেই পযর্টকদের।অনেক ক্ষেত্রে জোরপূর্বক গাড়িতে উঠলেও গুনতে হয় দ্বিগুণ ভাড়া।

শুধু তাই নয়, কেউ কেউ গাড়িতে উঠতে না চাইলে তাদের পিছনে নেন চালকেরা।এনিয়ে মারমুখী ভঙ্গিতে তাকালেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন তারা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শহরের কলাতলীতে একতৃতীয়াংশ ইজিবাইক ও রিকশা চালক বহিরাগত ও রোহিঙ্গা। তারাই মূলত পযর্টকদের হয়রানি করে যাচ্ছে সবসময়। পযর্টকের পাশাপাশি স্থানীদেরও হয়রানি করে নানা অজুহাতে।

কক্সবাজারের সুনাম নষ্ট করতে রোহিঙ্গা, বহিরাগত ইজিবাইক ও রিকশা চালকেরা উঠে পড়ে লেগেছে মনে করেন সাধারণ মানুষ।

তাদের আচরণে প্রতিনিয়ত বিরক্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে কক্সবাজার আগত ভ্রমন-প্রেয়সীরা। শহরের কলাতলীতে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে স্হানীয় প্রভালশালী একটি সিন্ডিকেট। ছিনতাই, চুরি, মারামারি, মাদক কারবার, অনৈতিক কার্যকলাপও সংগঠিত হচ্ছে তাদের নিয়ে।

কুমিল্লা থেকে আগত পযর্টক রিনা আক্তার জানান, কিছু বুঝার আগেই তারা ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করে। এখন যাবো না বললে বা রুম বুকিং রয়েছে বললেও দীর্ঘসময় ধরে বিরক্ত করতে থাকে তারা।

এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়,পযর্টকদের সাহায্য সহযোগিতা লাগলে অবশ্যই ট্যুারেষ্ট পুলিশ বা স্থানীয়দের কাছ থেকে নিবে। কেন বা বিরক্ত করবে গাড়ি থেকে নামা মাত্র।

ঢাকা উত্তরা থেকে আসা আরো এক পযর্টক সাইদুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছি। এক সপ্তাহ আগে থেকে হোটেলে রুম বুকিং করছি,তাছাড়া ডলফিন মোড়ের পাশেই হোটেল।

গাড়ীতে নামা মাত্র ইজিবাইক ও রিকশা চালকদের ভাড়া নিয়ে ধরাধরি। যাবো না বললেও পিছু ছাড়া না। এক পর্যায়ে রাগে কথা বলা মাত্র ইজিবাইক নিয়ে পিছু ছাড়ে দে।

স্থানীয়রা জানান, ইজিবাইক টমটম ও রিকশা চালকেরা বিভিন্ন হোটেলের পযর্টকদের নিয়ে গেলে পাই কমিশন। তাদের সাথে হোটেলের মালিক কর্তৃপক্ষের অনেকের সাথে কমিশনের চুক্তি রয়েছে। এই ছাড়াও জোরপূর্বক পযর্টকদের গাড়ীতে উঠাতে পারলে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে।

পযর্টকদের সবচেয়ে বিরক্তিকর পড়ে যখন তাদের পিছনে পিছনে ছুটে বিভিন্ন ইজিবাইক ও রিকশা চালকেরা।

স্থানীয়রা আরো জানান, কক্সবাজার কলাতলীতে একতৃতীয়াংশ ইজিবাইক ও রিকশা চালক বহিরাগত ও রোহিঙ্গা।
তারা পযর্টকদের হয়রানি করে সবমসময়।স্থানীয় চালকেরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় যাত্রী পরিবহন করে, স্থানীয়দের হাতে নিরাপদ পযর্টকরা। আমরাও আজ টমটম ইজিবাইক ও রিকশাদের কাছেও জিম্মি। তারা যা ভাড়া চাই তাই দিতে হয়।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, পযর্টকের পাশাপাশি স্থানীয়রাও আজ টমটম ইজিবাইক চালকদের হাতে জিন্মী হয়ে পড়েছে। কিন্তু পর্যটন শিল্প বিকাশে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা প্রশাসনের দায়িত্ব।

টমটম চালকদের নৈরাজ্যের পিছনে অন্যতম কারণ রোহিঙ্গা ও চিহ্নিত কিছু অপরাধীদের হাতে টমটম ইজিবাইক।কক্সবাজারে যে-সব রোহিঙ্গা বা বহিরাগত’রা পযর্টকদের হয়রানি করে তাদের চিহ্নিত করা জরুরি। অন্যতায় পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

Please Share This Post in Your Social Media


কক্সবাজারে ইজিবাইক ও রিকশা চালকদের আচরণে বিরক্ত পযর্টকরা!

Update Time : ১০:০০:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ মার্চ ২০২২

অন্তর দে বিশাল,কক্সবাজার:

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত পর্যটন নগরী কক্সবাজারের ইজিবাইক ও রিকসা চালকদের আচরণে প্রতিনিয়ত বিব্রত-বোধ করছে আগত পযর্টকরা।

করোনা মহামারীর ধকল কাটিয়ে পযর্টন মৌসুম ও সারা বছরের পযর্টকের মুখরিত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সহ কক্সবাজারের বিভিন্ন পযর্টন স্পষ্ট।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকে বাসযোগে সরাসরি কক্সবাজার শহরের কলাতলী ডলফিন মোড় এলাকায় নামে পযর্টকরা। তখন থেকে শুরু হয় পযর্টকদের বিভিন্ন হোটেলে কম দামে রুম বুকিং, কোথায় যাবে জানতে চেয়ে চেয়ে পিছনে ছুটা। তাদের কোন কথার উত্তর না দিলে শুনতে হয় বিভিন্ন কটুকথা। তবে অনেক ক্ষেত্রে লেগে যায় পযর্টকদের সাথে ইজিবাইক ও রিকশা চালকদের ঝগড়া।এনিয়ে তাদের আচরণে ক্ষুদ্ধ পযর্টক ও স্থানীয় অনেকেই।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সাপ্তাহিক ছুটি ও স্বাধীনতা দিবসের টানা দুইদিনের ছুটিতে কক্সবাজারে ভিড় জমিয়েছে লক্ষ লক্ষ পযর্টক।

এখানেও পযর্টকে ভরপুর কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল মোটেল ও পযর্টন স্পষ্ট গুলো। কক্সবাজারে আগত ৯০ ভাগ পর্যটক বাসযোগে নামে শহরের কলাতলী ডলফিন মোড় এলাকায়।সেই স্থানে অবস্থান নেন ইজিবাইক টমটম ও রিকশা চালকেরা।

গাড়ীতে নামার আগেই হা করে থাকিয়া থাকে পযর্টকদের ভাড়ায় নেওয়ার জন্য।পযর্টকরা কিছু বলার আগেই ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করে চালকেরা।

কোথায় যাবেন, সস্তা রুম আছে,আমার গাড়িতে উঠেন এই বলেই বিরক্ত করতে থাকেই পযর্টকদের।অনেক ক্ষেত্রে জোরপূর্বক গাড়িতে উঠলেও গুনতে হয় দ্বিগুণ ভাড়া।

শুধু তাই নয়, কেউ কেউ গাড়িতে উঠতে না চাইলে তাদের পিছনে নেন চালকেরা।এনিয়ে মারমুখী ভঙ্গিতে তাকালেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন তারা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শহরের কলাতলীতে একতৃতীয়াংশ ইজিবাইক ও রিকশা চালক বহিরাগত ও রোহিঙ্গা। তারাই মূলত পযর্টকদের হয়রানি করে যাচ্ছে সবসময়। পযর্টকের পাশাপাশি স্থানীদেরও হয়রানি করে নানা অজুহাতে।

কক্সবাজারের সুনাম নষ্ট করতে রোহিঙ্গা, বহিরাগত ইজিবাইক ও রিকশা চালকেরা উঠে পড়ে লেগেছে মনে করেন সাধারণ মানুষ।

তাদের আচরণে প্রতিনিয়ত বিরক্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে কক্সবাজার আগত ভ্রমন-প্রেয়সীরা। শহরের কলাতলীতে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে স্হানীয় প্রভালশালী একটি সিন্ডিকেট। ছিনতাই, চুরি, মারামারি, মাদক কারবার, অনৈতিক কার্যকলাপও সংগঠিত হচ্ছে তাদের নিয়ে।

কুমিল্লা থেকে আগত পযর্টক রিনা আক্তার জানান, কিছু বুঝার আগেই তারা ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করে। এখন যাবো না বললে বা রুম বুকিং রয়েছে বললেও দীর্ঘসময় ধরে বিরক্ত করতে থাকে তারা।

এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়,পযর্টকদের সাহায্য সহযোগিতা লাগলে অবশ্যই ট্যুারেষ্ট পুলিশ বা স্থানীয়দের কাছ থেকে নিবে। কেন বা বিরক্ত করবে গাড়ি থেকে নামা মাত্র।

ঢাকা উত্তরা থেকে আসা আরো এক পযর্টক সাইদুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছি। এক সপ্তাহ আগে থেকে হোটেলে রুম বুকিং করছি,তাছাড়া ডলফিন মোড়ের পাশেই হোটেল।

গাড়ীতে নামা মাত্র ইজিবাইক ও রিকশা চালকদের ভাড়া নিয়ে ধরাধরি। যাবো না বললেও পিছু ছাড়া না। এক পর্যায়ে রাগে কথা বলা মাত্র ইজিবাইক নিয়ে পিছু ছাড়ে দে।

স্থানীয়রা জানান, ইজিবাইক টমটম ও রিকশা চালকেরা বিভিন্ন হোটেলের পযর্টকদের নিয়ে গেলে পাই কমিশন। তাদের সাথে হোটেলের মালিক কর্তৃপক্ষের অনেকের সাথে কমিশনের চুক্তি রয়েছে। এই ছাড়াও জোরপূর্বক পযর্টকদের গাড়ীতে উঠাতে পারলে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে।

পযর্টকদের সবচেয়ে বিরক্তিকর পড়ে যখন তাদের পিছনে পিছনে ছুটে বিভিন্ন ইজিবাইক ও রিকশা চালকেরা।

স্থানীয়রা আরো জানান, কক্সবাজার কলাতলীতে একতৃতীয়াংশ ইজিবাইক ও রিকশা চালক বহিরাগত ও রোহিঙ্গা।
তারা পযর্টকদের হয়রানি করে সবমসময়।স্থানীয় চালকেরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় যাত্রী পরিবহন করে, স্থানীয়দের হাতে নিরাপদ পযর্টকরা। আমরাও আজ টমটম ইজিবাইক ও রিকশাদের কাছেও জিম্মি। তারা যা ভাড়া চাই তাই দিতে হয়।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, পযর্টকের পাশাপাশি স্থানীয়রাও আজ টমটম ইজিবাইক চালকদের হাতে জিন্মী হয়ে পড়েছে। কিন্তু পর্যটন শিল্প বিকাশে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা প্রশাসনের দায়িত্ব।

টমটম চালকদের নৈরাজ্যের পিছনে অন্যতম কারণ রোহিঙ্গা ও চিহ্নিত কিছু অপরাধীদের হাতে টমটম ইজিবাইক।কক্সবাজারে যে-সব রোহিঙ্গা বা বহিরাগত’রা পযর্টকদের হয়রানি করে তাদের চিহ্নিত করা জরুরি। অন্যতায় পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়বে।