বাধা পেরিয়ে প্রথম বিসিএসেই প্রশাসন ক্যাডার খাইরুল

  • Update Time : ০৯:৪২:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২
  • / 656

মো: খাইরুল ইসলাম ৩৬ তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন। তার জন্ম বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায়। তার বাবা মোঃ হাফিজুর রহমান খন্দকার মসজিদের ঈমাম ছিলেন এবং মা খাদিজা বেগম গৃহিনী। ২০০৭ সালে সারিয়াকান্দি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০০৯ সালে সরকারি আজিজুল হক কলেজ বগুড়া থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে গণিত বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

বর্তমানে তিনি রংপুরের পীরগঞ্জে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত।সম্প্রতি তার বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া, ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ও সফলতার গল্প শুনিয়েছেন বিডি সমাচারকে

বিডি সমাচার: আপনার শৈশবের গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই-

খাইরুল ইসলাম: বগুড়া শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরের এক প্রত্যন্ত এলাকায় আমার বেড়ে ওঠা। বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নদী। নদী ভাঙনের ভয়ানক অভিজ্ঞতা এ অঞ্চলের মানুষকে বদলে দিয়েছে। শিখিয়েছে টিকে থাকার লড়াই। এই জনপদের মাটি ও মানুষের সঙ্গেই কেটেছে আমার শৈশব। দুরন্ত শৈশব আমার শৈবব জুড়েই রয়েছে বাঙ্গালী নদী বিধৌত আমার গ্রাম। সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামল একটি জনপদে বেড়ে ওঠা। খেলা-ধূলা, মাছ ধরা থেকে শুরু করে গল্পের আসরে আড্ডাবাজি, গ্রাম্য যাত্রা-নাটক আর শিল্প-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মধ্যে ছিলো অবাধ বিচরণ। এরপর হঠাৎ বই পড়া, স্কুলে যাওয়া এসব বিরক্তিকর কাজের দায়িত্ব কাধে উঠে পড়ে। মায়ের মুখে গল্প শুনেছি, বেশ কয়েকবার নাকি বই ছিড়ে বাড়ির পিছনে ছাইয়ের গাদায় লুকিয়ে রেখেছিলাম।

বিডি সমাচার: পড়াশোনায় কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল কি?

খাইরুল ইসলাম: শুধু পড়াশোনা নয়, আজীবনই প্রতিবন্ধকতা মানে যেটা উপলব্ধি করেছি সেটা হলো অর্থ। চার ভাই বোনের মধ্যে আমি সবার ছোট ছিলাম। তাই তাদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়ে বড় হলেও, বড় ভাই ও বড় বোন যেভাবে কষ্ট করে পড়া লেখা করেছেন, তাদের সেই কষ্ট থেকে শিক্ষা নিয়েই দুঃখ-দারিদ্র‍্য কে মোকাবেলা করার শক্তি, সাহস, উৎসাহ পেয়েছি।

প্রশাসন ক্যাডার খায়রুল

বিডি সমাচার: বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?

খাইরুল ইসলাম: ক্লাশ ওয়ান থেকে টেন পর্যন্ত ক্লাশে ফার্স্ট বয় ছিলাম। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে প্রথম স্থান অধিকার করে বৃত্তি পাই। ২০০৭ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে এ+ এবং এইচএসসিতে গোল্ডেন এ+ সহ বোর্ডের বৃত্তি পাই। যার ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো বেতন দিতে হয়নি। প্রাইমারি থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সারাজীবন সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়া লেখা করেছি। খন্দকার বংশের সন্তান হিসেবে আমার গর্ব যে, আমার গ্রামে আমি প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি এবং বিসিএস ক্যাডার হয়েছি। স্বপ্নটা আসলে দেখতে হয়নি, পথচারীর পাথেয় হয়ে গেছে স্বাভাবিকভাবেই।

বিডি সমাচার: বিসিএস যাত্রার গল্প শুনতে চাই, প্রস্তুতি কিভাবে নিয়েছেন?

খাইরুল ইসলাম: প্রথমেই একটি কোম্পানির এক সেট বই কিনে কিছুদিন হাতের কাছে রেখে নাড়াচাড়া শুরু করি। তারপর ধীরে ধীরে সিনিয়র ভাইদের পড়ালেখার স্টাইল ফলো করি। ফলো করতে গিয়ে দেখলাম এক এক জনের পড়ার স্টাইল একেক রকমের। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আমার স্টাইলিশ আমি পড়বো। তখন আমি রুটিন করে প্রতিদিন কয়েকটি বিষয় পড়া শুরু করলাম। এভাবেই প্রস্তুতি টা শুরু। অনার্স ও মাস্টার্সের রেজাল্ট খুব একটা ভালো ছিলো না। তাই আর দেরি না করে বিসিএস এর প্রিপারেশন নেওয়া শুরু করে দেই। অনার্স ফাইনাল ইয়ার থেকে শুরু করলেও মূলত মাস্টার্স থেকেই পুরো দমে প্রস্তুতি নিতে শুরু করি এবং ৩৬ তম বিসিএস এর রেজিষ্ট্রেশন করার মাধ্যমে প্রথম বারের মত যুদ্ধের মাঠে নেমে পড়ি। বিসিএস ভাইভার আগে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা নিয়ে একটি ঝামেলায় পড়তে হয়েছিলো এবং আমি নিশ্চিত ছিলাম না যে ভাইভা টা আদৌ দিতে পারবো কি না। শেষ পর্যন্ত পিএসসি তে আবেদন পর্যন্ত করতে হয়েছিলো পাসওয়ার্ড উদ্ধারের জন্য। অবশেষে আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমি পিএসসির সুরক্ষিত অন্দরে প্রবেশ করে কয়েক টেবিল ঘোরাঘুরি করার পর সেই পাসওয়ার্ড উদ্ধার করে নিয়ে আসতে পেরেছিলাম।

বিডি সমাচার: পর্দার আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে?

খাইরুল ইসলাম: পর্দার আড়ালে ছিলেন আমার বড় ভাই, বড় বোন আর না পাওয়ার বঞ্চনা। সারাজীবন ভালো পড়াশোনা করার কারণে আমার এলাকার শিক্ষক এবং সাধারণ মানুষদের একটি দোয়া ও আশীর্বাদ ছিলো যে, আমি একটি ভালো চাকরি পাবো, মানুষের উপকারে আসবো। সেই মানুষগুলোর মুখই এখন আমার সবচেয়ে বেশি করে মনে পড়ছে।

বিডি সমাচার: নতুনরা বিসিএস প্রিলির জন্য কিভাবে প্রস্তুতি শুরু করবেন?

খাইরুল ইসলাম: নতুনদের জন্য বলতে চাই, পড়ার কোন বিকল্প নেই। নিজেকে ভালো অবস্থানে দেখতে চাইলে ভালো প্রস্তুতি নিতেই হবে। এ জন্য নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করতে হবে। সাধারণ বিজ্ঞান, সাধারণ গণিত, বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ভূগোল, সামাজিক বিজ্ঞান ইত্যাদি বই একজন নতুন বিসিএস পরীক্ষার্থীকে অনেক সহায়তা করবে। এই বইগুলো দাগিয়ে দাগিয়ে পড়তে হবে এবং বিগত বছরগুলোতে আসা প্রশ্নের সেট ও সমাধান পাশাপাশি নিয়ে বসে সমাধান করতে হবে। তাহলে আমি মনে করি এতে প্রায় অর্ধেক নাম্বার উঠে আসবে। আর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পঞ্চাশভাগ নাম্বার ক্যারি করতে পারলে যেকোনো পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাশ করা সম্ভব।

বিডি সমাচার: প্রিলি শেষ করার পর বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি নিয়ে আপনার পরামর্শ কি?

খাইরুল ইসলাম: লিখিত পরীক্ষার আগে অবশ্যই সমসাময়িক ইস্যু, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা, দেশি-বিদেশি আলোচিত সমালোচিত ঘটনার কারণ ও তার সমাধান ইত্যাদি বিষয়সহ আরও কিছু কমন বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। এজন্য বাজারের যে কোনো একটি ডাইজেস্ট গাইড বই কেনা যেতে পারে। তবে, ডিটেইলস পড়তে হলে যে কোনো একটি কোম্পানির একসেট বই কিনতে হবে এবং নিয়মিত পড়তে হবে।

বিডি সমাচার: বিসিএস ভাইবার প্রস্তুতি কেমন হতে হয়?

খাইরুল ইসলাম: ভাইভার আসলে তেমন কোন ফ্রেম নাই, তবে কিছুটা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা এবং কিছুটা রিটেন পরিক্ষার সিলেবাস থেকেই আসে। বাজারে ভাইভার সহায়ক হিসেবে কিছু বই পাওয়া যায়, এই বইগুলো চাইলে সংগ্রহে রাখতে পারেন।

বিডি সমাচার: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

খাইরুল ইসলাম: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বলতে চাকরি এবং পরিবারকে নিয়েই সময় কাটানো। তাছাড়া মাঝেমধ্যে দর্শনীয় স্থান ঘুরতে ভালো লাগে। আল্লাহ যদি সুযোগ দেন অদূর ভবিষ্যতে পবিত্র হজ্ব এর কাজটাও সম্পাদন করতে চাই ইনশাআল্লাহ। সবাই দোয়া রাখবেন।

Please Share This Post in Your Social Media


বাধা পেরিয়ে প্রথম বিসিএসেই প্রশাসন ক্যাডার খাইরুল

Update Time : ০৯:৪২:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

মো: খাইরুল ইসলাম ৩৬ তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন। তার জন্ম বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায়। তার বাবা মোঃ হাফিজুর রহমান খন্দকার মসজিদের ঈমাম ছিলেন এবং মা খাদিজা বেগম গৃহিনী। ২০০৭ সালে সারিয়াকান্দি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০০৯ সালে সরকারি আজিজুল হক কলেজ বগুড়া থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে গণিত বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

বর্তমানে তিনি রংপুরের পীরগঞ্জে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত।সম্প্রতি তার বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া, ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ও সফলতার গল্প শুনিয়েছেন বিডি সমাচারকে

বিডি সমাচার: আপনার শৈশবের গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই-

খাইরুল ইসলাম: বগুড়া শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরের এক প্রত্যন্ত এলাকায় আমার বেড়ে ওঠা। বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নদী। নদী ভাঙনের ভয়ানক অভিজ্ঞতা এ অঞ্চলের মানুষকে বদলে দিয়েছে। শিখিয়েছে টিকে থাকার লড়াই। এই জনপদের মাটি ও মানুষের সঙ্গেই কেটেছে আমার শৈশব। দুরন্ত শৈশব আমার শৈবব জুড়েই রয়েছে বাঙ্গালী নদী বিধৌত আমার গ্রাম। সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামল একটি জনপদে বেড়ে ওঠা। খেলা-ধূলা, মাছ ধরা থেকে শুরু করে গল্পের আসরে আড্ডাবাজি, গ্রাম্য যাত্রা-নাটক আর শিল্প-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মধ্যে ছিলো অবাধ বিচরণ। এরপর হঠাৎ বই পড়া, স্কুলে যাওয়া এসব বিরক্তিকর কাজের দায়িত্ব কাধে উঠে পড়ে। মায়ের মুখে গল্প শুনেছি, বেশ কয়েকবার নাকি বই ছিড়ে বাড়ির পিছনে ছাইয়ের গাদায় লুকিয়ে রেখেছিলাম।

বিডি সমাচার: পড়াশোনায় কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল কি?

খাইরুল ইসলাম: শুধু পড়াশোনা নয়, আজীবনই প্রতিবন্ধকতা মানে যেটা উপলব্ধি করেছি সেটা হলো অর্থ। চার ভাই বোনের মধ্যে আমি সবার ছোট ছিলাম। তাই তাদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়ে বড় হলেও, বড় ভাই ও বড় বোন যেভাবে কষ্ট করে পড়া লেখা করেছেন, তাদের সেই কষ্ট থেকে শিক্ষা নিয়েই দুঃখ-দারিদ্র‍্য কে মোকাবেলা করার শক্তি, সাহস, উৎসাহ পেয়েছি।

প্রশাসন ক্যাডার খায়রুল

বিডি সমাচার: বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?

খাইরুল ইসলাম: ক্লাশ ওয়ান থেকে টেন পর্যন্ত ক্লাশে ফার্স্ট বয় ছিলাম। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে প্রথম স্থান অধিকার করে বৃত্তি পাই। ২০০৭ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে এ+ এবং এইচএসসিতে গোল্ডেন এ+ সহ বোর্ডের বৃত্তি পাই। যার ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো বেতন দিতে হয়নি। প্রাইমারি থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সারাজীবন সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়া লেখা করেছি। খন্দকার বংশের সন্তান হিসেবে আমার গর্ব যে, আমার গ্রামে আমি প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি এবং বিসিএস ক্যাডার হয়েছি। স্বপ্নটা আসলে দেখতে হয়নি, পথচারীর পাথেয় হয়ে গেছে স্বাভাবিকভাবেই।

বিডি সমাচার: বিসিএস যাত্রার গল্প শুনতে চাই, প্রস্তুতি কিভাবে নিয়েছেন?

খাইরুল ইসলাম: প্রথমেই একটি কোম্পানির এক সেট বই কিনে কিছুদিন হাতের কাছে রেখে নাড়াচাড়া শুরু করি। তারপর ধীরে ধীরে সিনিয়র ভাইদের পড়ালেখার স্টাইল ফলো করি। ফলো করতে গিয়ে দেখলাম এক এক জনের পড়ার স্টাইল একেক রকমের। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আমার স্টাইলিশ আমি পড়বো। তখন আমি রুটিন করে প্রতিদিন কয়েকটি বিষয় পড়া শুরু করলাম। এভাবেই প্রস্তুতি টা শুরু। অনার্স ও মাস্টার্সের রেজাল্ট খুব একটা ভালো ছিলো না। তাই আর দেরি না করে বিসিএস এর প্রিপারেশন নেওয়া শুরু করে দেই। অনার্স ফাইনাল ইয়ার থেকে শুরু করলেও মূলত মাস্টার্স থেকেই পুরো দমে প্রস্তুতি নিতে শুরু করি এবং ৩৬ তম বিসিএস এর রেজিষ্ট্রেশন করার মাধ্যমে প্রথম বারের মত যুদ্ধের মাঠে নেমে পড়ি। বিসিএস ভাইভার আগে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা নিয়ে একটি ঝামেলায় পড়তে হয়েছিলো এবং আমি নিশ্চিত ছিলাম না যে ভাইভা টা আদৌ দিতে পারবো কি না। শেষ পর্যন্ত পিএসসি তে আবেদন পর্যন্ত করতে হয়েছিলো পাসওয়ার্ড উদ্ধারের জন্য। অবশেষে আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমি পিএসসির সুরক্ষিত অন্দরে প্রবেশ করে কয়েক টেবিল ঘোরাঘুরি করার পর সেই পাসওয়ার্ড উদ্ধার করে নিয়ে আসতে পেরেছিলাম।

বিডি সমাচার: পর্দার আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে?

খাইরুল ইসলাম: পর্দার আড়ালে ছিলেন আমার বড় ভাই, বড় বোন আর না পাওয়ার বঞ্চনা। সারাজীবন ভালো পড়াশোনা করার কারণে আমার এলাকার শিক্ষক এবং সাধারণ মানুষদের একটি দোয়া ও আশীর্বাদ ছিলো যে, আমি একটি ভালো চাকরি পাবো, মানুষের উপকারে আসবো। সেই মানুষগুলোর মুখই এখন আমার সবচেয়ে বেশি করে মনে পড়ছে।

বিডি সমাচার: নতুনরা বিসিএস প্রিলির জন্য কিভাবে প্রস্তুতি শুরু করবেন?

খাইরুল ইসলাম: নতুনদের জন্য বলতে চাই, পড়ার কোন বিকল্প নেই। নিজেকে ভালো অবস্থানে দেখতে চাইলে ভালো প্রস্তুতি নিতেই হবে। এ জন্য নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করতে হবে। সাধারণ বিজ্ঞান, সাধারণ গণিত, বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ভূগোল, সামাজিক বিজ্ঞান ইত্যাদি বই একজন নতুন বিসিএস পরীক্ষার্থীকে অনেক সহায়তা করবে। এই বইগুলো দাগিয়ে দাগিয়ে পড়তে হবে এবং বিগত বছরগুলোতে আসা প্রশ্নের সেট ও সমাধান পাশাপাশি নিয়ে বসে সমাধান করতে হবে। তাহলে আমি মনে করি এতে প্রায় অর্ধেক নাম্বার উঠে আসবে। আর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পঞ্চাশভাগ নাম্বার ক্যারি করতে পারলে যেকোনো পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাশ করা সম্ভব।

বিডি সমাচার: প্রিলি শেষ করার পর বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি নিয়ে আপনার পরামর্শ কি?

খাইরুল ইসলাম: লিখিত পরীক্ষার আগে অবশ্যই সমসাময়িক ইস্যু, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা, দেশি-বিদেশি আলোচিত সমালোচিত ঘটনার কারণ ও তার সমাধান ইত্যাদি বিষয়সহ আরও কিছু কমন বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। এজন্য বাজারের যে কোনো একটি ডাইজেস্ট গাইড বই কেনা যেতে পারে। তবে, ডিটেইলস পড়তে হলে যে কোনো একটি কোম্পানির একসেট বই কিনতে হবে এবং নিয়মিত পড়তে হবে।

বিডি সমাচার: বিসিএস ভাইবার প্রস্তুতি কেমন হতে হয়?

খাইরুল ইসলাম: ভাইভার আসলে তেমন কোন ফ্রেম নাই, তবে কিছুটা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা এবং কিছুটা রিটেন পরিক্ষার সিলেবাস থেকেই আসে। বাজারে ভাইভার সহায়ক হিসেবে কিছু বই পাওয়া যায়, এই বইগুলো চাইলে সংগ্রহে রাখতে পারেন।

বিডি সমাচার: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

খাইরুল ইসলাম: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বলতে চাকরি এবং পরিবারকে নিয়েই সময় কাটানো। তাছাড়া মাঝেমধ্যে দর্শনীয় স্থান ঘুরতে ভালো লাগে। আল্লাহ যদি সুযোগ দেন অদূর ভবিষ্যতে পবিত্র হজ্ব এর কাজটাও সম্পাদন করতে চাই ইনশাআল্লাহ। সবাই দোয়া রাখবেন।