দেশের বুদ্ধিজীবী নিয়ে নির্মিত প্রথম নাটক জয়জয়িতা রাবিতে মঞ্চস্থ
- Update Time : ০২:০৭:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১
- / 205
রাবি প্রতিনিধিঃ
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিন বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত নাটক ‘জয়জয়িতা’ মঞ্চস্থ হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে কৌশিক সরকারের নির্দেশনায় নাটকটি মঞ্চায়িত হয়।
নাটকের প্রধান জয়িতা চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমনা সরকার।
নাটকের প্রথম দৃশ্যে দেখা যায়, ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী ঢুকে পড়ে। অধিকাংশ অধ্যাপকগণ বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গেলেও হাবিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যায়নি। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পশ্চিম পাড়ায় একটি বাসায় থাকতেন। হঠাৎ এক প্রতিবেশীর ছেলে এসে তাকে বলে মিলিটারি ক্যাপ্টেন তাকে দেখা করতে বলেছে। পরবর্তীতে ১৫ এপ্রিল আসরের সময় মিলিটারি তাকে নিয়ে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেন নি।
পরবর্তী সময়ে শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দারের বাসায় তিনজন পাকিস্তানি মিলিটারি প্রবেশ করে। মিলিটারিরা কিছুক্ষণ ঘরে সার্চ করে চলে যাওয়ার পথে বারান্দায় তৎকালীন মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি সৈয়দ মতিউর রহমান মিলিটারিদের কানে কিছু বলে। পরে দরজা ভেঙে মিলিটারিরা শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দারকে নিয়ে যায়। পরে বিনোদপুরের পুকুর পাড় থেকে পাওয়া যায়।
শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর মীর আব্দুল কাইয়ূমকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে। বোয়ালিয়া ক্লাবের ওপারে পদ্মার চরে তাকে অন্যদের সাথে জীবন্ত কবর দেয় মিলিটারিরা।
নাটক শেষে শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ূমের মেয়ে অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল যুদ্ধাপরাধীদের ছবি অপসারণ করা হোক। তাদের তালিকা করে শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হোক। শিক্ষার্থীদের জানা দরকার কত ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘বাংলাদেশের চিরন্ময়ী অর্জন হলো আমাদের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি তা যে কত শোকাবহ, কত শহীদের আত্মদানে, কত বীরের রক্তস্রাত, কত শহীদ জায়ার অশ্রুসিক্ত তা আমরা এ নাটকের মাধ্যমে জানতে পারছি।
উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে আমি জানি স্বজন হারানো ব্যাথা। সত্য কত বাস্তব, নির্মম আজকে আমরা এ অভিনয়ের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আজকে যারা এরকম একটি জীবনধর্মী অলেখ্য তৈরি করে আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছে যাতে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্মকে আমাদের শোকগাথা বিজয়ের কথা জানানো যায়।’
এছাড়া নাটকের সমাপনীতে জয়িতা শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দারের স্ত্রী সম্পা সমাদ্দার, শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুমের মেয়ে অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া, অধ্যাপক জুলফিকার মতিনকে সন্মাননা স্মারক দেয়া হয়।