ব্যাংকার হবার স্বপ্ন পূরন করলেন সবুজ

  • Update Time : ১১:০২:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১
  • / 638

মোঃ সাইফুল ইসলাম সবুজ চাঁদপুর সদর উপজেলার লালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা সাইজ উদ্দিন গাজী একজন ব্যবসায়ী, মা নূরজাহান বেগম গৃহিণী। তিনি ২০০৮ সালে লালপুর বালুধূম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১০ হাজীগঞ্জ মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বর্তমানে তিনি রুপালী ব্যাংকে অফিসার (জেনারেল) পদে কর্মরত। সম্প্রতি তার ব্যাংকে চাকরি, ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ও সফলতার গল্প শুনিয়েছেন বিডি সমাচারকে।

বিডি সমাচার: আপনার শৈশবের গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই-

সাইফুল ইসলাম সবুজ: আমার শৈশবটা আর ১০টা ছেলের মতই কেটেছে। আমার গ্রামটা মেঘনা নদীর তীরবর্তী ছিল। অজপাড়া বা প্রান্তিক পর্যায়ের গ্রাম বললেই চলে। ছোটবেলায় খেলাধুলা করতাম বেশি। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ক্রিকেট খেলতাম। পাশাপাশি রুটিন মাফিক পড়াশোনা করতাম। এসএসসি পরীক্ষার আগ পর্যম্ত খুব প্রানবন্ত লাইফ কাটিয়েছি। এখন সেই সময় গুলো মিস করি। বর্তমান যুগের ছেলে-মেয়েদের কাছে ঐসময়টা অকল্পনীয়। এখনকার প্রজন্ম ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আমার শৈশবে কোন বাধা ছিল না। শুধু খেলাধুলা ও পড়াশোনার মধ্যে সময় কাটিয়েছি।

বিডি সমাচার: আপনার জীবনের প্রতিবন্ধকতা কি ছিল?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: প্রতিবন্ধকতা কিছুটা ছিল। ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পরিবার থেকে আর্থিক সাপোর্ট পেয়েছি। তারপর জগন্নাথে ভর্তি হয়ে ঢাকায় চলে আসি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হল না থাকায় মেসে থাকতে হয়েছে। প্রথমে অনেক সংগ্রাম করে চলতে হয়েছে। কারন ঢাকায় থাকা ও খাওয়ার জন্য বেশ টাকার প্রয়োজন ছিল। প্রথম একবছর কষ্টে পার করেছি। কারন তখন পরিচিতি ছিলনা। তাই টিউশনি পেতে বেগ পেতে হয়েছে। ঢাকায় থাকা-খাওয়া ও পড়াশোনার খরচের জন্য আমি দৈনিক ৩-৪টা টিউশনি করিয়েছি। অর্নাসে ঢাকায় আসার পরে আর পরিবার থেকে টাকা নেইনি। ভার্সিটির সেশন ফ্রি থেকে শুরু করে সব টাকা আমি নিজে বহন করেছি।

বিডি সমাচার: ব্যাংকে চাকুরির স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: ব্যাংকে চাকুরীর স্বপ্নটা ছোট থেকেই দেখেছিলাম। আমার বড় মামা একজন ব্যাংকার। তিনি জনতা ব্যাংকে জব করতেন। আমি যখন মামার বাসায় যেতাম তখন মামা মামাতো ভাইদের বিভিন্ন বই পড়াতেন এবং বিভিন্ন বিষয় লিখতে দিতেন। আমি তখন ফাইভ-সিক্সে ছিলাম। মামা ব্যাংকার হওয়াতে দেখতাম অনেকে মামাকে সম্মান করতেন এবং মামার কথা শুনতেন। তাই বলা যায়, মামাকে দেখেই প্রথম ব্যাংকার হবার স্বপ্ন দেখি। ইনশাআল্লাহ আমি সেই স্বপ্ন পূরন করতে পেরেছি।

বিডি সমাচার: ব্যাংকে চাকরি পাবার গল্প শুনতে চাই, প্রস্তুতি কিভাবে নিয়েছেন?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: আমি ২০১৭ সালে মাস্টার্সের পর জবের প্রিপারেশন শুরু করি। তার আগে ডিপার্টমেন্টের রেজাল্ট ভালো করার চেষ্টা করেছি। ব্যাংক চাকুরির প্রস্তুতি মূলত বিসিএস, প্রাইমারী বা অন্যান্য চাকুরি থেকে ভিন্ন রকম। ব্যাংক চাকুরির জন্য ম্যাথ ও ইংরেজি অনুবাদ ভালো জানতে হয়। আমি প্রথমে ব্যাংক জবের বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর সমাধান করেছি। বুঝার চেষ্টা করেছি ব্যাংকে কোন ধরনের প্রশ্ন আসে। তখন প্রচুর ম্যাথ করেছি। দিনের পর দিন ম্যাথে সময় দিয়েছি। পাশাপাশি ইংরেজি অনুবাদ প্র্যাকটিস করেছি। ইংরেজির জন্য ডেইলি স্টার সম্পাদকীয় পাতা ফলো করেছি। ইংরেজি পত্রিকা পড়ার ফলে ট্রান্সলেশনটা আয়ত্তে চলে আসে। পত্রিকায় নতুন শব্দ পেলে খাতায় নোট করে রাখতাম। পত্রিকায় যে শদ্বগুলো ব্যবহার করা হয় ব্যাংক জবের ট্রান্সলেশনে মূলত এগুলো ব্যবহৃত হয়। ফোকাস রাইটিং ক্ষেত্রে রচনা লেখার জন্য ইংরেজি সম্পাদকীয় পাতাগুলো খুবই সহযোগিতা করেছে। ব্যাংকে চাকুরি পাবার ট্রার্ম কাড হল ম্যাথ ও ইংরেজি অনুবাদ ভালো জানা। এই দুই বিষয় বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। তাছাড়া ব্যাংক লিখিত পরীক্ষায় লেটার লেখার প্রশ্ন আসে। লেটার লেখায় ক্ষেত্রে কার বরাবর লিখতে হবে এবং ফরমেটগুলো ভালোভাবে লিখতে হবে। সব ধরনের চাকুরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি । এরমধ্যে দুইটা বেসরকারি ব্যাংকে জব হয়েছিল। কিন্তু সরকারি জবের জন্য এগুলোতে যোগদান করিনি। পরিশ্রম ও ধৈর্য রেখে পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। অনেক সময় লাগছে। প্রিলি ২০১৯ সালের নভেম্বর এবং রিটেন পরীক্ষা ডিসেম্বরে হয়েছে। তারপর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ভাইবা হয়। ফেব্রুয়ারিতে রেজাল্ট চলে আসে। আমাদের নিয়োগ হবার কথা ছিল ২০২০ সালের মার্চে। কিন্তু করোনা মহামারীর কারনে তখন হয়নি। তারপর ২০২১ সালর মার্চের ১ তারিখ জয়েন করি। সরকারী ব্যাংকের নিয়োগ করে থাকেন ব্যাংকারর্স সিলেকশন কমিটি।

বিডি সমাচার: পর্দার আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে? কাকে বেশি মনে পড়ে?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: আমার মামা বড় অনুপ্রেরণার জায়গা ছিলেন। ওনি মানসিকভাবে সাপোর্ট দিতেন এবং ধৈর্য রেখে লেগে থাকার জন্য বলতেন। তাছাড়া পরিবারেরও বিশ্বাস ছিল আমি একটা ভালো জায়গায় যাবো। তারা সবসময় আমার জন্য দোয়া করতেন।

বিডি সমাচার: নতুন যারা ব্যাংকে চাকুরিতে আসতে চায় তাদের জন্য কি পরামর্শ থাকবে?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: যারা ব্যাংক জবে আসতে চায় তাদের আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। ব্যাংক জবের ট্রার্ম কার্ড হল ম্যাথ ও ইংরেজি অনুবাদ। এই দুটো বিষয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নতুনরা বিগত বছরের প্রশ্নগুলো দেখে ধারণা নিতে পারেন। ব্যাংকের ম্যাথ অন্যান্য চাকুরির পরীক্ষার চেয়ে তুলনামূলক কঠিন। এজন্য ম্যাথে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। দৈনিন্দন ম্যাথ চর্চা করতে হবে। ইংরেজির ক্ষেত্রে ভোকাবুলারি, সিনোনিম-এন্টোনিম ও অনুবাদ চর্চা করতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্যাংক জব সংশিষ্ট বাজারের কিছু বই ফলো করতে পারে। বাংলার জন্য নবম-দশম শ্রেনীর বোর্ড বইটি গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। প্রিলিমীনারিতে পরীক্ষায় শেষের দিকে ম্যাথ অংশটি দাগাতে হবে। ব্যাংকে চাকুরি পাবার মূল হাতিয়ার হচ্ছে রিটেন। রিটেনের ক্ষেত্রে টাইম ম্যানেজমেন্ট করে ২ ঘন্টায় ২০০ নম্বরের সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি ম্যাথ অংশটি ভালোভাবে দিতে হবে। ধৈর্য রেখে নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে।

বিডি সমাচার: ভাইভার প্রস্তুতি কেমন হতে হয়?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: ভাইবার ক্ষেত্রে অনার্সের নিজ বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও যে ব্যাংকের ভাইবা হবে সে ব্যাংক সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। পাশাপাশি চলতি বা সাম্প্রতিক বিষয় ও নিজ জেলা সম্পর্কে জানতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরির গ্রুপগুলো থেকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সহযোগিতা নিতে পারে। তবে ব্যাংক জবের ক্ষেত্রে ভাইবার থেকে রিটেন বেশি গুরুত্ব। কারন রিটেনে যে এগিয়ে থাকবে তার চাকরি হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

বিডি সমাচার: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে একটা ভালো মানের চাকরির করতে চাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি অন্যান্য ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে জব করার ইচ্ছে রয়েছে। চাকরির পাশাপাশি সমাজসেবা মূলক সংঘটনের ও কাজের সাথে জড়িত থাকবো।

Please Share This Post in Your Social Media


ব্যাংকার হবার স্বপ্ন পূরন করলেন সবুজ

Update Time : ১১:০২:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১

মোঃ সাইফুল ইসলাম সবুজ চাঁদপুর সদর উপজেলার লালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা সাইজ উদ্দিন গাজী একজন ব্যবসায়ী, মা নূরজাহান বেগম গৃহিণী। তিনি ২০০৮ সালে লালপুর বালুধূম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১০ হাজীগঞ্জ মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বর্তমানে তিনি রুপালী ব্যাংকে অফিসার (জেনারেল) পদে কর্মরত। সম্প্রতি তার ব্যাংকে চাকরি, ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ও সফলতার গল্প শুনিয়েছেন বিডি সমাচারকে।

বিডি সমাচার: আপনার শৈশবের গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই-

সাইফুল ইসলাম সবুজ: আমার শৈশবটা আর ১০টা ছেলের মতই কেটেছে। আমার গ্রামটা মেঘনা নদীর তীরবর্তী ছিল। অজপাড়া বা প্রান্তিক পর্যায়ের গ্রাম বললেই চলে। ছোটবেলায় খেলাধুলা করতাম বেশি। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ক্রিকেট খেলতাম। পাশাপাশি রুটিন মাফিক পড়াশোনা করতাম। এসএসসি পরীক্ষার আগ পর্যম্ত খুব প্রানবন্ত লাইফ কাটিয়েছি। এখন সেই সময় গুলো মিস করি। বর্তমান যুগের ছেলে-মেয়েদের কাছে ঐসময়টা অকল্পনীয়। এখনকার প্রজন্ম ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আমার শৈশবে কোন বাধা ছিল না। শুধু খেলাধুলা ও পড়াশোনার মধ্যে সময় কাটিয়েছি।

বিডি সমাচার: আপনার জীবনের প্রতিবন্ধকতা কি ছিল?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: প্রতিবন্ধকতা কিছুটা ছিল। ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পরিবার থেকে আর্থিক সাপোর্ট পেয়েছি। তারপর জগন্নাথে ভর্তি হয়ে ঢাকায় চলে আসি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হল না থাকায় মেসে থাকতে হয়েছে। প্রথমে অনেক সংগ্রাম করে চলতে হয়েছে। কারন ঢাকায় থাকা ও খাওয়ার জন্য বেশ টাকার প্রয়োজন ছিল। প্রথম একবছর কষ্টে পার করেছি। কারন তখন পরিচিতি ছিলনা। তাই টিউশনি পেতে বেগ পেতে হয়েছে। ঢাকায় থাকা-খাওয়া ও পড়াশোনার খরচের জন্য আমি দৈনিক ৩-৪টা টিউশনি করিয়েছি। অর্নাসে ঢাকায় আসার পরে আর পরিবার থেকে টাকা নেইনি। ভার্সিটির সেশন ফ্রি থেকে শুরু করে সব টাকা আমি নিজে বহন করেছি।

বিডি সমাচার: ব্যাংকে চাকুরির স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: ব্যাংকে চাকুরীর স্বপ্নটা ছোট থেকেই দেখেছিলাম। আমার বড় মামা একজন ব্যাংকার। তিনি জনতা ব্যাংকে জব করতেন। আমি যখন মামার বাসায় যেতাম তখন মামা মামাতো ভাইদের বিভিন্ন বই পড়াতেন এবং বিভিন্ন বিষয় লিখতে দিতেন। আমি তখন ফাইভ-সিক্সে ছিলাম। মামা ব্যাংকার হওয়াতে দেখতাম অনেকে মামাকে সম্মান করতেন এবং মামার কথা শুনতেন। তাই বলা যায়, মামাকে দেখেই প্রথম ব্যাংকার হবার স্বপ্ন দেখি। ইনশাআল্লাহ আমি সেই স্বপ্ন পূরন করতে পেরেছি।

বিডি সমাচার: ব্যাংকে চাকরি পাবার গল্প শুনতে চাই, প্রস্তুতি কিভাবে নিয়েছেন?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: আমি ২০১৭ সালে মাস্টার্সের পর জবের প্রিপারেশন শুরু করি। তার আগে ডিপার্টমেন্টের রেজাল্ট ভালো করার চেষ্টা করেছি। ব্যাংক চাকুরির প্রস্তুতি মূলত বিসিএস, প্রাইমারী বা অন্যান্য চাকুরি থেকে ভিন্ন রকম। ব্যাংক চাকুরির জন্য ম্যাথ ও ইংরেজি অনুবাদ ভালো জানতে হয়। আমি প্রথমে ব্যাংক জবের বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর সমাধান করেছি। বুঝার চেষ্টা করেছি ব্যাংকে কোন ধরনের প্রশ্ন আসে। তখন প্রচুর ম্যাথ করেছি। দিনের পর দিন ম্যাথে সময় দিয়েছি। পাশাপাশি ইংরেজি অনুবাদ প্র্যাকটিস করেছি। ইংরেজির জন্য ডেইলি স্টার সম্পাদকীয় পাতা ফলো করেছি। ইংরেজি পত্রিকা পড়ার ফলে ট্রান্সলেশনটা আয়ত্তে চলে আসে। পত্রিকায় নতুন শব্দ পেলে খাতায় নোট করে রাখতাম। পত্রিকায় যে শদ্বগুলো ব্যবহার করা হয় ব্যাংক জবের ট্রান্সলেশনে মূলত এগুলো ব্যবহৃত হয়। ফোকাস রাইটিং ক্ষেত্রে রচনা লেখার জন্য ইংরেজি সম্পাদকীয় পাতাগুলো খুবই সহযোগিতা করেছে। ব্যাংকে চাকুরি পাবার ট্রার্ম কাড হল ম্যাথ ও ইংরেজি অনুবাদ ভালো জানা। এই দুই বিষয় বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। তাছাড়া ব্যাংক লিখিত পরীক্ষায় লেটার লেখার প্রশ্ন আসে। লেটার লেখায় ক্ষেত্রে কার বরাবর লিখতে হবে এবং ফরমেটগুলো ভালোভাবে লিখতে হবে। সব ধরনের চাকুরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি । এরমধ্যে দুইটা বেসরকারি ব্যাংকে জব হয়েছিল। কিন্তু সরকারি জবের জন্য এগুলোতে যোগদান করিনি। পরিশ্রম ও ধৈর্য রেখে পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। অনেক সময় লাগছে। প্রিলি ২০১৯ সালের নভেম্বর এবং রিটেন পরীক্ষা ডিসেম্বরে হয়েছে। তারপর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ভাইবা হয়। ফেব্রুয়ারিতে রেজাল্ট চলে আসে। আমাদের নিয়োগ হবার কথা ছিল ২০২০ সালের মার্চে। কিন্তু করোনা মহামারীর কারনে তখন হয়নি। তারপর ২০২১ সালর মার্চের ১ তারিখ জয়েন করি। সরকারী ব্যাংকের নিয়োগ করে থাকেন ব্যাংকারর্স সিলেকশন কমিটি।

বিডি সমাচার: পর্দার আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে? কাকে বেশি মনে পড়ে?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: আমার মামা বড় অনুপ্রেরণার জায়গা ছিলেন। ওনি মানসিকভাবে সাপোর্ট দিতেন এবং ধৈর্য রেখে লেগে থাকার জন্য বলতেন। তাছাড়া পরিবারেরও বিশ্বাস ছিল আমি একটা ভালো জায়গায় যাবো। তারা সবসময় আমার জন্য দোয়া করতেন।

বিডি সমাচার: নতুন যারা ব্যাংকে চাকুরিতে আসতে চায় তাদের জন্য কি পরামর্শ থাকবে?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: যারা ব্যাংক জবে আসতে চায় তাদের আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। ব্যাংক জবের ট্রার্ম কার্ড হল ম্যাথ ও ইংরেজি অনুবাদ। এই দুটো বিষয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নতুনরা বিগত বছরের প্রশ্নগুলো দেখে ধারণা নিতে পারেন। ব্যাংকের ম্যাথ অন্যান্য চাকুরির পরীক্ষার চেয়ে তুলনামূলক কঠিন। এজন্য ম্যাথে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। দৈনিন্দন ম্যাথ চর্চা করতে হবে। ইংরেজির ক্ষেত্রে ভোকাবুলারি, সিনোনিম-এন্টোনিম ও অনুবাদ চর্চা করতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্যাংক জব সংশিষ্ট বাজারের কিছু বই ফলো করতে পারে। বাংলার জন্য নবম-দশম শ্রেনীর বোর্ড বইটি গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। প্রিলিমীনারিতে পরীক্ষায় শেষের দিকে ম্যাথ অংশটি দাগাতে হবে। ব্যাংকে চাকুরি পাবার মূল হাতিয়ার হচ্ছে রিটেন। রিটেনের ক্ষেত্রে টাইম ম্যানেজমেন্ট করে ২ ঘন্টায় ২০০ নম্বরের সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি ম্যাথ অংশটি ভালোভাবে দিতে হবে। ধৈর্য রেখে নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে।

বিডি সমাচার: ভাইভার প্রস্তুতি কেমন হতে হয়?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: ভাইবার ক্ষেত্রে অনার্সের নিজ বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও যে ব্যাংকের ভাইবা হবে সে ব্যাংক সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। পাশাপাশি চলতি বা সাম্প্রতিক বিষয় ও নিজ জেলা সম্পর্কে জানতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরির গ্রুপগুলো থেকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সহযোগিতা নিতে পারে। তবে ব্যাংক জবের ক্ষেত্রে ভাইবার থেকে রিটেন বেশি গুরুত্ব। কারন রিটেনে যে এগিয়ে থাকবে তার চাকরি হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

বিডি সমাচার: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

সাইফুল ইসলাম সবুজ: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে একটা ভালো মানের চাকরির করতে চাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি অন্যান্য ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে জব করার ইচ্ছে রয়েছে। চাকরির পাশাপাশি সমাজসেবা মূলক সংঘটনের ও কাজের সাথে জড়িত থাকবো।