ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে যে নিয়ম মানবেন

  • Update Time : ০১:২৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১
  • / 253

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

ভুল ডায়েটের কারণে অনেক রোগের জন্ম হয় যার মধ্যে একটি হলো ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস রোগ রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির কারণে ঘটে। একই সময়ে অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায়। এর জন্য ওষুধ এড়ানো প্রয়োজন। একই সাথে খাদ্যাভ্যাসের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।

যখন কারও ডায়াবেটিস হয়, তখন ওই মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। ফলে দেহের কোষে গ্লুকোজ পৌঁছাতে পারে না। এতে করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এতে করে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো প্রকাশিত হতে থাকে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে, আপনার প্রথমে খাওয়া পরিবর্তন করা উচিত। ডায়েটে এমন কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যা রক্তে শর্করার বর্ধিত স্তরকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা।

ইনসুলিননির্ভর রোগীদের (টাইপ-১ ডায়াবেটিস) এবং কোনো কোনো টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীকে নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয়। বেশিরভাগ টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য মুখে খাওয়ার ওষুধ গ্রহণ করেন। এসব ওষুধ শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় এবং ইনসুলিনকে যথাযথভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। কোনো কোনো টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগী কোনো ওষুধ গ্রহণ না করেই খাওয়া নিয়ন্ত্রণ, নিয়মকানুন মেনে চলা ও ব্যায়ামের মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।

ডায়াবেটিস থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখাটা খুবই জরুরি। না হলে অচিরেই হৃদরোগ, স্নায়ুর অসুখ, পায়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে ভাল উপায় এর উপযোগী ডায়েট মেনে চলা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় খাওয়াদাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে ‘আফটার মিল হাইপারগ্লাইসেমিয়া’। তবে খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

একজন পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসক নির্ধারণ করে দেবেন, রোগী কোন খাবার কি পরিমাণে খাবেন। তবে সাধারণ কথা হলো- পরিশোধিত চিনি ও চিনিজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া ঠিক নয়। চিনিসমৃদ্ধ কোমল পানীয়, হরেক রকম মিষ্টান্ন, আইসক্রিম, ক্যান্ডি, চকলেট বা যে কোনো খাবার যা শরীরে সুগারের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বাড়িয়ে দেয়, তা খাওয়া ঠিক হবে না। কোন খাবার শরীরে সুগারের মাত্রা কত দ্রুত বা কত ধীরে বাড়ায়, তা নির্ভর করে খাবারের ‘গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স’-এর ওপর।

ডায়াবেটিস থাকলে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার খাওয়া দরকার। তাই খাবার আগে দেখে নিন কোন ধরনের খাবারে জিআই বা গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ ৫৫ শতাংশের কম। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স হলো একটি সংখ্যা, যা রক্তে কোনো খাবারের সুগারের মাত্রা ধীরে বা দ্রুত বাড়ানোর ক্ষমতাকে নির্দেশ করে। যেসব খাবারের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স যত বেশি, সেসব খাবার রক্তে তত দ্রুত সুগারের মাত্রা বাড়ায়। কম পাকা কলার চেয়ে বেশি পাকা কলার গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স বেশি। খাবারের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ৫৫ বা তার চেয়ে কম হলে ভালো। কারণ এসব খাবারের হজম, বিশোষণ ও সুগারে রাসায়নিক রূপান্তরে সময় লাগে বেশি। তাই রক্তে অতি দ্রুত সুগারের মাত্রা বাড়ে না।

গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ৫৬ থেকে ৬৯-এর মধ্যে হলে মধ্যম এবং ৭০ বা তার বেশি হলে তা বেশি বা ক্ষতিকর বলে গণ্য করা হয়। উদাহরণস্বরূপ- গ্লুকোজ, আপেল, কমলা, মধু, কোকাকোলা, তরমুজ এবং সাদা ভাতের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স হল যথাক্রমে ১০০, ৩৮, ৪৪, ৫৮, ৬৪, ৭২ এবং ৯৮। এ প্রসঙ্গে আরও একটি কথা বলা দরকার। কোনো খাবারের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স বেশি হলেও সেই খাবারের গ্লাইসেমিক লোড কম হলে তা বেশি ক্ষতিকর নয়। কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবারে কী পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে তার ওপর গ্লাইসেমিক লোড নির্ভর করে।

গ্লাইসেমিক লোড নির্ণয়ের পদ্ধতি হল : গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্সকে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবারে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ (গ্রাম) দিয়ে গুণ করে ১০০ দিয়ে ভাগ করা। যেমন, তরমুজের গ্লাইসেমিক লোড হল : ৭২x৬ (১২০ গ্রাম তরমুজে ৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে) ভাগ ১০০ = ৪.৩২। গ্লাইসেমিক লোড কম বলে ডায়াবেটিক রোগীদের পরিমিত তরমুজ খাওয়া তেমন ক্ষতিকর নয়। কোন খাবারের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড কত তা জানার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে জানা যেতে পারে।

সকাল থেকে সারা দিন কী খাবার খাচ্ছেন সেটা খেয়াল রাখা জরুরি। যেমন মিষ্টি, সাদা পাঁউরুটি এই জাতীয় খাবার খুব কম খান, নাহলে খাওয়াদাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে। সকাল থেকে সারা দিন কী খাবার খাবেন তার যদি একটি পরিকল্পনা থাকে, তাহলে খাবার বাছতেও সুবিধে হবে। এ ছাড়া সেই খাবারগুলো ডায়াবেটিসের পক্ষে আদৌ উপকারি কি না, সেটাও ভেবে দেখার অবকাশ পাবেন।

একবারে অনেকটা খাবার খাচ্ছেন? তা না খেয়ে বারে বারে অল্প অল্প করে খাবার খান। কারণ গবেষণা বলছে দিনে তিন বেলা ভারী খাবার খাওয়ার চেয়ে যদি বারে বারে অল্প করে খাবার খাওয়া যায়, তা হলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কার্বোহাইড্রেটসের বেশি মাত্রায় খাওয়া ডায়াবেটিসের রোগীদের একেবারেই উচিত নয়। তাই যখন খাচ্ছেন তো ‘লো-কার্ব’ বা স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটস খাবার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া প্রতিদিন কতখানি কার্বোহাইড্রেটস খাচ্ছেন, সেই বিষয়েও একটু সতর্ক থাকুন। অতিরিক্ত প্রসেস করা কার্বোহাইড্রেটস খাবেন না।

আপনার খাবারের তালিকা থেকে জাঙ্কফুড বাদ দিয়ে দিন। এসব খাবারে রয়েছে প্রচুর লবণ, চিনি, মনোসোডিয়াম গ্লুটামেটও টাট্টাজিনজাতীয় বিতর্কিত খাদ্যোপকরণ। অন্য দরকারি খাবারের মতো জাঙ্কফুডে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও আঁশ কম থাকে। ম্যাকডোনাল্ড, হ্যামবার্গার, ফ্রাইড চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পিৎজা জাঙ্কফুডের কিছু উদাহরণ। জাঙ্কফুডে প্রচুর চিনি ও চর্বি থাকে বলে এসব খাবার খেলে ওজন বেড়ে যাওয়াসহ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, আর্থ্রাইটিস ও ক্যানসারের মতো বহু জটিল মারণঘাতী রোগের উৎপত্তি হতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media


ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে যে নিয়ম মানবেন

Update Time : ০১:২৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

ভুল ডায়েটের কারণে অনেক রোগের জন্ম হয় যার মধ্যে একটি হলো ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস রোগ রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির কারণে ঘটে। একই সময়ে অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায়। এর জন্য ওষুধ এড়ানো প্রয়োজন। একই সাথে খাদ্যাভ্যাসের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।

যখন কারও ডায়াবেটিস হয়, তখন ওই মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। ফলে দেহের কোষে গ্লুকোজ পৌঁছাতে পারে না। এতে করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এতে করে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো প্রকাশিত হতে থাকে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে, আপনার প্রথমে খাওয়া পরিবর্তন করা উচিত। ডায়েটে এমন কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যা রক্তে শর্করার বর্ধিত স্তরকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা।

ইনসুলিননির্ভর রোগীদের (টাইপ-১ ডায়াবেটিস) এবং কোনো কোনো টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীকে নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয়। বেশিরভাগ টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য মুখে খাওয়ার ওষুধ গ্রহণ করেন। এসব ওষুধ শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় এবং ইনসুলিনকে যথাযথভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। কোনো কোনো টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগী কোনো ওষুধ গ্রহণ না করেই খাওয়া নিয়ন্ত্রণ, নিয়মকানুন মেনে চলা ও ব্যায়ামের মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।

ডায়াবেটিস থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখাটা খুবই জরুরি। না হলে অচিরেই হৃদরোগ, স্নায়ুর অসুখ, পায়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে ভাল উপায় এর উপযোগী ডায়েট মেনে চলা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় খাওয়াদাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে ‘আফটার মিল হাইপারগ্লাইসেমিয়া’। তবে খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

একজন পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসক নির্ধারণ করে দেবেন, রোগী কোন খাবার কি পরিমাণে খাবেন। তবে সাধারণ কথা হলো- পরিশোধিত চিনি ও চিনিজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া ঠিক নয়। চিনিসমৃদ্ধ কোমল পানীয়, হরেক রকম মিষ্টান্ন, আইসক্রিম, ক্যান্ডি, চকলেট বা যে কোনো খাবার যা শরীরে সুগারের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বাড়িয়ে দেয়, তা খাওয়া ঠিক হবে না। কোন খাবার শরীরে সুগারের মাত্রা কত দ্রুত বা কত ধীরে বাড়ায়, তা নির্ভর করে খাবারের ‘গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স’-এর ওপর।

ডায়াবেটিস থাকলে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার খাওয়া দরকার। তাই খাবার আগে দেখে নিন কোন ধরনের খাবারে জিআই বা গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ ৫৫ শতাংশের কম। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স হলো একটি সংখ্যা, যা রক্তে কোনো খাবারের সুগারের মাত্রা ধীরে বা দ্রুত বাড়ানোর ক্ষমতাকে নির্দেশ করে। যেসব খাবারের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স যত বেশি, সেসব খাবার রক্তে তত দ্রুত সুগারের মাত্রা বাড়ায়। কম পাকা কলার চেয়ে বেশি পাকা কলার গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স বেশি। খাবারের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ৫৫ বা তার চেয়ে কম হলে ভালো। কারণ এসব খাবারের হজম, বিশোষণ ও সুগারে রাসায়নিক রূপান্তরে সময় লাগে বেশি। তাই রক্তে অতি দ্রুত সুগারের মাত্রা বাড়ে না।

গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ৫৬ থেকে ৬৯-এর মধ্যে হলে মধ্যম এবং ৭০ বা তার বেশি হলে তা বেশি বা ক্ষতিকর বলে গণ্য করা হয়। উদাহরণস্বরূপ- গ্লুকোজ, আপেল, কমলা, মধু, কোকাকোলা, তরমুজ এবং সাদা ভাতের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স হল যথাক্রমে ১০০, ৩৮, ৪৪, ৫৮, ৬৪, ৭২ এবং ৯৮। এ প্রসঙ্গে আরও একটি কথা বলা দরকার। কোনো খাবারের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স বেশি হলেও সেই খাবারের গ্লাইসেমিক লোড কম হলে তা বেশি ক্ষতিকর নয়। কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবারে কী পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে তার ওপর গ্লাইসেমিক লোড নির্ভর করে।

গ্লাইসেমিক লোড নির্ণয়ের পদ্ধতি হল : গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্সকে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবারে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ (গ্রাম) দিয়ে গুণ করে ১০০ দিয়ে ভাগ করা। যেমন, তরমুজের গ্লাইসেমিক লোড হল : ৭২x৬ (১২০ গ্রাম তরমুজে ৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে) ভাগ ১০০ = ৪.৩২। গ্লাইসেমিক লোড কম বলে ডায়াবেটিক রোগীদের পরিমিত তরমুজ খাওয়া তেমন ক্ষতিকর নয়। কোন খাবারের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড কত তা জানার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে জানা যেতে পারে।

সকাল থেকে সারা দিন কী খাবার খাচ্ছেন সেটা খেয়াল রাখা জরুরি। যেমন মিষ্টি, সাদা পাঁউরুটি এই জাতীয় খাবার খুব কম খান, নাহলে খাওয়াদাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে। সকাল থেকে সারা দিন কী খাবার খাবেন তার যদি একটি পরিকল্পনা থাকে, তাহলে খাবার বাছতেও সুবিধে হবে। এ ছাড়া সেই খাবারগুলো ডায়াবেটিসের পক্ষে আদৌ উপকারি কি না, সেটাও ভেবে দেখার অবকাশ পাবেন।

একবারে অনেকটা খাবার খাচ্ছেন? তা না খেয়ে বারে বারে অল্প অল্প করে খাবার খান। কারণ গবেষণা বলছে দিনে তিন বেলা ভারী খাবার খাওয়ার চেয়ে যদি বারে বারে অল্প করে খাবার খাওয়া যায়, তা হলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কার্বোহাইড্রেটসের বেশি মাত্রায় খাওয়া ডায়াবেটিসের রোগীদের একেবারেই উচিত নয়। তাই যখন খাচ্ছেন তো ‘লো-কার্ব’ বা স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটস খাবার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া প্রতিদিন কতখানি কার্বোহাইড্রেটস খাচ্ছেন, সেই বিষয়েও একটু সতর্ক থাকুন। অতিরিক্ত প্রসেস করা কার্বোহাইড্রেটস খাবেন না।

আপনার খাবারের তালিকা থেকে জাঙ্কফুড বাদ দিয়ে দিন। এসব খাবারে রয়েছে প্রচুর লবণ, চিনি, মনোসোডিয়াম গ্লুটামেটও টাট্টাজিনজাতীয় বিতর্কিত খাদ্যোপকরণ। অন্য দরকারি খাবারের মতো জাঙ্কফুডে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও আঁশ কম থাকে। ম্যাকডোনাল্ড, হ্যামবার্গার, ফ্রাইড চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পিৎজা জাঙ্কফুডের কিছু উদাহরণ। জাঙ্কফুডে প্রচুর চিনি ও চর্বি থাকে বলে এসব খাবার খেলে ওজন বেড়ে যাওয়াসহ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, আর্থ্রাইটিস ও ক্যানসারের মতো বহু জটিল মারণঘাতী রোগের উৎপত্তি হতে পারে।