ডেঙ্গু হলে করণীয় কী

লাইফস্টাইল ডেস্ক
  • Update Time : ০৯:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪
  • / 36

ডেঙ্গু মশার প্রতীকী ছবি

ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ ও বর্তমানে এক আতঙ্কের নাম। স্ত্রী এডিস মশার কামড়ে এ রোগ হয়। এ বছর বর্ষা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডেঙ্গু হচ্ছে।

লক্ষণ

জ্বর ১০১-১০৪ ডিগ্রি, শরীরব্যথা, তীব্র মাথাব্যথা, চোখব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ক্ষুধামান্দ্য, বমি বমি ভাব, বমি করা, গলাব্যথা, কাশি ইত্যাদি। শরীরে র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। তীব্র ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ হলো প্রচণ্ড পেটব্যথা, ক্রমাগত বমি, অনিয়ন্ত্রিত পাতলা পায়খানা, রক্তক্ষরণ, দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া, নিস্তেজ হওয়া, বিরক্তি ও অস্থিরতা।

কেন সচেতনতা দরকার

আর দশটা ভাইরাস জ্বরের মতো ডেঙ্গু জ্বরও নিজে থেকে সাত দিনের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু ডেঙ্গুর সংকটকাল শুরু হয় জ্বর ছাড়ার পর ২৮-৪৮ ঘণ্টা। এ সময় হঠাৎ রক্তচাপ কমে যাওয়া ও অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। জটিলতাগুলো হলো শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্লিডিং (ডেঙ্গু-হেমোরেজ), প্লাজমা লিকেজ বা রক্তনালি থেকে জলীয় অংশ বের হয়ে রক্তচাপ কমে যাওয়া (ডেঙ্গু শক সিনড্রোম)। এসব ক্ষেত্রে উপযুক্ত চিকিৎসা না দিলে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে।

কী পরীক্ষা

জ্বরের এক দিন পরই CBC ও NS 1 Ag Antigen Test করাতে হবে। জ্বরের চার-পাঁচ দিন পার হলে CBC ও Anti Dengue Antibody আইজিজি ও আইজিএম পরীক্ষা করাতে হবে। রোগীর জটিলতা হলে অন্যান্য পরীক্ষার দরকার হবে।

শনাক্ত হলে করণীয়

বাসায় বিশ্রাম নেবেন। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল খাবেন। গা মোছাবেন। তরল খাবার যেমন স্যালাইন, ডাব, স্যুপ, ফলের জুস, দুধ খাবেন দুই থেকে আড়াই লিটার। অন্য খাবারও খাবেন। দিনে কয়েকবার রক্তচাপ মাপবেন। পালস প্রেশার দেখুন; কেননা পালসের ওপর ও নিচের প্রেশারের পার্থক্য ২০ মিমির কম হলে ঝুঁকি বাড়ে। প্রস্রাবের পরিমাণ লক্ষ করুন। সম্ভব হলে প্রতিদিন CBC Test করুন।

কখন হাসপাতালে ভর্তি

প্রচণ্ড পেটব্যথা, ঘন ঘন বমি হলে, পেটে বা বুকে পানি জমলে, ব্লিডিং, সিবিসিতে হেমাটোক্রিট বেড়ে গেলে, প্লাটিলেটের পরিমাণ ৫০ হাজারের নিচে নামলে ও প্রস্রাব কমে গেলে।

কখন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে

>>ডেঙ্গু শক সিনড্রোম।

>>প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট।

>>লিভার, ব্রেইন, হার্ট, কিডনির জটিলতা।

>>প্রচণ্ড ব্লিডিং।

কী করা যাবে না

>>অযথা আতঙ্কিত হবেন না।

>>চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেবেন।

>>কখনো ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন না।

>>অত্যধিক তরল খাবেন না।

>>স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খাবেন না।

>>প্লাটিলেট নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। প্লাটিলেটের পরিমাণ ১০ হাজার হলেও যদি হেমাটোক্রিট ঠিক থাকে, রক্তক্ষরণ না হয়, তবে অপেক্ষা করুন। কারণ, প্লাটিলেটের সংখ্যা এক–দুই দিনের মধ্যে বাড়তে শুরু করে।

অন্তঃসত্ত্বা, শিশু–কিশোর, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী ও অন্যান্য ক্রনিক রোগ থাকলে বেশি সচেতন থাকতে হবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media


ডেঙ্গু হলে করণীয় কী

Update Time : ০৯:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ ও বর্তমানে এক আতঙ্কের নাম। স্ত্রী এডিস মশার কামড়ে এ রোগ হয়। এ বছর বর্ষা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডেঙ্গু হচ্ছে।

লক্ষণ

জ্বর ১০১-১০৪ ডিগ্রি, শরীরব্যথা, তীব্র মাথাব্যথা, চোখব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ক্ষুধামান্দ্য, বমি বমি ভাব, বমি করা, গলাব্যথা, কাশি ইত্যাদি। শরীরে র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। তীব্র ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ হলো প্রচণ্ড পেটব্যথা, ক্রমাগত বমি, অনিয়ন্ত্রিত পাতলা পায়খানা, রক্তক্ষরণ, দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া, নিস্তেজ হওয়া, বিরক্তি ও অস্থিরতা।

কেন সচেতনতা দরকার

আর দশটা ভাইরাস জ্বরের মতো ডেঙ্গু জ্বরও নিজে থেকে সাত দিনের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু ডেঙ্গুর সংকটকাল শুরু হয় জ্বর ছাড়ার পর ২৮-৪৮ ঘণ্টা। এ সময় হঠাৎ রক্তচাপ কমে যাওয়া ও অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। জটিলতাগুলো হলো শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্লিডিং (ডেঙ্গু-হেমোরেজ), প্লাজমা লিকেজ বা রক্তনালি থেকে জলীয় অংশ বের হয়ে রক্তচাপ কমে যাওয়া (ডেঙ্গু শক সিনড্রোম)। এসব ক্ষেত্রে উপযুক্ত চিকিৎসা না দিলে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে।

কী পরীক্ষা

জ্বরের এক দিন পরই CBC ও NS 1 Ag Antigen Test করাতে হবে। জ্বরের চার-পাঁচ দিন পার হলে CBC ও Anti Dengue Antibody আইজিজি ও আইজিএম পরীক্ষা করাতে হবে। রোগীর জটিলতা হলে অন্যান্য পরীক্ষার দরকার হবে।

শনাক্ত হলে করণীয়

বাসায় বিশ্রাম নেবেন। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল খাবেন। গা মোছাবেন। তরল খাবার যেমন স্যালাইন, ডাব, স্যুপ, ফলের জুস, দুধ খাবেন দুই থেকে আড়াই লিটার। অন্য খাবারও খাবেন। দিনে কয়েকবার রক্তচাপ মাপবেন। পালস প্রেশার দেখুন; কেননা পালসের ওপর ও নিচের প্রেশারের পার্থক্য ২০ মিমির কম হলে ঝুঁকি বাড়ে। প্রস্রাবের পরিমাণ লক্ষ করুন। সম্ভব হলে প্রতিদিন CBC Test করুন।

কখন হাসপাতালে ভর্তি

প্রচণ্ড পেটব্যথা, ঘন ঘন বমি হলে, পেটে বা বুকে পানি জমলে, ব্লিডিং, সিবিসিতে হেমাটোক্রিট বেড়ে গেলে, প্লাটিলেটের পরিমাণ ৫০ হাজারের নিচে নামলে ও প্রস্রাব কমে গেলে।

কখন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে

>>ডেঙ্গু শক সিনড্রোম।

>>প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট।

>>লিভার, ব্রেইন, হার্ট, কিডনির জটিলতা।

>>প্রচণ্ড ব্লিডিং।

কী করা যাবে না

>>অযথা আতঙ্কিত হবেন না।

>>চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেবেন।

>>কখনো ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন না।

>>অত্যধিক তরল খাবেন না।

>>স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খাবেন না।

>>প্লাটিলেট নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। প্লাটিলেটের পরিমাণ ১০ হাজার হলেও যদি হেমাটোক্রিট ঠিক থাকে, রক্তক্ষরণ না হয়, তবে অপেক্ষা করুন। কারণ, প্লাটিলেটের সংখ্যা এক–দুই দিনের মধ্যে বাড়তে শুরু করে।

অন্তঃসত্ত্বা, শিশু–কিশোর, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী ও অন্যান্য ক্রনিক রোগ থাকলে বেশি সচেতন থাকতে হবে।