নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস

  • Update Time : ০১:৩৬:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / 104

স্পোর্টস ডেস্ক

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেতে শেষ দিনে কেবল তিন উইকেট নিতে হতো নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে। স্বাগতিকদের জয়ের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারতেন ড্যারিল মিচেল। সকালের শুরুতে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে একটু ভীতিও ধরিয়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তবে ‘পথের কাঁটা’ পরিস্কার করতে খুব বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশ। নাঈম হাসানের লেংথ ডেলিভারিতে সুইপ করতে গিয়ে নিজের উইকেটটা বিলিয়ে দিয়ে গেলেন মিচেল। তাকে ফেরার পর বাংলাদেশের জয়টা ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার।

টাইগারদের জয়ের সময়ক্ষেপন করেছেন টিম সাউদি। যদিও নিউজিল্যান্ডের অধিনায়কের ৩৪ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ইশ সোধিকে ফিরিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৫০ রানের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের পর আরও একবার টেস্টে কিউইদের হারালো টাইগাররা। এদিকে ঘরের মাঠে খেলা সবশেষ তিন টেস্টেও জয়ের দেখা পেলেন শান্তরা।

চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলেই জয়ের সুবাসটা পেয়েছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ উইকেট। টেস্ট বাঁচাতে কিংবা জিততে হলে লম্বা পথ পাড়ি দিতে হতো কিউইদের। সারাদিন ব্যাটিং করতে পারলেই কেবল ড্র করার সুযোগ থাকতো, এমনকি জয়ের সম্ভাবনাও ছিল। তবে ৩ উইকেট নিয়ে ২১৯ রানের পাহাড় টপকানোটা যে সহজ নয় এটা জানতো নিউজিল্যান্ডও। তবুও এজাজ প্যাটেল জানিয়েছিলেন, তারা লড়াইয়ের আশা ছাড়ছে না। শেষ দিনে লড়াই করতে চায় সফরকারীরা।

কঠিন সমীকরণ পাড়ি দেয়ার মিশনে সকালের শুরুতেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ড্যারিল মিচেল। চতুর্থ দিন শেষ হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের সমর্থকদের মাঝে একটা শঙ্কা উঁকি দিচ্ছিলো। মিচেলকে ব্যাটিং করতে দেখে মনে পড়ছিল কাইল মেয়ার্সের কথা। চট্টগ্রামে শেষ দিকে ডাবল সেঞ্চুরি করে একাই সেদিন বাংলাদেশের জেতা ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছিলেন। মিচেলকে অবশ্য মেয়ার্স হতে দেননি নাঈম হাসান।

ডানহাতি এই অফ স্পিনারের লেংথ ডেলিভারিতে হাঁটু গেড়ে সুইপ করেছিলেন মিচেল। টপ এজ হওয়ায় বল সরাসরি উপরে উঠে যায়। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে থাকা তাইজুল ইসলাম একটু দৌড়ে গিয়ে ক্যাচট নিলেন সহজেই। বাংলাদেশও তাদের জয়ের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে থাকা মিচেলকে ফেরালো। ডানহাতি এই ব্যাটার ফিরে গেছেন ৫৮ রানের ইনিংস খেলে। মিচেল ফেরার পর ব্যাটিংয়ে এসে শুরু থেকেই একটু আক্রমণাত্বক খেলায় মনোযোগী ছিলেন সাউদি।

চার ও ছক্কা মেরে দ্রুত কিছু রানও তুলেছেন তিনি। তবে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ককে ইনিংস বেশি বড় করতে দেননি তাইজুল। বাঁহাত এই স্পিনারের বলে উড়িয়ে মারার চেষ্টা থেকেই শর্ট মিড উইকেটে থাকা জাকির হাসানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সাউদি।

২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে টেস্টের স্মরণীয় জয়টি পেয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথমবার কিউইদের তাদের মাটিতে হারানোর কীর্তি গড়েছিল। এবার ঘরের মাঠে প্রথমবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ। সিলেটে প্রথম টেস্টে সফরকারীদের হারিয়েছে ১৫০ রানের ব্যবধানে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস

Update Time : ০১:৩৬:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেতে শেষ দিনে কেবল তিন উইকেট নিতে হতো নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে। স্বাগতিকদের জয়ের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারতেন ড্যারিল মিচেল। সকালের শুরুতে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে একটু ভীতিও ধরিয়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তবে ‘পথের কাঁটা’ পরিস্কার করতে খুব বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশ। নাঈম হাসানের লেংথ ডেলিভারিতে সুইপ করতে গিয়ে নিজের উইকেটটা বিলিয়ে দিয়ে গেলেন মিচেল। তাকে ফেরার পর বাংলাদেশের জয়টা ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার।

টাইগারদের জয়ের সময়ক্ষেপন করেছেন টিম সাউদি। যদিও নিউজিল্যান্ডের অধিনায়কের ৩৪ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ইশ সোধিকে ফিরিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৫০ রানের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের পর আরও একবার টেস্টে কিউইদের হারালো টাইগাররা। এদিকে ঘরের মাঠে খেলা সবশেষ তিন টেস্টেও জয়ের দেখা পেলেন শান্তরা।

চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলেই জয়ের সুবাসটা পেয়েছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ উইকেট। টেস্ট বাঁচাতে কিংবা জিততে হলে লম্বা পথ পাড়ি দিতে হতো কিউইদের। সারাদিন ব্যাটিং করতে পারলেই কেবল ড্র করার সুযোগ থাকতো, এমনকি জয়ের সম্ভাবনাও ছিল। তবে ৩ উইকেট নিয়ে ২১৯ রানের পাহাড় টপকানোটা যে সহজ নয় এটা জানতো নিউজিল্যান্ডও। তবুও এজাজ প্যাটেল জানিয়েছিলেন, তারা লড়াইয়ের আশা ছাড়ছে না। শেষ দিনে লড়াই করতে চায় সফরকারীরা।

কঠিন সমীকরণ পাড়ি দেয়ার মিশনে সকালের শুরুতেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ড্যারিল মিচেল। চতুর্থ দিন শেষ হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের সমর্থকদের মাঝে একটা শঙ্কা উঁকি দিচ্ছিলো। মিচেলকে ব্যাটিং করতে দেখে মনে পড়ছিল কাইল মেয়ার্সের কথা। চট্টগ্রামে শেষ দিকে ডাবল সেঞ্চুরি করে একাই সেদিন বাংলাদেশের জেতা ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছিলেন। মিচেলকে অবশ্য মেয়ার্স হতে দেননি নাঈম হাসান।

ডানহাতি এই অফ স্পিনারের লেংথ ডেলিভারিতে হাঁটু গেড়ে সুইপ করেছিলেন মিচেল। টপ এজ হওয়ায় বল সরাসরি উপরে উঠে যায়। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে থাকা তাইজুল ইসলাম একটু দৌড়ে গিয়ে ক্যাচট নিলেন সহজেই। বাংলাদেশও তাদের জয়ের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে থাকা মিচেলকে ফেরালো। ডানহাতি এই ব্যাটার ফিরে গেছেন ৫৮ রানের ইনিংস খেলে। মিচেল ফেরার পর ব্যাটিংয়ে এসে শুরু থেকেই একটু আক্রমণাত্বক খেলায় মনোযোগী ছিলেন সাউদি।

চার ও ছক্কা মেরে দ্রুত কিছু রানও তুলেছেন তিনি। তবে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ককে ইনিংস বেশি বড় করতে দেননি তাইজুল। বাঁহাত এই স্পিনারের বলে উড়িয়ে মারার চেষ্টা থেকেই শর্ট মিড উইকেটে থাকা জাকির হাসানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সাউদি।

২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে টেস্টের স্মরণীয় জয়টি পেয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথমবার কিউইদের তাদের মাটিতে হারানোর কীর্তি গড়েছিল। এবার ঘরের মাঠে প্রথমবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ। সিলেটে প্রথম টেস্টে সফরকারীদের হারিয়েছে ১৫০ রানের ব্যবধানে।