ওয়ার্নার-মার্শের কাছে পাত্তা পেল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ

  • Update Time : ০৮:৪০:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ নভেম্বর ২০২১
  • / 141

স্পোর্টস ডেস্কঃ 

১৫৭ রান করে একটু স্বস্তিতে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অস্ট্রেলিয়া লক্ষ্যে নেমে তাদের স্বস্তি দেয়নি। বিশেষ করে ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ যে ঝড় তুলেছিলেন, তাতে পাত্তা পেল না উইন্ডিজ। ৮ উইকেটে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ২২ বল হাতে রেখে।

১৫৮ রানের লক্ষ্যে নেমে দুর্দান্ত শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার। অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নারের উদ্বোধনী জুটি প্রথম ওভারে আকিল হোসেনের বল থেকে মাত্র ৫ রান তুললেও পরের দুই ওভারে একাধিক চার-ছক্কা আসে। যদিও তারা দুজন মিলে পাওয়ার প্লে শেষ করতে পারেননি। ১১ বলে এক চারে মাত্র ৯ রান করে চতুর্থ ওভারে আকিলের শিকার হন অধিনায়ক ফিঞ্চ।

ওয়ার্নার ছিলেন একই ছন্দে, মানে ঝড়ো ইনিংস খেলে গেছেন। তাতে ২৯ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে এই আসরে নিজের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি করেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লেতে আসে ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৫৩ রান। ১০.১ ওভারে ১০০ রান করে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে।

ওয়ার্নারের মতোই ঝড় তোলেন মিচেল মার্শ। তিনি ২৮ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ফিফটি করেন। ৬২ বলেই তাদের জুটি একশ ছোঁয়। ক্রিস গেইল প্রথমবার বল হাতে নেন। ১৬তম ওভারের শেষ বলেই ভাঙেন এই ভয়ঙ্কর জুটি, তখন স্কোর ছিল লেভেল। মার্শ ক্যাচ দেন জেসন হোল্ডারকে। ৩২ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৫২ রান করেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান। মার্শ প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে মজা করেন গেইল। ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জেতান ওয়ার্নার। ৫৬ বলে ৯ চার ও ৪ ছয়ে ৮৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ১৬.২ ওভারে ২ উইকেটে ১৬১ রান করে অস্ট্রেলিয়া।

এই জয়ে ৫ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ-১ এর শীর্ষে উঠল অস্ট্রেলিয়া। সমান পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা ইংল্যান্ড। এই ম্যাচ শেষেই চূড়ান্ত হবে আরেক সেমিফাইনালিস্ট কোন দল? অবশ্য রান রেট ১.২১৬ নিয়ে ফেভারিট অস্ট্রেলিয়াই। সেমিফাইনালে উঠতে হলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জিততে হবে বিশাল ব্যবধানে।

এর আগে টস হেরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে শুরুটা বলার মতোই করেছিল উইন্ডিজ। কিন্তু পরে ব্যাটিংয়ে ভুগতে শুরু করেছিল তারা। তবে কিয়েরন পোলার্ডের ছোটখাটো ঝড় ও শেষ দুই বলে আন্দ্রে রাসেলের টানা ছক্কায় চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৭ উইকেটে ১৫৭ রান করেছে তারা।

একপ্রান্ত থেকে ওপেনার এভিন লুইস টানা তিনটি চার মারলেন। অন্য প্রান্তে ক্রিস গেইল দুটি বড় ছক্কা। তাতে ২.১ ওভারে স্কোর ৩০। দ্বিতীয় ওভারেই এসেছিল ২০ রান। ব্যস, হঠাৎ ছন্দপতন।

গেইল দ্বিতীয় ছক্কা মারার পরের বলে প্যাট কামিন্সের কাছে বোল্ড। ৯ বলে ১৫ রান তার। নিকোলাস পুরান গেলেন ক্রিজে। তিনিও নিজের দ্বিতীয় বলে মারলেন ৪। পরের ওভারে জোড়া আঘাত জশ হ্যাজেলউডের, যাতে পুরান (৪) ও রোস্টন চেজ (০) তিন বলের মধ্যে বিদায় নিলেন।

টস হেরে আবু ধাবিতে ব্যাট করতে নেমে ঝড়ো শুরুর পর এক ধাক্কায় ৮ বলের মধ্যে ৩ উইকেট নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের। যদিও মারকুটে শুরুর প্রভাব পড়েছে পাওয়ার প্লেতে, প্রথম ৬ ওভারে ৩ উইকেটে তাদের রান ৫০।

১০ ওভার শেষ হতেই আরো একটি উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অ্যাডাম জাম্পা তার দ্বিতীয় ওভারে লুইসকে স্টিভ স্মিথের ক্যাচ বানান। ২৬ বলে ৫ চারে সাজানো ছিল ক্যারিবিয়ান ওপেনারের ২৯ রানের ইনিংস। ১০ ওভার পর তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৭৪ রান।

১৩তম ওভারে হ্যাজেলউড তার তৃতীয় উইকেট তুলে নেন শিমরন হেটমায়ারকে ফিরিয়ে। ২৮ বলে ২ চারে ২৭ রান করে ম্যাথু ওয়েডকে ক্যাচ দেন হেটমায়ার। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ২২ গজে নামেন ডোয়াইন ব্রাভো। চার ওভারের বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকলেও বিদায়ী ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৮তম ওভারে হ্যাজেলউডের চতুর্থ শিকার হন ব্রাভো ১২ বলে ১০ রান করে, একটি ছয় ছিল তার।

অধিনায়ক কিয়েরন পোলার্ড শেষ ওভারে আউট হন দারুণ ইনিংস খেলে, ৩১ বলে চারটি চার ও ১ ছয়ে ৪৪ রান করেন। শেষ দুই বলে টানা ছক্কা হাঁকান রাসেল। ৭ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। অন্য প্রান্তে জেসন হোল্ডার ১ রানে টিকে ছিলেন।

হ্যাজেলউড অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৪ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ওয়ার্নার-মার্শের কাছে পাত্তা পেল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ

Update Time : ০৮:৪০:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ নভেম্বর ২০২১

স্পোর্টস ডেস্কঃ 

১৫৭ রান করে একটু স্বস্তিতে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অস্ট্রেলিয়া লক্ষ্যে নেমে তাদের স্বস্তি দেয়নি। বিশেষ করে ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ যে ঝড় তুলেছিলেন, তাতে পাত্তা পেল না উইন্ডিজ। ৮ উইকেটে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ২২ বল হাতে রেখে।

১৫৮ রানের লক্ষ্যে নেমে দুর্দান্ত শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার। অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নারের উদ্বোধনী জুটি প্রথম ওভারে আকিল হোসেনের বল থেকে মাত্র ৫ রান তুললেও পরের দুই ওভারে একাধিক চার-ছক্কা আসে। যদিও তারা দুজন মিলে পাওয়ার প্লে শেষ করতে পারেননি। ১১ বলে এক চারে মাত্র ৯ রান করে চতুর্থ ওভারে আকিলের শিকার হন অধিনায়ক ফিঞ্চ।

ওয়ার্নার ছিলেন একই ছন্দে, মানে ঝড়ো ইনিংস খেলে গেছেন। তাতে ২৯ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে এই আসরে নিজের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি করেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লেতে আসে ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৫৩ রান। ১০.১ ওভারে ১০০ রান করে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে।

ওয়ার্নারের মতোই ঝড় তোলেন মিচেল মার্শ। তিনি ২৮ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ফিফটি করেন। ৬২ বলেই তাদের জুটি একশ ছোঁয়। ক্রিস গেইল প্রথমবার বল হাতে নেন। ১৬তম ওভারের শেষ বলেই ভাঙেন এই ভয়ঙ্কর জুটি, তখন স্কোর ছিল লেভেল। মার্শ ক্যাচ দেন জেসন হোল্ডারকে। ৩২ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৫২ রান করেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান। মার্শ প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে মজা করেন গেইল। ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জেতান ওয়ার্নার। ৫৬ বলে ৯ চার ও ৪ ছয়ে ৮৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ১৬.২ ওভারে ২ উইকেটে ১৬১ রান করে অস্ট্রেলিয়া।

এই জয়ে ৫ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ-১ এর শীর্ষে উঠল অস্ট্রেলিয়া। সমান পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা ইংল্যান্ড। এই ম্যাচ শেষেই চূড়ান্ত হবে আরেক সেমিফাইনালিস্ট কোন দল? অবশ্য রান রেট ১.২১৬ নিয়ে ফেভারিট অস্ট্রেলিয়াই। সেমিফাইনালে উঠতে হলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জিততে হবে বিশাল ব্যবধানে।

এর আগে টস হেরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে শুরুটা বলার মতোই করেছিল উইন্ডিজ। কিন্তু পরে ব্যাটিংয়ে ভুগতে শুরু করেছিল তারা। তবে কিয়েরন পোলার্ডের ছোটখাটো ঝড় ও শেষ দুই বলে আন্দ্রে রাসেলের টানা ছক্কায় চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৭ উইকেটে ১৫৭ রান করেছে তারা।

একপ্রান্ত থেকে ওপেনার এভিন লুইস টানা তিনটি চার মারলেন। অন্য প্রান্তে ক্রিস গেইল দুটি বড় ছক্কা। তাতে ২.১ ওভারে স্কোর ৩০। দ্বিতীয় ওভারেই এসেছিল ২০ রান। ব্যস, হঠাৎ ছন্দপতন।

গেইল দ্বিতীয় ছক্কা মারার পরের বলে প্যাট কামিন্সের কাছে বোল্ড। ৯ বলে ১৫ রান তার। নিকোলাস পুরান গেলেন ক্রিজে। তিনিও নিজের দ্বিতীয় বলে মারলেন ৪। পরের ওভারে জোড়া আঘাত জশ হ্যাজেলউডের, যাতে পুরান (৪) ও রোস্টন চেজ (০) তিন বলের মধ্যে বিদায় নিলেন।

টস হেরে আবু ধাবিতে ব্যাট করতে নেমে ঝড়ো শুরুর পর এক ধাক্কায় ৮ বলের মধ্যে ৩ উইকেট নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের। যদিও মারকুটে শুরুর প্রভাব পড়েছে পাওয়ার প্লেতে, প্রথম ৬ ওভারে ৩ উইকেটে তাদের রান ৫০।

১০ ওভার শেষ হতেই আরো একটি উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অ্যাডাম জাম্পা তার দ্বিতীয় ওভারে লুইসকে স্টিভ স্মিথের ক্যাচ বানান। ২৬ বলে ৫ চারে সাজানো ছিল ক্যারিবিয়ান ওপেনারের ২৯ রানের ইনিংস। ১০ ওভার পর তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৭৪ রান।

১৩তম ওভারে হ্যাজেলউড তার তৃতীয় উইকেট তুলে নেন শিমরন হেটমায়ারকে ফিরিয়ে। ২৮ বলে ২ চারে ২৭ রান করে ম্যাথু ওয়েডকে ক্যাচ দেন হেটমায়ার। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ২২ গজে নামেন ডোয়াইন ব্রাভো। চার ওভারের বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকলেও বিদায়ী ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৮তম ওভারে হ্যাজেলউডের চতুর্থ শিকার হন ব্রাভো ১২ বলে ১০ রান করে, একটি ছয় ছিল তার।

অধিনায়ক কিয়েরন পোলার্ড শেষ ওভারে আউট হন দারুণ ইনিংস খেলে, ৩১ বলে চারটি চার ও ১ ছয়ে ৪৪ রান করেন। শেষ দুই বলে টানা ছক্কা হাঁকান রাসেল। ৭ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। অন্য প্রান্তে জেসন হোল্ডার ১ রানে টিকে ছিলেন।

হ্যাজেলউড অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৪ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন।