১৫৩ রানে অলআউট বাংলাদেশ
- Update Time : ১০:১৬:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর ২০২১
- / 162
ক্রীড়া প্রতিবেদক:
নাঈম শেখ ও সাকিব আল হাসানের ইনিংস দুটি বাদ দিলে আবারও হতাশার ছবি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। নাঈম হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে খেলেছেন ৬৪ রানের ইনিংস। আর সাকিব করেন ৪২ রান। এ দুজন ছাড়া কেবল মাহমুদউল্লাহই যেতে পেরেছেন দুই অঙ্কের ঘরে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষেও তাই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে করেছে ১৫৩ রান।
হারলে বিদায়, জিতলেও বাকি থাকবে অনেক কাজ- বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ সমীকরণ এখন এতোটাই জটিল। সেই কঠিন চাপ মাথায় নিয়ে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওমানের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাট করে ১৫৩ রানে অলআউট হয়ে গেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
তিন সিনিয়র ব্যাটার সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রথম ম্যাচের ধীর ব্যাটিংয়ের সমালোচনা হয়েছে বিস্তর। তাই আজ ওমানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ব্যাটিং অর্ডারে আমূল পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ, সুযোগ দিয়েছে তরুণদের।
সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেননি তিন তরুণের কেউই। তবে দলে ফিরে দুইবার জীবন পাওয়ার পর তা কাজে লাগাতে ভুল করেননি বাঁহাতি ওপেনার মোহাম্মদ নাইম শেখ। তার ব্যাট থেকে এসেছে এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ফিফটি, করেছেন ৬৪ রান।
শুরুতে মাত্র ২১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর নাইমের ধীরেসুস্থে খেলা পঞ্চাশের সঙ্গে সিনিয়র ব্যাটার সাকিব আল হাসানের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু শেষদিকে সেই শুরুর ব্যর্থতার গল্পই লেখেন পরের ব্যাটাররা। ফলে ১৫৩ রানের বেশি হয়নি বাংলাদেশের সংগ্রহ।
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারা ম্যাচের একাদশে একটি পরিবর্তন এনে আজ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকারের জায়গায় আনা হয়েছে আরেক বাঁহাতি নাইম শেখকে। তিনিই খেলেছেন দলের সর্বোচ্চ ৬৪ রানের ইনিংস, ৫০ বল মোকাবিলা করে।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একদমই যাচ্ছে তাই ছিলো বাংলাদেশের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সাজঘরে ফিরে যান লিটন দাস। বিলাল খানের করা স্ট্যাম্প সোজা ডেলিভারিতে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে লেগ বিফোর হন লিটন। আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় ওমান।
অথচ ঠিক আগের বলেই জীবন পেয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটার লিটন। তার ফ্লিক শটে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ ছেড়ে দেন ক্যাশপ প্রজাপতি। কিন্তু জীবন পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি লিটন, আউট হয়েছেন ৭ বলে ৬ রান করে।
আগের ম্যাচের পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে আজ তিন নম্বরে পাঠানো হয়েছিলো শেখ মেহেদি হাসানকে। কিন্তু তিনি পারেননি সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে। আউট হয়ে গেছেন রানের খাতা খোলার আগেই। ফায়াজ বাটকে ফিরতি দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
মাত্র ২১ রানে দুই উইকেট হারিয়ে তখন কঠিন চাপে বাংলাদেশ দল। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে উইকেটে এসে প্রথম বলে ব্যাটের কানা থেকে সৌভাগ্যজনক বাউন্ডারি পান সাকিব। চার মেরে করা শুরুটা ধরে রাখেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তার সাবলীল ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
অন্যপ্রান্তে শুরুতে বেশ অস্বস্তিতে ছিলেন নাইম শেখ। তার ফিফটির পেছনে নিশ্চিতভাবেই বড় অবদান রেখেছেন স্বাগতিক ওমানের দুই ফিল্ডার ক্যাশপ প্রজাপতি ও জোতিন্দর সিং। তারা দুজনই একবার করে ছেড়ে দিয়েছেন নাইমের ক্যাচ।
ফায়াজ বাটের করা সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলটি ছিলো বাউন্সার, স্কয়ার কাট করেন নাইম। ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ ধরার পজিশনেই ছিলেন জোতিন্দর। কিন্তু তিনি সেটি হাতে রাখতে পারেননি। উল্টো বল চলে যায় সীমানার ওপারে, বাংলাদেশ পায় ইনিংসের দ্বিতীয় ছক্কা।
পরের ওভারেই আবারও সুযোগ পান নাইম। এবার মোহাম্মদ নাদিমের বলে শর্ট মিড অনে লোপ্পা ক্যাচ ছেড়ে দেন প্রজাপতি। যিনি এর আগে ছেড়েছিলেন লিটনের ক্যাচও। তবে লিটনের মতো পরের বলেই আউট হননি নাইম। দুইবার জীবন পেয়ে সেটি কাজে লাগিয়ে ফিফটি তুলে নেন এ বাঁহাতি ওপেনার।
বাংলাদেশের ইনিংসের সবচেয়ে বেশি রান এসেছে মোহাম্মদ নাদিমের করা ইনিংসের ১২তম ওভারে। প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান সাকিব। এক বল পর দর্শনীয় এক ছয় মারেন নাইম। সেই ওভার থেকে আসে ১৭ রান। যার সুবাদে ইনিংসের ১৪তম ওভারের প্রথম বলেই দলীয় শতক পূরণ হয় বাংলাদেশের।
কিন্তু একশ পেরুনোর ওভারেই মোড়ক লাগে টাইগারদের ইনিংসে। সেই ওভারের তৃতীয় বলেই ভাঙে সাকিব-নাইমের ৮০ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি। পয়েন্টের দিকে ঠেলে দিয়েই দ্রুত রানের জন্য ছুটেছিলেন সাকিব। কিন্তু অপরপ্রান্তে পৌঁছানোর আগেই আকিব ইলিয়াসের থ্রো’য়ে ভেঙে যায় স্ট্যাম্প, সমাপ্তি ঘটে সাকিবের ছয় চারের মারে খেলা ২৯ বলে ৪২ রানের ইনিংসের।