কক্সবাজারের নিসর্গ হোটেলের বিরুদ্ধে পর্যটকের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ

  • Update Time : ০৮:২৮:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 94

চেকআউটে ১৫ মিনিট দেরীতে ২০০০ টাকা জরিমানা

এরফান হোছাইন:

কক্সবাজারের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট নিসর্গ হোটেল এন্ড রিসোর্টের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। একাধিক পর্যটক অভিযোগ করেছেন যে, হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের হয়রানি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে।

আজ শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) হোটেল নিসর্গের রুম চেক আউট করতে গিয়ে পর্যটক হয়রানির এক ঘটনাটি ঘটে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরমানুল ইসলাম নামে ভুক্তভোগী এক পর্যটক তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, চেক আউটে মাত্র কয়েক মিনিট দেরি করার জন্য তাকে অতিরিক্ত টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা গতকাল দুপুর ১২টায় হোটেলের লবিতে পৌঁছেছিলাম। কিন্তু বুকিংকৃত রুম ক্লিন করতে দেরি হওয়ায় আমাদের চেক ইন করতে ১:৪৪ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। এরপরও রুম পরিষ্কার করতে আরও ২০ মিনিট সময় লেগেছে। পরের দিন সকালে হঠাৎ করে ১৫ মিনিটের মধ্যে চেক আউট করার জন্য ফোন আসে। আমরা ১২:৪০ মিনিটে চেক আউট করলে হোটেল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছ থেকে ২০০০ টাকা জরিমানা আদায় করে। এমনকি হোটেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে কথা বলার সুযোগও দেওয়া হয়নি। আমার মনে হয় এই ধরনের নিয়ম খুবই অন্যায়।” – চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ভুক্তভোগী আরমানুল ইসলাম এভাবেই নিসর্গ হোটেলের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।

এ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিসর্গ হোটেলের রিজার্ভেশনাল অপারেশন ম্যানেজার অংকিয়া চিং মারমা জানিয়েছেন, পর্যটকদের দেরি করে রুম ছাড়ার কারণে ২০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এই জরিমানার নির্ধারণ হোটেলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের করা। তিনি আরও জানান, হোটেলের চেক আউটের সময় সকাল ১১টা এবং প্রতি ১৫ মিনিট দেরির জন্য ২০০০ টাকা জরিমানা নেওয়া হয়। এই নিয়মের যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, ভরা মৌসুমে রুম ভাড়া দেওয়ার সুবিধার্থে এই নিয়ম করা হয়েছে। তবে, যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে এই নিয়ম আইনসঙ্গত কিনা, তখন তিনি কোনো স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি।
k
দৈনিক পূর্বকোণকে উক্ত ভুক্তভোগী আরমানুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিসর্গ হোটেলে তিনি এবং তার সঙ্গীরা বুকিংকৃত সময়ের চেয়ে অনেক পরে রুম পেয়েছিলেন। অথচ পরের দিন ১৫ মিনিট দেরিতে চেক আউট করার জন্য তাদের ২০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের অনলাইনে দেওয়া চেক আউটের সময়ের বিষয়ে বিভ্রান্ত করেছে এবং অতিরিক্ত দিনের জন্য রুম বুক করার প্রস্তাবকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। আরমানুলের মতে, হোটেল কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের সুবিধার চেয়ে নিজেদের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, যদি কোনো পর্যটকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয় বা তাদের হয়রানি করা হয়, সেক্ষেত্রে তিনি লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি আরও বলেছেন যে, পর্যটকদের অধিকার রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


কক্সবাজারের নিসর্গ হোটেলের বিরুদ্ধে পর্যটকের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ

Update Time : ০৮:২৮:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫

চেকআউটে ১৫ মিনিট দেরীতে ২০০০ টাকা জরিমানা

এরফান হোছাইন:

কক্সবাজারের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট নিসর্গ হোটেল এন্ড রিসোর্টের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। একাধিক পর্যটক অভিযোগ করেছেন যে, হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের হয়রানি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে।

আজ শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) হোটেল নিসর্গের রুম চেক আউট করতে গিয়ে পর্যটক হয়রানির এক ঘটনাটি ঘটে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরমানুল ইসলাম নামে ভুক্তভোগী এক পর্যটক তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, চেক আউটে মাত্র কয়েক মিনিট দেরি করার জন্য তাকে অতিরিক্ত টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা গতকাল দুপুর ১২টায় হোটেলের লবিতে পৌঁছেছিলাম। কিন্তু বুকিংকৃত রুম ক্লিন করতে দেরি হওয়ায় আমাদের চেক ইন করতে ১:৪৪ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। এরপরও রুম পরিষ্কার করতে আরও ২০ মিনিট সময় লেগেছে। পরের দিন সকালে হঠাৎ করে ১৫ মিনিটের মধ্যে চেক আউট করার জন্য ফোন আসে। আমরা ১২:৪০ মিনিটে চেক আউট করলে হোটেল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছ থেকে ২০০০ টাকা জরিমানা আদায় করে। এমনকি হোটেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে কথা বলার সুযোগও দেওয়া হয়নি। আমার মনে হয় এই ধরনের নিয়ম খুবই অন্যায়।” – চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ভুক্তভোগী আরমানুল ইসলাম এভাবেই নিসর্গ হোটেলের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।

এ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিসর্গ হোটেলের রিজার্ভেশনাল অপারেশন ম্যানেজার অংকিয়া চিং মারমা জানিয়েছেন, পর্যটকদের দেরি করে রুম ছাড়ার কারণে ২০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এই জরিমানার নির্ধারণ হোটেলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের করা। তিনি আরও জানান, হোটেলের চেক আউটের সময় সকাল ১১টা এবং প্রতি ১৫ মিনিট দেরির জন্য ২০০০ টাকা জরিমানা নেওয়া হয়। এই নিয়মের যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, ভরা মৌসুমে রুম ভাড়া দেওয়ার সুবিধার্থে এই নিয়ম করা হয়েছে। তবে, যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে এই নিয়ম আইনসঙ্গত কিনা, তখন তিনি কোনো স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি।
k
দৈনিক পূর্বকোণকে উক্ত ভুক্তভোগী আরমানুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিসর্গ হোটেলে তিনি এবং তার সঙ্গীরা বুকিংকৃত সময়ের চেয়ে অনেক পরে রুম পেয়েছিলেন। অথচ পরের দিন ১৫ মিনিট দেরিতে চেক আউট করার জন্য তাদের ২০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের অনলাইনে দেওয়া চেক আউটের সময়ের বিষয়ে বিভ্রান্ত করেছে এবং অতিরিক্ত দিনের জন্য রুম বুক করার প্রস্তাবকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। আরমানুলের মতে, হোটেল কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের সুবিধার চেয়ে নিজেদের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, যদি কোনো পর্যটকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয় বা তাদের হয়রানি করা হয়, সেক্ষেত্রে তিনি লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি আরও বলেছেন যে, পর্যটকদের অধিকার রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব।