ঋণের চাপে দুই শিশুকে হত্যা, মায়ের করুণ পরিণতি

  • Update Time : ০৪:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / 66

জেলা প্রতিনিধি

ঋণ করে স্বামীকে বিদেশ পাঠান। ধীরে ধীরে সেই ঋণ বিশাল আকার ধারণ করে। নিয়মিত ঋণ পরিশোধে বিভিন্ন এনজিওর চাপ সহ্য করতে না পেরে দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর এক মা আত্মহত্যা করেছেন। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে কেয়াইন ইউনিয়নের উত্তর ইসলামপুর গ্রামে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ধারণা, প্রথমে দুই সন্তানকে বিষপানে মৃত্যু নিশ্চিত করেন মা। পরে মা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বসতঘর থেকে মা ও দুই শিশু সন্তানের লাশ উদ্ধার করে।

মৃতরা হলেন মা সালমা বেগম (৩৩) ও তার কন্যাসন্তান ছাইমুনা (১১) এবং পুত্র সন্তান তাওহীদ (৭)।

স্থানীয় ও নিহতের স্বজনরা জানান, সালমা বেগম বিভিন্ন এনজিও থেকে সুদে টাকা নিয়ে ঋণগ্রস্ত ছিল। ওই ঋণের কিস্তির টাকা নিতে রোববার সকাল ৯ টার দিকে এনজিও’র দুইজন লোক বাড়িতে এসেছিল। তারা ঘরের দরজা বন্ধ দেখে চলে যায়। তারা চলে যাওয়ার পর প্রতিবেশিরা জানালা দিয়ে দেখেন, সালমা বেগমের মরদেহ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে আছে আর দুই সন্তান খাটের ওপর পড়ে আছে।

আরও জানা গেছে, প্রায় ৭ বছর আগে সালমা বেগমের স্বামী ওলি মিয়া ৮ লাখ টাকা ঋণ করে সৌদি আরব যায়। সেই ঋণের ক্রমবর্ধমান চাপ সইতে না পেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মুন্সিগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দুই শিশু সন্তানসহ মায়ের লাশ উদ্ধার করে। এখন লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি। ঋণের চাপে দুই শিশু সন্তানসহ মা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে বলেও জানান তিনি।

সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, সায়মা বেগম তার স্বামীকে বিদেশ পাঠানোর সময় বিভিন্ন এনজিও থেকে আট লাখ টাকা ঋণ নেন। ঋণের চাপে দুই সন্তানকে বিষ পানে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ঋণের চাপে দুই শিশুকে হত্যা, মায়ের করুণ পরিণতি

Update Time : ০৪:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি

ঋণ করে স্বামীকে বিদেশ পাঠান। ধীরে ধীরে সেই ঋণ বিশাল আকার ধারণ করে। নিয়মিত ঋণ পরিশোধে বিভিন্ন এনজিওর চাপ সহ্য করতে না পেরে দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর এক মা আত্মহত্যা করেছেন। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে কেয়াইন ইউনিয়নের উত্তর ইসলামপুর গ্রামে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ধারণা, প্রথমে দুই সন্তানকে বিষপানে মৃত্যু নিশ্চিত করেন মা। পরে মা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বসতঘর থেকে মা ও দুই শিশু সন্তানের লাশ উদ্ধার করে।

মৃতরা হলেন মা সালমা বেগম (৩৩) ও তার কন্যাসন্তান ছাইমুনা (১১) এবং পুত্র সন্তান তাওহীদ (৭)।

স্থানীয় ও নিহতের স্বজনরা জানান, সালমা বেগম বিভিন্ন এনজিও থেকে সুদে টাকা নিয়ে ঋণগ্রস্ত ছিল। ওই ঋণের কিস্তির টাকা নিতে রোববার সকাল ৯ টার দিকে এনজিও’র দুইজন লোক বাড়িতে এসেছিল। তারা ঘরের দরজা বন্ধ দেখে চলে যায়। তারা চলে যাওয়ার পর প্রতিবেশিরা জানালা দিয়ে দেখেন, সালমা বেগমের মরদেহ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে আছে আর দুই সন্তান খাটের ওপর পড়ে আছে।

আরও জানা গেছে, প্রায় ৭ বছর আগে সালমা বেগমের স্বামী ওলি মিয়া ৮ লাখ টাকা ঋণ করে সৌদি আরব যায়। সেই ঋণের ক্রমবর্ধমান চাপ সইতে না পেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মুন্সিগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দুই শিশু সন্তানসহ মায়ের লাশ উদ্ধার করে। এখন লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি। ঋণের চাপে দুই শিশু সন্তানসহ মা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে বলেও জানান তিনি।

সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, সায়মা বেগম তার স্বামীকে বিদেশ পাঠানোর সময় বিভিন্ন এনজিও থেকে আট লাখ টাকা ঋণ নেন। ঋণের চাপে দুই সন্তানকে বিষ পানে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।