ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত ঘিরে,পর্যটকে মুখরিত সমুদ্র সৈকত

  • Update Time : ০৩:৩৩:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / 87

অন্তর দে বিশাল,কক্সবাজার :-

একদিকে চলছে পর্যটনের ভর মৌসুম, অন্যদিকে বসন্ত, ভালবাসা এবং একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনকে কেন্দ্র করে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে নেমেছে পর্যটকদের ঢল।
মুখরিত হয়ে ওঠেছে সমুদ্র কিনারা। পর্যটক আর প্রেমিক প্রেমিকারা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সীমাবদ্ধ না রেখে তা ছড়িয়ে দিয়েছে ইনানী পাথুরে বীচ, হিমছড়ির অপরুপ ঝর্ণা, দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, আদিনাথ মন্দির ও রামুর দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধ মন্দিরের অপরুপ সৌন্দর্য্যের মাঝে।

পুরো কক্সবাজার এখন পর্যটকে ভরপুর। চারিদিকে শুধুই পর্যটক। সি-বিচের জলরাশি ও ঢেউয়ের নৃত্য, প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ইতোমধ্যে কক্সবাজারে পর্যটকে ভরে গেছে।

সাগরপাড়ের আবাসিক হোটেল ছাড়িয়ে শহরতলীর আবাসিক হোটেলগুলোও বুকিং হয়ে গেছে। পিকনিক স্পট ও দর্শনীয় স্থানসমূহে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে। পর্যটন নগরীতে ছোট-বড় শতাধিক হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস এবং কটেজ রয়েছে। এসব স্থানে প্রতিদিন দেড় লক্ষাধিক মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এসব হোটেলে প্রায় ৭০ শতাংশ রুমই বুকিং।

কেবল দেশি পর্যটক নয়, বিদেশি পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত নগরী কক্সবাজার।

এদিকে পর্যটকদের ভ্রমণে যাতে কোন প্রকার অসুবিধার সৃষ্টি না হয় সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা। হোটেল মালিকরাও এবারের মৌসুমে আগের চেয়ে অনেকটা সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছে।

আর এ ফাঁকে পর্যটকে ভরে গেছে সৈকত নগরী কক্সবাজার। তাছাড়া সৈকতে গোসল তথা গা ভেজাতে গিয়ে পর্যটকরা যেন প্রাণহানির শিকার না হয়-সে বিষয়ে প্রস্তুত রয়েছে লাইফগার্ড।

ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষে থেকে জানানো হয়, বিশেষ দিবসে যাতে আগত পর্যটকদের কোন ধরণের হয়রানি কিংবা দূর্ঘটনায় কবলে না পড়তে হয়, তার জন্য সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দে সবখানে নিরাপদে ঘুরাফেরা করতে পারছে।

বুধবার দুপুরে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রচুর পর্যটক সাগরে গোসল করছেন। বালুরচরে খেলা করছে ছোট্টমনিরা। দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকও চোখে পড়েছে। বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি পর্যটক সাগর পাড়ে সময় কাটাচ্ছেন। স্বজনদের সাথে নিয়ে ভাগাভাগি করছেন আনন্দ।

এখানে বেড়াতে আসা এক দম্পতি বলেন, ‘সাগরের নীল জলরাশি ও প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য কক্সবাজারে ছুটে আসা। সাথে যুক্ত হয়েছে বসন্ত ও ভালবাসা দিবস। সবমিলিয়ে প্রিয়জনের সাথে সময়টা ভালই কাটছে।

সজীব নামে এক পর্যটক বলেন, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপভোগ করছি প্রিয়জনের সাথে। প্রিয়জনের সাথে সময় কাটাতেই কক্সবাজার ছুটে আসা। শান্ত আকাশ। প্রশান্ত মন। সবকিছু ভাল লাগছে।

আরেক পর্যটক রিয়া মনি বলেন, ‘কক্সবাজার এমন একটি জায়গা যেটা পুরানো হয় না। বার বার আসলে মনে হয় যে আবার নতুন করে এসেছি।

তিনি জানান, সমুদ্র সৈকত তাকে প্রচুর আনন্দ দিয়েছে। কক্সবাজার দেখে খুব ভাল লাগছে। সারা বছর এ আনন্দ বুকে নিয়ে থাকতে চান তিনি।

এদিকে বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে সৈকত এলাকার ব্যবসায়ীদের মাঝেও। বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমনে বেচা-বিক্রিতে সরগরম লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টের বার্মিজ মার্কেটগুলো। ফলে ভাল ব্যবসা হওয়ায় দারুণ খুশি তারা।

সুগন্ধা পয়েন্টে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘এখন প্রতিদিনই প্রচুর পর্যটক কক্সবাজারে আসছে। ফলে বেচা-বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আশা করি এই ২১ শে ফ্রেবুয়ারী পর্যন্ত ভালোই পযর্টক থাকবে ও ভালো বেচা বিক্রি হবে।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির নেতারা জানান, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব উপলক্ষে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। কক্সবাজারের ছোট বড় মাঝারি সব হোটেল মোটেল, কটেজ, রেস্টহাউস ও গেস্ট হাউসগুলো আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। অনেক হোটেল মোটেল আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পর্যন্তও বুকিং হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত ঘিরে,পর্যটকে মুখরিত সমুদ্র সৈকত

Update Time : ০৩:৩৩:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

অন্তর দে বিশাল,কক্সবাজার :-

একদিকে চলছে পর্যটনের ভর মৌসুম, অন্যদিকে বসন্ত, ভালবাসা এবং একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনকে কেন্দ্র করে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে নেমেছে পর্যটকদের ঢল।
মুখরিত হয়ে ওঠেছে সমুদ্র কিনারা। পর্যটক আর প্রেমিক প্রেমিকারা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সীমাবদ্ধ না রেখে তা ছড়িয়ে দিয়েছে ইনানী পাথুরে বীচ, হিমছড়ির অপরুপ ঝর্ণা, দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, আদিনাথ মন্দির ও রামুর দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধ মন্দিরের অপরুপ সৌন্দর্য্যের মাঝে।

পুরো কক্সবাজার এখন পর্যটকে ভরপুর। চারিদিকে শুধুই পর্যটক। সি-বিচের জলরাশি ও ঢেউয়ের নৃত্য, প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ইতোমধ্যে কক্সবাজারে পর্যটকে ভরে গেছে।

সাগরপাড়ের আবাসিক হোটেল ছাড়িয়ে শহরতলীর আবাসিক হোটেলগুলোও বুকিং হয়ে গেছে। পিকনিক স্পট ও দর্শনীয় স্থানসমূহে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে। পর্যটন নগরীতে ছোট-বড় শতাধিক হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস এবং কটেজ রয়েছে। এসব স্থানে প্রতিদিন দেড় লক্ষাধিক মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এসব হোটেলে প্রায় ৭০ শতাংশ রুমই বুকিং।

কেবল দেশি পর্যটক নয়, বিদেশি পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত নগরী কক্সবাজার।

এদিকে পর্যটকদের ভ্রমণে যাতে কোন প্রকার অসুবিধার সৃষ্টি না হয় সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা। হোটেল মালিকরাও এবারের মৌসুমে আগের চেয়ে অনেকটা সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছে।

আর এ ফাঁকে পর্যটকে ভরে গেছে সৈকত নগরী কক্সবাজার। তাছাড়া সৈকতে গোসল তথা গা ভেজাতে গিয়ে পর্যটকরা যেন প্রাণহানির শিকার না হয়-সে বিষয়ে প্রস্তুত রয়েছে লাইফগার্ড।

ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষে থেকে জানানো হয়, বিশেষ দিবসে যাতে আগত পর্যটকদের কোন ধরণের হয়রানি কিংবা দূর্ঘটনায় কবলে না পড়তে হয়, তার জন্য সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দে সবখানে নিরাপদে ঘুরাফেরা করতে পারছে।

বুধবার দুপুরে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রচুর পর্যটক সাগরে গোসল করছেন। বালুরচরে খেলা করছে ছোট্টমনিরা। দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকও চোখে পড়েছে। বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি পর্যটক সাগর পাড়ে সময় কাটাচ্ছেন। স্বজনদের সাথে নিয়ে ভাগাভাগি করছেন আনন্দ।

এখানে বেড়াতে আসা এক দম্পতি বলেন, ‘সাগরের নীল জলরাশি ও প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য কক্সবাজারে ছুটে আসা। সাথে যুক্ত হয়েছে বসন্ত ও ভালবাসা দিবস। সবমিলিয়ে প্রিয়জনের সাথে সময়টা ভালই কাটছে।

সজীব নামে এক পর্যটক বলেন, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপভোগ করছি প্রিয়জনের সাথে। প্রিয়জনের সাথে সময় কাটাতেই কক্সবাজার ছুটে আসা। শান্ত আকাশ। প্রশান্ত মন। সবকিছু ভাল লাগছে।

আরেক পর্যটক রিয়া মনি বলেন, ‘কক্সবাজার এমন একটি জায়গা যেটা পুরানো হয় না। বার বার আসলে মনে হয় যে আবার নতুন করে এসেছি।

তিনি জানান, সমুদ্র সৈকত তাকে প্রচুর আনন্দ দিয়েছে। কক্সবাজার দেখে খুব ভাল লাগছে। সারা বছর এ আনন্দ বুকে নিয়ে থাকতে চান তিনি।

এদিকে বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে সৈকত এলাকার ব্যবসায়ীদের মাঝেও। বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমনে বেচা-বিক্রিতে সরগরম লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টের বার্মিজ মার্কেটগুলো। ফলে ভাল ব্যবসা হওয়ায় দারুণ খুশি তারা।

সুগন্ধা পয়েন্টে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘এখন প্রতিদিনই প্রচুর পর্যটক কক্সবাজারে আসছে। ফলে বেচা-বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আশা করি এই ২১ শে ফ্রেবুয়ারী পর্যন্ত ভালোই পযর্টক থাকবে ও ভালো বেচা বিক্রি হবে।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির নেতারা জানান, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব উপলক্ষে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। কক্সবাজারের ছোট বড় মাঝারি সব হোটেল মোটেল, কটেজ, রেস্টহাউস ও গেস্ট হাউসগুলো আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। অনেক হোটেল মোটেল আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পর্যন্তও বুকিং হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।