কুমিল্লার হযরত পাড়ায় ইমাম সাহেবের চিকিৎসার সহযোগিতা চাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১০
- Update Time : ০১:১৭:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / 67
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লা নগরীর হযরত পাড়া গাউছিয়া জামে মসজিদে ইমাম ও খতিবের চিকিৎসার জন্য কমিটি ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মসজিদের ভেতরে হট্টগোল ও মসজিদের বাহিরে দা সেনি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষে এলাকায় থমথমে অবস্থান বিরাজ করছে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর নগরীর হযরত পাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর। খবর পেয়ে চকবাজার ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে ১০ জন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গুরুতর আহত একজনকে কুমিল্লা কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ১৮ নং ওয়ার্ড হযরত পাড়া গাউছিয়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা কাওসার আহমেদ (৫৫) এর হার্টে রিং পড়ানোর জন্য চিকিৎসক বললে তার নিকট এত ব্যয়বহুল টাকা একার পক্ষে বহন করা সম্ভব না হওয়াই তিনি মসজিদ কমিটির সহ-সাধারন সম্পাদক মৃত আলেক হোসেনের ছেলে জামাল আহমেদসহ অন্যান্য কমিটি সদস্যদের সহযোগিতা চান ইমাম। শুক্রবার জুমার নামাজে মুসল্লীদের সমাগম ঘটার কারনে খোতবার পরে মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে সকলের নিকট ইমাম সাহেবের জন্য সহযোগিতা চাইলে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি মুহুরি হাবিবুর রহমান সহযোগিতা চাওয়ার কারনে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে মসজিদে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। তখন স্থানীয় কাউন্সিলর এডভোকেট শওকত আকবর উভয় পক্ষকে বুঝিয়ে জুমার নামাজ পড়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে। নামাজের পর পরই বাহিরে এ ঘটনার টের পেয়ে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি হাবিবুর রহমানের ছেলে আশিকুর রহমান (৩২), রিফাত (২৮) দা সেনি দিয়ে হামলা করলে মসজিদের মুসল্লিরা আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি করে। পরে নিয়াজ (৫৫) নামে এক মুসল্লির হাতে দা দিয়ে আঘাত করলে হাত কেটে যায়। পরে ওই এলাকার মৃত মুসলিম মিয়ার ছেলে আরিফ (৩৫), রফিক মিয়ার ছেলে শাফিন, বাবুল মিয়ার ছেলে শাকিলরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মসজিদ কমিটির সহ-সেক্রেটারি জামালের বাড়ির দরজা, জানালা ভেঙে আলমারির আসবাবপত্র লুটপাট করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও একটি ধারালো সেনি উদ্ধার করে।
কাউন্সিলর শওকত আকবর বলেন, মসজিদের ইমামের সহযোগিতা চাওয়া নিয়ে এ সংঘর্ষ। সংঘর্ষে লিপ্ত হলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। কয়েকটি বাড়িঘরও ভাঙচুর-লুটপাট করা হয়। ঘটনাটি দুঃখজনক।
আহত নিয়াজের স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, ইমাম সাহেবের অসুস্থতার বিষয় নিয়ে মসজিদে কথা কাটাকাটি হলে নামাজের পর মুহুরী হাবিবের নেতৃত্বে তার ২ ছেলে অন্যান্য এলাকার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অনেক মুসল্লীদের উপর হামলা করে। এতে আমার স্বামীর হাত ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলে। আমি প্রশাসনের কাছে হামলাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে হাবিবের মুঠোফোনে কল করেও পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইমাম সাহেবের বিষয় নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।