রাণীনগরের গোনা পৌষ মেলায় বসতি দোকান থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

  • Update Time : ০৯:৫১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩
  • / 173

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগরে ঐতিহ্যবাহী ‘গোনা পৌষ’ মেলায় আগত বসতি বিভিন্ন দোকান থেকে হাজার হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে মেলা কমিটির বিরুদ্ধে। সোমবার সকাল থেকে উপজেলার গোনা বাজারের পাশে মাঠে বিশাল এ পৌষ মেলা বসে। আর মেলায় বিকেলে থেকে শুরু হয় বসতি বিভিন্ন দোকানপাট থেকে মেলা কমিটির খাজনা আদায়ের নামে রশিদ দিয়ে চাঁদা আদায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোনা পৌষ মেলা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একটি মেলা। প্রতি বছরে পৌষ মাসে উপজেলার গোনা বাজারের পাশে মাঠে দুইদিন ব্যাপী এ মেলা হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল থেকে শুরু হয় গোনা পৌষ সংক্রান্তি এ মেলা। মেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ, মিষ্টি, চুড়ি-ফিতা, শিশুদের খেলনা সামগ্রী, নাগরদোলা, গৃহ সামগ্রী সহ হরেক রকমের প্রায় আড়াই শতাধিক দোকানপাট বসেছে।

সরেজমিন মেলা ঘুরে জানা গেছে, মিষ্টি-মিঠাই দোকানে বিকেল থেকে মেলা কমিটির লোকজন খাজনা আদায়ের নামে রশিদ দিয়ে আনুমানিক রাত ৯টা পর্যন্ত বসতি ছোট-বড় দোকান থেকে ৭শ’ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করেছেন। মাছের দোকানপাট থেকে ৩শ’ থেকে শুরু করে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নিয়েছেন। এছাড়া মেলায় বসতি বিভিন্ন ধরনের প্রতিটি দোকান থেকে ৩শ’ টাকা থেকে শুরু করে ৫শ’ টাকা এমনকি বড় দোকান থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, মেলা জমজমাট হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় মেলা কমিটির দোকানপাট থেকে চাঁদা আদায়। গোনা মেলা একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলা কমিটি- মেলার জন্য যে পরিমাণ অর্থ খরচ করেন তার জন্য মেলায় আসা বসতি দোকানপাট থেকে সামান্য কিছু টাকা করে খাজনা নিলে হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু মেলা কমিটির লোকজন দোকানপাট থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে নিজেদের পকেট ভরানোর চেষ্টা করছেন। যা মোটেও উচিত নয়।

মেলায় মিষ্টির দোকানী আমিনুল ইসলাম বলেন, মেলা কমিটির লোকজন খাজনা আদায়ের রশিদ দিয়ে আমার দোকান থেকে এক হাজার টাকা নিয়েছেন।

মাছ ব্যবসায়ী ইয়াকুব বলেন, মেলায় আমি অল্প কিছু মাস নিয়ে এসে দোকান দিয়েছি। মেলা কমিটির লোকজন আমার মাছের দোকান থেকে প্রথমে ৫০০ টাকা খাজনা দাবি করেন। অনেক অনুরোধের পর ৩০০ টাকা নিয়ে গেছে।

কসমেটিকস দোকানী মিঠু বলেন, মেলা কমিটির লোকজন আমার কসমেটিকস দোকান থেকে ১৩শ’ টাকা দাবি করেছে। অল্প কিছু টাকা দিতে চাইলে তারা নেয়নি। খাজনার টাকা পরে দিতে চাইলে তারা চলে যায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোনা পৌষ মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বকুল মোল্লা বলেন, মেলা পরিচালনা করতে কমিটির যে টাকা খরচ হয়, সেই পরিমাণ টাকায় দোকানদারদের কাছ থেকে খাজনা হিসেবে আদায় করা হয়। বাড়তি কোন টাকা আদায় করা হয় না বলেও দাবি করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। মেলায় যদি এরকম ঘটনা হয়ে থাকে- খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


রাণীনগরের গোনা পৌষ মেলায় বসতি দোকান থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

Update Time : ০৯:৫১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগরে ঐতিহ্যবাহী ‘গোনা পৌষ’ মেলায় আগত বসতি বিভিন্ন দোকান থেকে হাজার হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে মেলা কমিটির বিরুদ্ধে। সোমবার সকাল থেকে উপজেলার গোনা বাজারের পাশে মাঠে বিশাল এ পৌষ মেলা বসে। আর মেলায় বিকেলে থেকে শুরু হয় বসতি বিভিন্ন দোকানপাট থেকে মেলা কমিটির খাজনা আদায়ের নামে রশিদ দিয়ে চাঁদা আদায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোনা পৌষ মেলা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একটি মেলা। প্রতি বছরে পৌষ মাসে উপজেলার গোনা বাজারের পাশে মাঠে দুইদিন ব্যাপী এ মেলা হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল থেকে শুরু হয় গোনা পৌষ সংক্রান্তি এ মেলা। মেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ, মিষ্টি, চুড়ি-ফিতা, শিশুদের খেলনা সামগ্রী, নাগরদোলা, গৃহ সামগ্রী সহ হরেক রকমের প্রায় আড়াই শতাধিক দোকানপাট বসেছে।

সরেজমিন মেলা ঘুরে জানা গেছে, মিষ্টি-মিঠাই দোকানে বিকেল থেকে মেলা কমিটির লোকজন খাজনা আদায়ের নামে রশিদ দিয়ে আনুমানিক রাত ৯টা পর্যন্ত বসতি ছোট-বড় দোকান থেকে ৭শ’ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করেছেন। মাছের দোকানপাট থেকে ৩শ’ থেকে শুরু করে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নিয়েছেন। এছাড়া মেলায় বসতি বিভিন্ন ধরনের প্রতিটি দোকান থেকে ৩শ’ টাকা থেকে শুরু করে ৫শ’ টাকা এমনকি বড় দোকান থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, মেলা জমজমাট হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় মেলা কমিটির দোকানপাট থেকে চাঁদা আদায়। গোনা মেলা একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলা কমিটি- মেলার জন্য যে পরিমাণ অর্থ খরচ করেন তার জন্য মেলায় আসা বসতি দোকানপাট থেকে সামান্য কিছু টাকা করে খাজনা নিলে হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু মেলা কমিটির লোকজন দোকানপাট থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে নিজেদের পকেট ভরানোর চেষ্টা করছেন। যা মোটেও উচিত নয়।

মেলায় মিষ্টির দোকানী আমিনুল ইসলাম বলেন, মেলা কমিটির লোকজন খাজনা আদায়ের রশিদ দিয়ে আমার দোকান থেকে এক হাজার টাকা নিয়েছেন।

মাছ ব্যবসায়ী ইয়াকুব বলেন, মেলায় আমি অল্প কিছু মাস নিয়ে এসে দোকান দিয়েছি। মেলা কমিটির লোকজন আমার মাছের দোকান থেকে প্রথমে ৫০০ টাকা খাজনা দাবি করেন। অনেক অনুরোধের পর ৩০০ টাকা নিয়ে গেছে।

কসমেটিকস দোকানী মিঠু বলেন, মেলা কমিটির লোকজন আমার কসমেটিকস দোকান থেকে ১৩শ’ টাকা দাবি করেছে। অল্প কিছু টাকা দিতে চাইলে তারা নেয়নি। খাজনার টাকা পরে দিতে চাইলে তারা চলে যায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোনা পৌষ মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বকুল মোল্লা বলেন, মেলা পরিচালনা করতে কমিটির যে টাকা খরচ হয়, সেই পরিমাণ টাকায় দোকানদারদের কাছ থেকে খাজনা হিসেবে আদায় করা হয়। বাড়তি কোন টাকা আদায় করা হয় না বলেও দাবি করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। মেলায় যদি এরকম ঘটনা হয়ে থাকে- খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।