রক্তে ভেজা একুশে ফেব্রুয়ারি আজ
- Update Time : ১২:১৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
- / 257
নিজস্ব প্রতিনিধি:
আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মাতৃভাষা অধিকার আন্দোলনের ৭০ বছর পূর্ণ হলো এ বছর। কেবল দিবস ধরে নয়, বাঙালির প্রতিদিনের চেতনায় অবিনশ্বর থাকুক একুশ।
রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতি একুশের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।
রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এছাড়াও কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাত ফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হবে।
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
১৯৫২ সালের এদিন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন করছিল। রাষ্ট্রভাষা উর্দু ঘোষণা করা হলে প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে ছাত্র-জনতা। চেতনায় উদ্বুদ্ধ একটি জাতিকে স্তিমিত করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক শহীদ হন।
বাঙালি জাতির জন্য দিনটি যেমন শোক ও বেদনার, তেমনি শক্তিরও। এদিন মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত।
বাংলা ভাষার গবেষকরা বলছেন, বাংলাকে অন্য ভাষার আধিপত্যের বাইরে রাখতে হলে ভাষাকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। কেবল দিবস উদযাপন নয়, বছরজুড়ে বাংলা ও বাঙালিত্বের চেতনা ধারণ করে ধারাবাহিক কাজ করে যেতে হবে। অন্য ভাষা শিখতে হবে ঠিকই, কিন্তু সবার আগে শুদ্ধভাবে নিজ ভাষা জানতে হবে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, যতদিন পর্যন্ত রাষ্ট্রভাষাকে কর্মের জগতে জরুরি হিসেবে যুক্ত না করা যাবে ততদিন সর্বস্তরে বাংলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। মনে রাখা দরকার, মাতৃভাষায় বুৎপত্তি না করলে কিছুতেই অন্য ভাষায় বুৎপত্তি লাভ করতে পারবে না। বাংলা প্রতিষ্ঠায় ইতোমধ্যে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সার্বিকভাবে সামাজিক মর্যাদার জায়গায় নিতে কেবল ফেব্রুয়ারি-কেন্দ্রিক আলোচনা করলে হবে না, চেতনায়ও একুশকে ধারণ করতে হবে।
দিবসের কর্মসূচি
এবারও একুশে ফেব্রুয়ারিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে উদযাপনের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর বিশেষ অবদানের বিষয়টি উপস্থাপন করার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ২১শে ফেব্রুয়ারি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনসমূহে সঠিক নিয়মে, সঠিক রঙ ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোও যথাযথ কর্মসূচি নেবে।