এইচএসসির ফলে দেশসেরা যশোর বোর্ড
- Update Time : ০৫:৫৮:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
- / 181
নিজস্ব প্রতিবেদক:
এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে যশোর বোর্ড দেশসেরা অবস্থানে রয়েছে। এইচএসসি-২০২১ এর ফলাফলে এই বোর্ডের পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন শিক্ষার্থী। ২০২০ সালের এইচএসসির (পরীক্ষা হয়নি) তুলনায় এই জিপিএ-৫ প্রাপ্তি প্রায় দ্বিগুণ। গতবছর প্রকাশিত ওই ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ৮৯২ জন। যদিও করোনার কারণে পরীক্ষা না হওয়ায় শতভাগ শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল।
রোববার দুপুরে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র ফলাফল প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সুনির্দিষ্ট করে ভালোভাবে বেশি সময় ধরে প্রস্তুতি নিতে পেরেছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে এসএসসি ও জেএসসির ফলাফল। এছাড়া একাধিক প্রশ্ন থেকে অল্প প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কারণেও এমন ভালো ফল অর্জন সম্ভব হয়েছে।
যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৬৪ হাজার ১০৬ জন এবং ছাত্রী ৬১ হাজার ৬৩৫ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন। বহিষ্কৃত হয়েছে ৩ জন।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। কোভিড-১৯ জনিত বৈরী পরিস্থিতির কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ‘এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রণয়ন সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটি’র সুপারিশ অনুসারে এবং বোর্ড কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এই ফলাফলে ২০২০ সালে যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ২১ হাজার ৫২৮ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব না হওয়ায় ঘোষণা অনুযায়ী এদের সবাইকে উত্তীর্ণ করা হয়। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৬১ হাজার ৭৬১ জন এবং ছাত্রী ৫৯ হাজার ৭৬৭ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ৮৯২ জন।
এর আগে ২০১৯ সালে যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার ২২৯ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৯৫ হাজার ৪৯৫ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৪৭ হাজার ৪৪২ জন এবং ছাত্রী ৪৮ হাজার ৫৩ জন। পাসের হার ছিল ৭৫ দশমিক ৬৫। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ৩১২ জন। বহিষ্কৃত হয়েছিল ৬০জন।
এবারের ফলাফলের চিত্র তুলে ধরে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, করোনা মহামারির কারণে প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীদের তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবার পরীক্ষাও নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনেক সময় ধরে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে উত্তর প্রদানের জন্য অনেক অপশন ছিল। একইসাথে অ্যাসাইনমেন্টের জন্যও শিক্ষার্থীর ওপরে চাপ ছিল। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা যেমন পড়াশোনার মধ্যে ছিল; তেমনি অভিভাবকরাও ছেলেমেয়েদের ওপর বাড়তি নজর রেখেছেন।
এবার কেউ পাস করেনি যশোর শিক্ষাবোর্ডে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। শত ভাগ পাস করেছে ১১৬টি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীরা। পাসের হারে এগিয়ে আছে ছাত্রীরা। ২০ হাজার ৮৭৮ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রী ১২ হাজার ১৭১ জন ও ছাত্র ৮ হাজার ৭০৭ জন।
এদিকে এবার যশোর বোর্ডের আওতাধীন ১০ জেলার মধ্যে পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে সাতক্ষীরা জেলা। এ জেলায় পাসের হার ৯৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অন্যান্য জেলার মধ্যে পাসের হার খুলনায় ৯৮.৭১, বাগেরহাটে ৯৭.৪৯, কুষ্টিয়ায় ৯৭.৬০, চুয়াডাঙ্গায় ৯৭.৬৮, মেহেরপুরে ৯৫.৬১, যশোরে ৯৮.৩৫, নড়াইলে ৯৮.০৯, ঝিনাইদহে ৯৮.১৫ ও মাগুরায় ৯৭.৭২ শতাংশ।