নতুন টাকা বেচাকেনা কি জায়েজ?

  • Update Time : ০৫:৪১:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪
  • / 71

 

কয়েক দিন পরেই পালিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ সময় নতুন পোশাকের পাশাপাশি নতুন টাকাও সংগ্রহ করেন অনেকে।

ঈদ সালামি দেওয়া ছাড়াও নতুন নোটের মাধ্যমে জাকাত এবং ফিতরাও বিতরণ করেন অনেকে। ফলে চাহিদা বাড়ায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে নতুন নোট বেচাকেনার অস্থায়ী দোকান। সময় যত গড়াচ্ছে, নতুন নোটের ব্যবসা তত জমে উঠছে।

ঈদকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবছরই নতুন নোট বাজারে ছাড়ে। তবে নতুন নোট সংগ্রহের জন্য অনেক সময় ব্যাংকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার অনেকের পক্ষে অফিস সময়ের মধ্যে নতুন নোট সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। ফলে তারা সুবিধাজনক সময়ে ঝামেলাহীনভাবে নতুন নোট সংগ্রহ করতে চান।

মূলত এ শ্রেণির গ্রাহকেরাই অস্থায়ী দোকানগুলোর নতুন নোটের ক্রেতা। তবে এসব দোকান থেকে নোটভেদে প্রতি বান্ডিলে (১০০টি নোট) তাদের ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি খরচ দিতে হচ্ছে।

ইসলামে এক প্রকারের দুটি জিনিস কমবেশি ক্রয়-বিক্রয় করা নাজায়েজ। কারন এ রকম লেনদেনে অতিরিক্ত অংশ সুদ হয়ে যায়। তাই নতুন টাকার এ রকম কেনাবেচা নাজায়েজ।

কাগজের নোট যেহেতু পণ্য নয়, ইসলামে এই ব্যবসার অনুমোদন নেই। এখানে অতিরিক্ত অংশটি বা লভ্যাংশটি সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (আদদুররুল মুখতার: ৫/১৭১-১৭২; বুহুসুন ফি কাজায়া ফিকহিয়্যা: ১/১৬৩)

একই দেশের মুদ্রা কম-বেশি করে বিক্রি করলে ওই ক্রয়-বিক্রয় জায়েজ হবে না। (হিদায়া, কিতাবুল বুয়ু, বাবুর রিবা: ০৩/৮৫; মুসতাদরাক আলাস সাহিহাইন: ০২/৬৫-৬৬; শারহু মাআনিল আসার: ৫৫৫৪; সুনান দারু কুতনি: ৩০৬০)

তবে, ছেঁড়া-ফাটা টাকা দিয়ে ভালো টাকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অপারগ অবস্থায় (যেমন ব্যাংক বন্ধ, টাকাও দরকার ইত্যাদি) বদলকারীর পরিশ্রম ও ডাক খরচ বাবদ কিছু টাকা বেশি নেওয়া যেতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে, ছলনার আশ্রয় ছাড়া স্পষ্টভাবে ‘বাবত’ উল্লেখ থাকতে হবে।

একেবারে অপারগতার ক্ষেত্রে নতুন টাকা সংগ্রহ করার পরিশ্রম বাবদ কিছু টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। শর্ত হলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দিতে হবে যে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হচ্ছে নতুন টাকা সংগ্রহের পারিশ্রমিক হিসেবে, নতুন টাকার মূল্য হিসেবে নয়। কিন্তু একান্ত প্রয়োজন ছাড়া এ রকম লেনদেন থেকেও বিরত থাকা উচিত।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


নতুন টাকা বেচাকেনা কি জায়েজ?

Update Time : ০৫:৪১:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪

 

কয়েক দিন পরেই পালিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ সময় নতুন পোশাকের পাশাপাশি নতুন টাকাও সংগ্রহ করেন অনেকে।

ঈদ সালামি দেওয়া ছাড়াও নতুন নোটের মাধ্যমে জাকাত এবং ফিতরাও বিতরণ করেন অনেকে। ফলে চাহিদা বাড়ায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে নতুন নোট বেচাকেনার অস্থায়ী দোকান। সময় যত গড়াচ্ছে, নতুন নোটের ব্যবসা তত জমে উঠছে।

ঈদকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবছরই নতুন নোট বাজারে ছাড়ে। তবে নতুন নোট সংগ্রহের জন্য অনেক সময় ব্যাংকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার অনেকের পক্ষে অফিস সময়ের মধ্যে নতুন নোট সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। ফলে তারা সুবিধাজনক সময়ে ঝামেলাহীনভাবে নতুন নোট সংগ্রহ করতে চান।

মূলত এ শ্রেণির গ্রাহকেরাই অস্থায়ী দোকানগুলোর নতুন নোটের ক্রেতা। তবে এসব দোকান থেকে নোটভেদে প্রতি বান্ডিলে (১০০টি নোট) তাদের ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি খরচ দিতে হচ্ছে।

ইসলামে এক প্রকারের দুটি জিনিস কমবেশি ক্রয়-বিক্রয় করা নাজায়েজ। কারন এ রকম লেনদেনে অতিরিক্ত অংশ সুদ হয়ে যায়। তাই নতুন টাকার এ রকম কেনাবেচা নাজায়েজ।

কাগজের নোট যেহেতু পণ্য নয়, ইসলামে এই ব্যবসার অনুমোদন নেই। এখানে অতিরিক্ত অংশটি বা লভ্যাংশটি সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (আদদুররুল মুখতার: ৫/১৭১-১৭২; বুহুসুন ফি কাজায়া ফিকহিয়্যা: ১/১৬৩)

একই দেশের মুদ্রা কম-বেশি করে বিক্রি করলে ওই ক্রয়-বিক্রয় জায়েজ হবে না। (হিদায়া, কিতাবুল বুয়ু, বাবুর রিবা: ০৩/৮৫; মুসতাদরাক আলাস সাহিহাইন: ০২/৬৫-৬৬; শারহু মাআনিল আসার: ৫৫৫৪; সুনান দারু কুতনি: ৩০৬০)

তবে, ছেঁড়া-ফাটা টাকা দিয়ে ভালো টাকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অপারগ অবস্থায় (যেমন ব্যাংক বন্ধ, টাকাও দরকার ইত্যাদি) বদলকারীর পরিশ্রম ও ডাক খরচ বাবদ কিছু টাকা বেশি নেওয়া যেতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে, ছলনার আশ্রয় ছাড়া স্পষ্টভাবে ‘বাবত’ উল্লেখ থাকতে হবে।

একেবারে অপারগতার ক্ষেত্রে নতুন টাকা সংগ্রহ করার পরিশ্রম বাবদ কিছু টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। শর্ত হলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দিতে হবে যে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হচ্ছে নতুন টাকা সংগ্রহের পারিশ্রমিক হিসেবে, নতুন টাকার মূল্য হিসেবে নয়। কিন্তু একান্ত প্রয়োজন ছাড়া এ রকম লেনদেন থেকেও বিরত থাকা উচিত।