পঞ্চগড়েরের সুপারির কদর দেশজুড়ে

  • Update Time : ১২:৪২:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মে ২০২১
  • / 184
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
সুপারি উৎপাদন প্রায় কমবেশি সমগ্র দেশে হলেও কয়েকটি জেলায় এটির আবাদ বেশি হয়ে থাকে। এরমধ্যে অন্যতম সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়।
.
জানা গেছে, উত্তরের এ প্রান্তিক জেলায় বাণিজ্যিকভাবে পানের আবাদ শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে। তবে পানের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে সুপারিরও চাষ হচ্ছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র বিক্রি করতে বাড়ির আঙিনায় সুপারির গাছ লাগিয়েছেন অনেকেই। কেউবা জমির সীমানা ঠিক রাখতে লাগিয়েছেন এই গাছ। আবার কেউ শখের বসে সুপারি গাছ লাগিয়ে প্রতি বছর মোটা অংকের টাকা গুনছেন।
.
জেলার সদর, আটোয়ারী, তেঁতুলিয়া ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর সুপারি গাছ চোখে পড়ে। এ গাছ রোপণে তেমন কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন হয় না কোন কিটনাশক কিংবা সেচের। ফলে বিনা পুঁজিতেই সুপারি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয়রা।
.
বিশেষ করে পঞ্চগড়ের সুপারির আকার, স্বাদ ও রং তুলনামূলকভাবে বড় হওয়ায় এ জেলার সুপারি স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, একটি গাছে ৮০ থেকে ১২০ হালি সুপারি ধরে। দাম ভালো পাওয়ায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত সুপারি বাজারে বিক্রি করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন।
.
জেলার সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা বসির আলম জানান, তিনি তার বাড়িতে শখ করে দশটি সুপারির গাছ রোপণ করেন। কম-বেশি দশটি গাছেই সুপারি ধরে। নিজের প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত সুপারি তিনি বাজারে বিক্রি করে ভালো টাকা পান। তাই তিনি তার বাড়ির উঠানসহ আশপাশে সুপারির গাছ নতুন করে লাগিয়েছেন। একই কথা জানান জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাসিন্দা সেলিনা বেগম।
.
তিনি জানান, বাড়িতে কয়েকটি গাছে প্রতি বছর সুপারি ধরে। সুপারি বিক্রির টাকা সংসারের প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। তবে সুপারিতে লাভ দেখে বাণিজ্যিকভাবে সুপারির বাগান করে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখছেন জেলার সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের আমলারহাট এলাকার নতুন উদ্যােক্তা আহসান হাবীব।
.
তিনি বলেন, আমার কয়েকটি পুকুরের পাড়ে ৭ হাজার সুপারির গাছ রোপণ করেছি। গাছে সুপারি আসা শুরু করলে বছরে কয়েক লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করতে পারব। কথা হয় সুপারির পাইকারি ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম রবির সঙ্গে। প্রতি পন সুপারি তিনি স্থানীয়দের কাছ থেকে ২০০-৩৫০ টাকা দরে কেনেন। তারপর সেই সুপারি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান।
.
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান জানান, পঞ্চগড়ে আগে সুপারির চাষ হতো না। তবে এ জেলার মাটি সুপারি চাষের উপযোগী হওয়ায় স্থানীয়রা বাণিজ্যিকভাবে সুপারির চাষ শুরু করেছেন।সুপারির গুনগত মান ও আকারে বড় হওয়ায় এ সুপারির বেশ কদর রয়েছে। তাই নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলাতেও রপ্তানি করছেন অনেকেই।

Please Share This Post in Your Social Media


পঞ্চগড়েরের সুপারির কদর দেশজুড়ে

Update Time : ১২:৪২:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মে ২০২১
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
সুপারি উৎপাদন প্রায় কমবেশি সমগ্র দেশে হলেও কয়েকটি জেলায় এটির আবাদ বেশি হয়ে থাকে। এরমধ্যে অন্যতম সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়।
.
জানা গেছে, উত্তরের এ প্রান্তিক জেলায় বাণিজ্যিকভাবে পানের আবাদ শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে। তবে পানের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে সুপারিরও চাষ হচ্ছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র বিক্রি করতে বাড়ির আঙিনায় সুপারির গাছ লাগিয়েছেন অনেকেই। কেউবা জমির সীমানা ঠিক রাখতে লাগিয়েছেন এই গাছ। আবার কেউ শখের বসে সুপারি গাছ লাগিয়ে প্রতি বছর মোটা অংকের টাকা গুনছেন।
.
জেলার সদর, আটোয়ারী, তেঁতুলিয়া ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর সুপারি গাছ চোখে পড়ে। এ গাছ রোপণে তেমন কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন হয় না কোন কিটনাশক কিংবা সেচের। ফলে বিনা পুঁজিতেই সুপারি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয়রা।
.
বিশেষ করে পঞ্চগড়ের সুপারির আকার, স্বাদ ও রং তুলনামূলকভাবে বড় হওয়ায় এ জেলার সুপারি স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, একটি গাছে ৮০ থেকে ১২০ হালি সুপারি ধরে। দাম ভালো পাওয়ায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত সুপারি বাজারে বিক্রি করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন।
.
জেলার সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা বসির আলম জানান, তিনি তার বাড়িতে শখ করে দশটি সুপারির গাছ রোপণ করেন। কম-বেশি দশটি গাছেই সুপারি ধরে। নিজের প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত সুপারি তিনি বাজারে বিক্রি করে ভালো টাকা পান। তাই তিনি তার বাড়ির উঠানসহ আশপাশে সুপারির গাছ নতুন করে লাগিয়েছেন। একই কথা জানান জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাসিন্দা সেলিনা বেগম।
.
তিনি জানান, বাড়িতে কয়েকটি গাছে প্রতি বছর সুপারি ধরে। সুপারি বিক্রির টাকা সংসারের প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। তবে সুপারিতে লাভ দেখে বাণিজ্যিকভাবে সুপারির বাগান করে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখছেন জেলার সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের আমলারহাট এলাকার নতুন উদ্যােক্তা আহসান হাবীব।
.
তিনি বলেন, আমার কয়েকটি পুকুরের পাড়ে ৭ হাজার সুপারির গাছ রোপণ করেছি। গাছে সুপারি আসা শুরু করলে বছরে কয়েক লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করতে পারব। কথা হয় সুপারির পাইকারি ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম রবির সঙ্গে। প্রতি পন সুপারি তিনি স্থানীয়দের কাছ থেকে ২০০-৩৫০ টাকা দরে কেনেন। তারপর সেই সুপারি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান।
.
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান জানান, পঞ্চগড়ে আগে সুপারির চাষ হতো না। তবে এ জেলার মাটি সুপারি চাষের উপযোগী হওয়ায় স্থানীয়রা বাণিজ্যিকভাবে সুপারির চাষ শুরু করেছেন।সুপারির গুনগত মান ও আকারে বড় হওয়ায় এ সুপারির বেশ কদর রয়েছে। তাই নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলাতেও রপ্তানি করছেন অনেকেই।