ফাঁস করা প্রশ্নে ক্যাডার হওয়া কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশে আইনি নোটিশ

  • Update Time : ০৫:০১:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪
  • / 65

বিসিএসের ফাঁস করা প্রশ্নে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রোববার (১৪ জুলাই) ইমেইল ও ডাকযোগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছাড়াও বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থা ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের সাবেক গাড়িচালক ও অন্যান্য কর্মচারী কর্তৃক গত কয়েক দশক ধরে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের নিকট সরবরাহ করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আবেদ আলীসহ কর্ম কমিশনের এ পর্যন্ত ১৭ জন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী ছাড়াও অন্যান্য অসাধু কর্মচারীরা কীভাবে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে টাকার বিনিময়ে বিতরণ করে প্রত্যেকে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, তার বিবরণ দিয়েছেন। এমনকি পুলিশ গ্রেপ্তার আবেদ আলী ও কর্ম কমিশনের অন্যান্য কর্মচারীদের কাছ থেকে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়ন করেছে।

নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষা হচ্ছে বিসিএস। লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীদের লিখিত-মৌখিক বিভিন্ন স্তরে নিবিড়ভাবে যাচাই-বাছাই করে একজন যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেয়া হয়। আর এই পুরো প্রক্রিয়ার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন। কর্ম কমিশন পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও এটি পরীক্ষা কেন্দ্রে সরবরাহ করার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কর্ম কমিশনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কারণে বিসিএস পরীক্ষা প্রশ্নপত্র নিয়মিত ফাঁস হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন অযোগ্য এবং অদক্ষ ব্যক্তিরা প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ লাভের কারণে দেশে দুর্নীতি ও অনিয়ম বাড়ছে, একইসঙ্গে যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীর অভাবে সাধারণ জনগণ প্রজাতন্ত্রের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই ফাঁসকৃত প্রশ্নে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন সরকারি পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতারক কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে নোটিশে।

নোটিশে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিসিএস পরীক্ষায় প্রতারণার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগপ্রাপ্ত বিসিএস কর্মকর্তাদের নাম, ঠিকানা, বর্তমান পদবী উল্লেখপূর্বক তালিকা প্রণয়ন করে কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও নোটিশে এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি এ পর্যন্ত বেতন-ভাতাদিসহ যাবতীয় গৃহীত আর্থিক সুবিধা ফেরত নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধও জানানো হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ফাঁস করা প্রশ্নে ক্যাডার হওয়া কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশে আইনি নোটিশ

Update Time : ০৫:০১:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪

বিসিএসের ফাঁস করা প্রশ্নে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রোববার (১৪ জুলাই) ইমেইল ও ডাকযোগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছাড়াও বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থা ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের সাবেক গাড়িচালক ও অন্যান্য কর্মচারী কর্তৃক গত কয়েক দশক ধরে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের নিকট সরবরাহ করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আবেদ আলীসহ কর্ম কমিশনের এ পর্যন্ত ১৭ জন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী ছাড়াও অন্যান্য অসাধু কর্মচারীরা কীভাবে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে টাকার বিনিময়ে বিতরণ করে প্রত্যেকে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, তার বিবরণ দিয়েছেন। এমনকি পুলিশ গ্রেপ্তার আবেদ আলী ও কর্ম কমিশনের অন্যান্য কর্মচারীদের কাছ থেকে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়ন করেছে।

নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষা হচ্ছে বিসিএস। লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীদের লিখিত-মৌখিক বিভিন্ন স্তরে নিবিড়ভাবে যাচাই-বাছাই করে একজন যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেয়া হয়। আর এই পুরো প্রক্রিয়ার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন। কর্ম কমিশন পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও এটি পরীক্ষা কেন্দ্রে সরবরাহ করার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কর্ম কমিশনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কারণে বিসিএস পরীক্ষা প্রশ্নপত্র নিয়মিত ফাঁস হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন অযোগ্য এবং অদক্ষ ব্যক্তিরা প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ লাভের কারণে দেশে দুর্নীতি ও অনিয়ম বাড়ছে, একইসঙ্গে যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীর অভাবে সাধারণ জনগণ প্রজাতন্ত্রের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই ফাঁসকৃত প্রশ্নে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন সরকারি পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতারক কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে নোটিশে।

নোটিশে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিসিএস পরীক্ষায় প্রতারণার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগপ্রাপ্ত বিসিএস কর্মকর্তাদের নাম, ঠিকানা, বর্তমান পদবী উল্লেখপূর্বক তালিকা প্রণয়ন করে কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও নোটিশে এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি এ পর্যন্ত বেতন-ভাতাদিসহ যাবতীয় গৃহীত আর্থিক সুবিধা ফেরত নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধও জানানো হয়েছে।