নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশনের এমডিকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

  • Update Time : ০৯:৫০:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 57

নিজস্ব প্রতিবেদক

নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আবসার উদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র জনতা মঞ্চ।

রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানবন্ধন থেকে ভারতীয় দালাল খুনি হাসিনার অনুসারি কাজী আবসার উদ্দিন আহমেদকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই কাজী আবসার উদ্দিন আহমেদ রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রর নির্মাণের সময় ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। তার আশ্রয় প্রশ্রয়ে ভারতীয় কোম্পানি পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে কেন্দ্রটি নির্মাণে করেছে। রামপাল ঠিক মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে না। কিন্তু ঠিকই পূর্ণমাত্রায় কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে করে কেন্দ্রটি প্রতিদিন অন্তত তিন কোটি ৪০ লাখ টাকার মতো বেশি নিয়ে যাচ্ছে। চুক্তির পুরো সময়ে যার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২৪ হাজার কোটি টাকায়।

বক্তারা আরও বলেন, রামপাল কেবল সুন্দরবনেরই ক্ষতি করেনি। বরং কেন্দ্রটি বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেবে। আবসার উদ্দিন ভারতীয় স্বার্থ দেখায় তাকে ভারতে গেলে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। কি করে দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী মন্ত্র বা পদস্থ কোন ব্যক্তি না হয়ে কেবলমাত্র একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তাকে এই সংবর্ধনা দেয়া হলো।

তারা বলেন, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার একমাস আগে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের বাসায় আবসার স্বপরিবারে দাওয়াত খেয়ে এসেছেন। আবসারকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। তিনি ভারতীয় স্বার্থ দেখতে কি পরিমান অর্থ নিয়েছেন এতে সহজেই বোঝা যাবে।

মানববন্ধনে সংগঠনের সদস্য সচিব ডি কে সোলায়মান বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতা মঞ্চ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, সুন্দরবনের পাশে পরিবেশ বিধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় ক্ষতির প্রধান কারিগর কাজী আবসার উদ্দিন এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সময় ভারতীয় কোম্পানিকে একপাক্ষিক সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশকে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে ফেলেছেন। পুরানো ও অকার্যকর যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে কেন্দ্রটি নির্মাণের সুযোগ তিনি ভারতীয় কোম্পানি ভেল-কে দিয়েছেন, যার ফলে এই কেন্দ্রটি এখন দেশের কাঁধে একটি বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সোলায়মান বলেন, আমরা কাজী আবসার উদ্দিনের পান্থপথস্থ অফিসের নিচে প্রতিবাদী মানববন্ধন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সামনে কাজী আবসারের উপর তদন্তের দাবীতে প্রতিবাদী মানববন্ধন করব।

মানববন্ধনে দাবি করা হয়, কাজী আবসার উদ্দিনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে তার দুর্নীতির বিচার নিশ্চিত করতে হবে; রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে; পরিবেশ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি রোধে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে; এবং দেশীয় সম্পদ রক্ষায় জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী সব প্রকল্প পর্যালোচনা করতে হবে।

বক্তরা বলেন, সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি কাজী আবসার উদ্দিনসহ রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় না আনা হয়, তবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতা মঙ্গ জনগণকে সাথে নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

এসময় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক জাকির সুমন, যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়ারিফুল ইসলাম নাসির প্রমুখ

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশনের এমডিকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

Update Time : ০৯:৫০:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আবসার উদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র জনতা মঞ্চ।

রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানবন্ধন থেকে ভারতীয় দালাল খুনি হাসিনার অনুসারি কাজী আবসার উদ্দিন আহমেদকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই কাজী আবসার উদ্দিন আহমেদ রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রর নির্মাণের সময় ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। তার আশ্রয় প্রশ্রয়ে ভারতীয় কোম্পানি পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে কেন্দ্রটি নির্মাণে করেছে। রামপাল ঠিক মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে না। কিন্তু ঠিকই পূর্ণমাত্রায় কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে করে কেন্দ্রটি প্রতিদিন অন্তত তিন কোটি ৪০ লাখ টাকার মতো বেশি নিয়ে যাচ্ছে। চুক্তির পুরো সময়ে যার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২৪ হাজার কোটি টাকায়।

বক্তারা আরও বলেন, রামপাল কেবল সুন্দরবনেরই ক্ষতি করেনি। বরং কেন্দ্রটি বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেবে। আবসার উদ্দিন ভারতীয় স্বার্থ দেখায় তাকে ভারতে গেলে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। কি করে দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী মন্ত্র বা পদস্থ কোন ব্যক্তি না হয়ে কেবলমাত্র একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তাকে এই সংবর্ধনা দেয়া হলো।

তারা বলেন, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার একমাস আগে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের বাসায় আবসার স্বপরিবারে দাওয়াত খেয়ে এসেছেন। আবসারকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। তিনি ভারতীয় স্বার্থ দেখতে কি পরিমান অর্থ নিয়েছেন এতে সহজেই বোঝা যাবে।

মানববন্ধনে সংগঠনের সদস্য সচিব ডি কে সোলায়মান বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতা মঞ্চ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, সুন্দরবনের পাশে পরিবেশ বিধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় ক্ষতির প্রধান কারিগর কাজী আবসার উদ্দিন এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সময় ভারতীয় কোম্পানিকে একপাক্ষিক সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশকে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে ফেলেছেন। পুরানো ও অকার্যকর যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে কেন্দ্রটি নির্মাণের সুযোগ তিনি ভারতীয় কোম্পানি ভেল-কে দিয়েছেন, যার ফলে এই কেন্দ্রটি এখন দেশের কাঁধে একটি বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সোলায়মান বলেন, আমরা কাজী আবসার উদ্দিনের পান্থপথস্থ অফিসের নিচে প্রতিবাদী মানববন্ধন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সামনে কাজী আবসারের উপর তদন্তের দাবীতে প্রতিবাদী মানববন্ধন করব।

মানববন্ধনে দাবি করা হয়, কাজী আবসার উদ্দিনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে তার দুর্নীতির বিচার নিশ্চিত করতে হবে; রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে; পরিবেশ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি রোধে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে; এবং দেশীয় সম্পদ রক্ষায় জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী সব প্রকল্প পর্যালোচনা করতে হবে।

বক্তরা বলেন, সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি কাজী আবসার উদ্দিনসহ রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় না আনা হয়, তবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতা মঙ্গ জনগণকে সাথে নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

এসময় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক জাকির সুমন, যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়ারিফুল ইসলাম নাসির প্রমুখ