জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন ছাড়া দেশ থেকে বৈষম্য দূর হবে না

  • Update Time : ০১:৪৩:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • / 1

জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে গেছে। তবে জালিম পালিয়ে গেলেও জুলুম পালায়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদের সরকার দেখেছে। এসব সরকার মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি। মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করে সুফল পাওয়ার আশায়। বিগত আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা সত্যিকার অর্থে মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, মানুষ মুক্ত আকাশ ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার পেয়েছে। আগে যেসব অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল, সেসব অধিকার ফিরে পেয়েছে। কিন্তু এখনো অন্যায় প্রতিরোধ করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি। জালেম পালিয়েছে কিন্তু জুলুম পালায়নি। জুলুমের অত্যাচারে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় এখনো কষ্ট পাচ্ছে।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইসস্টিটিউটে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় এ নেতা।

মুজিবুর রহমান বলেন, আজকে দেশ একটি সংকটের মধ্য চলছে। এখানে রাষ্ট্রপতি কে হবেন এটা বড় প্রশ্ন নয়। সংকট দূর করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ১৮ কোটি মানুষের অর্জিত স্বাধীনতা কেউ যাতে আবার কেড়ে নিতে পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের ইসলামের পতাকাবাহী একমাত্র শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। এই সংগঠন খেটে খাওয়া মানুষদের আলোর পথ দেখায়। অন্ধকার থেকে দূরে রাখে। মানুষদের শান্তির পথের সন্ধান দেয়। আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন ছাড়া দেশ থেকে বৈষম্য দূর হবে না। বৈষম্য দূর করার জন্য ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে শ্রমজীবী মানুষরা সুখ-শান্তি ফিরে পাবেন।

সভায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‌‘শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দেশের প্রচলিত শ্রমিক সংগঠন থেকে ব্যতিক্রম সংগঠন। দেশে বহু শ্রমিক সংগঠন আছে। যারা এদেশে মানবরচিত মতবাদ, সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ, ধর্মরিপেক্ষতা ও পশ্চিমা সভ্যতা-বিধিবিধানের ভিত্তিতে রাজনীতি করতেন, তারাই এদেশে প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তোলেন। তারা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন জুটমিল, কলকারখানায় বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলেন। যাদের টার্গেট ছিল এদেশ থেকে ইসলামকে উৎখাত করে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা। স্বল্প শিক্ষিত মানুষদের ভুল বুঝিয়ে সমাজতন্ত্রের আদলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা উদগ্রীব ছিলেন।’

তিনি বলেন, সমাজতান্ত্রিক কমিউনিস্টদের অপতৎপরতা রুখে দিতে এদেশের ইসলাম প্রিয় মুরুব্বিরা ১৯৬৮ সালে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করেন।
এই ধ্বংস জোয়ারের বিরুদ্ধে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রুখে দাঁড়ায়। শ্রমিক কল্যাণ শ্রমিকদের বোঝাতে সক্ষম হয় কমিউনিস্টরা তাদের ভুলপথে পরিচালিত করছেন। শ্রমিকদের মুক্তির জন্য ইসলামি শ্রমনীতির বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এদেশে একদল আদর্শ মানুষ তৈরি করতে চায়, যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন কিন্তু সত্যের পক্ষে থাকবে আপসহীন। আমরা আর কোনো চোরদের জন্য এই দেশের ভূমি ছেড়ে দেবো না।

Please Share This Post in Your Social Media


জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন ছাড়া দেশ থেকে বৈষম্য দূর হবে না

Update Time : ০১:৪৩:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে গেছে। তবে জালিম পালিয়ে গেলেও জুলুম পালায়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদের সরকার দেখেছে। এসব সরকার মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি। মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করে সুফল পাওয়ার আশায়। বিগত আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা সত্যিকার অর্থে মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, মানুষ মুক্ত আকাশ ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার পেয়েছে। আগে যেসব অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল, সেসব অধিকার ফিরে পেয়েছে। কিন্তু এখনো অন্যায় প্রতিরোধ করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি। জালেম পালিয়েছে কিন্তু জুলুম পালায়নি। জুলুমের অত্যাচারে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় এখনো কষ্ট পাচ্ছে।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইসস্টিটিউটে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় এ নেতা।

মুজিবুর রহমান বলেন, আজকে দেশ একটি সংকটের মধ্য চলছে। এখানে রাষ্ট্রপতি কে হবেন এটা বড় প্রশ্ন নয়। সংকট দূর করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ১৮ কোটি মানুষের অর্জিত স্বাধীনতা কেউ যাতে আবার কেড়ে নিতে পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের ইসলামের পতাকাবাহী একমাত্র শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। এই সংগঠন খেটে খাওয়া মানুষদের আলোর পথ দেখায়। অন্ধকার থেকে দূরে রাখে। মানুষদের শান্তির পথের সন্ধান দেয়। আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন ছাড়া দেশ থেকে বৈষম্য দূর হবে না। বৈষম্য দূর করার জন্য ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে শ্রমজীবী মানুষরা সুখ-শান্তি ফিরে পাবেন।

সভায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‌‘শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দেশের প্রচলিত শ্রমিক সংগঠন থেকে ব্যতিক্রম সংগঠন। দেশে বহু শ্রমিক সংগঠন আছে। যারা এদেশে মানবরচিত মতবাদ, সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ, ধর্মরিপেক্ষতা ও পশ্চিমা সভ্যতা-বিধিবিধানের ভিত্তিতে রাজনীতি করতেন, তারাই এদেশে প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তোলেন। তারা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন জুটমিল, কলকারখানায় বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলেন। যাদের টার্গেট ছিল এদেশ থেকে ইসলামকে উৎখাত করে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা। স্বল্প শিক্ষিত মানুষদের ভুল বুঝিয়ে সমাজতন্ত্রের আদলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা উদগ্রীব ছিলেন।’

তিনি বলেন, সমাজতান্ত্রিক কমিউনিস্টদের অপতৎপরতা রুখে দিতে এদেশের ইসলাম প্রিয় মুরুব্বিরা ১৯৬৮ সালে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করেন।
এই ধ্বংস জোয়ারের বিরুদ্ধে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রুখে দাঁড়ায়। শ্রমিক কল্যাণ শ্রমিকদের বোঝাতে সক্ষম হয় কমিউনিস্টরা তাদের ভুলপথে পরিচালিত করছেন। শ্রমিকদের মুক্তির জন্য ইসলামি শ্রমনীতির বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এদেশে একদল আদর্শ মানুষ তৈরি করতে চায়, যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন কিন্তু সত্যের পক্ষে থাকবে আপসহীন। আমরা আর কোনো চোরদের জন্য এই দেশের ভূমি ছেড়ে দেবো না।