মহান মে দিবস আজ

  • Update Time : ০৯:৫৮:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মে ২০২৪
  • / 45

আজ বুধবার (১ মে) মহান মে দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওইদিন তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দিবসটির এবারের নির্ধারিত প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।’

মহান মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। মহান দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

বিশ্বের দেশে দেশে পালিত হয়ে আসছে মহান মে দিবস। দিবসটি হয়ে ওঠে বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের চিরঞ্জীব অনুপ্রেরণার দিন।

আজকের আধুনিক সভ্যতার ভিত্তি হলো শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের নিরলস পরিশ্রম। হাজার বছর ধরে শ্রমজীবী মানুষের রক্ত-ঘামে যে মানবসভ্যতার উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে তা থেকে সেই শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীই থেকেছে উপেক্ষিত। আজকের উন্নত-সমৃদ্ধ পৃথিবীর কারিগর এসব অবহেলিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত, অধিকার বঞ্চিত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে অব্যাহত রয়েছে নিরন্তর সংগ্রাম।

সময়ের পরিক্রমায় ‘অধিকার’ শব্দটির সুদৃঢ় শক্তি সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা ও দর্শনকে প্রভাবিত করেছে এবং পরিবর্তন সাধিত করেছে। শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রবনতা পৃথিবীর দেশে দেশে অধিকার বঞ্চিত মেহনতি মানুষের মধ্যে এক নবতর জাগরণের প্রস্ফুটন ঘটায়।

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় গতিশীল হয়েছে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক আদর্শের অগ্রযাত্রা। স্বাধীনতা, সাম্য, ভ্রাতৃত্ববোধে সঞ্চারিত হয়েছে বিশ্বের বিবেকমান নাগরিকদের মানবিকসত্ত্বায়। মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও মানবিক বিশ্বের আদর্শ প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে শ্রমজীবী মানুষের আত্মনিবেদন।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন লাঞ্চিত-নিপীড়িত শোষিত-বঞ্চিত-অবহেলিত গরীব-দুঃখী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের দৃঢ় সংকল্পে বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আদর্শের আনুসারী নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত হয় আওয়ামী লীগ। জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ এদেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত-বঞ্চিত নির্যাতিত-নিপীড়িত মেহনতী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যেমন ছিলেন বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার, তেমনি তিনি ‘দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর’ জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।

বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে এদেশের শ্রমজীবী মানুষ গৌরবোজ্জ্বল বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে মে দিবস পালন শুরু হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। ফলে সে সময় হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়। জাতির পিতা দীপ্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন, “বিশ্ব আজ দু’ভাগে বিভক্ত। একদিকে শোষক, অন্যদিকে শোষিত। আমি শোষিতের দলে।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ন্যায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যখনই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তখন শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে গ্রহণ করেছেন বহুমাত্রিক উদ্যোগ। ব্যাপক শিল্পায়নের মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, গণতান্ত্রিক শ্রমনীতি প্রণয়ন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নামে দুটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় সৃষ্টি, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও কর্মংসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষদের সহায়তা প্রদান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলার সুযোগ সম্প্রসারিত করাসহ শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে অসংখ্য কল্যাণকর উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


মহান মে দিবস আজ

Update Time : ০৯:৫৮:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মে ২০২৪

আজ বুধবার (১ মে) মহান মে দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওইদিন তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দিবসটির এবারের নির্ধারিত প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।’

মহান মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। মহান দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

বিশ্বের দেশে দেশে পালিত হয়ে আসছে মহান মে দিবস। দিবসটি হয়ে ওঠে বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের চিরঞ্জীব অনুপ্রেরণার দিন।

আজকের আধুনিক সভ্যতার ভিত্তি হলো শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের নিরলস পরিশ্রম। হাজার বছর ধরে শ্রমজীবী মানুষের রক্ত-ঘামে যে মানবসভ্যতার উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে তা থেকে সেই শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীই থেকেছে উপেক্ষিত। আজকের উন্নত-সমৃদ্ধ পৃথিবীর কারিগর এসব অবহেলিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত, অধিকার বঞ্চিত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে অব্যাহত রয়েছে নিরন্তর সংগ্রাম।

সময়ের পরিক্রমায় ‘অধিকার’ শব্দটির সুদৃঢ় শক্তি সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা ও দর্শনকে প্রভাবিত করেছে এবং পরিবর্তন সাধিত করেছে। শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রবনতা পৃথিবীর দেশে দেশে অধিকার বঞ্চিত মেহনতি মানুষের মধ্যে এক নবতর জাগরণের প্রস্ফুটন ঘটায়।

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় গতিশীল হয়েছে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক আদর্শের অগ্রযাত্রা। স্বাধীনতা, সাম্য, ভ্রাতৃত্ববোধে সঞ্চারিত হয়েছে বিশ্বের বিবেকমান নাগরিকদের মানবিকসত্ত্বায়। মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও মানবিক বিশ্বের আদর্শ প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে শ্রমজীবী মানুষের আত্মনিবেদন।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন লাঞ্চিত-নিপীড়িত শোষিত-বঞ্চিত-অবহেলিত গরীব-দুঃখী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের দৃঢ় সংকল্পে বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আদর্শের আনুসারী নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত হয় আওয়ামী লীগ। জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ এদেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত-বঞ্চিত নির্যাতিত-নিপীড়িত মেহনতী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যেমন ছিলেন বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার, তেমনি তিনি ‘দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর’ জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।

বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে এদেশের শ্রমজীবী মানুষ গৌরবোজ্জ্বল বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে মে দিবস পালন শুরু হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। ফলে সে সময় হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়। জাতির পিতা দীপ্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন, “বিশ্ব আজ দু’ভাগে বিভক্ত। একদিকে শোষক, অন্যদিকে শোষিত। আমি শোষিতের দলে।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ন্যায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যখনই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তখন শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে গ্রহণ করেছেন বহুমাত্রিক উদ্যোগ। ব্যাপক শিল্পায়নের মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, গণতান্ত্রিক শ্রমনীতি প্রণয়ন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নামে দুটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় সৃষ্টি, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও কর্মংসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষদের সহায়তা প্রদান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলার সুযোগ সম্প্রসারিত করাসহ শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে অসংখ্য কল্যাণকর উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়।