এখনও যেন ঈদের বাজার, সবকিছুরই বাড়তি দাম

  • Update Time : ০৬:৩৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
  • / 121

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সকল নিত্যপণ্য।ঈদের সময় যে দাম বেড়েছে সেটা আর কমার নাম নেই। এর ফলে নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। তেল, চিনি, ডিম, আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও সবজি সবকিছুরই দাম বাড়তি। ঈদুল ফিতরের আগে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দামও কমেনি।

কোনো কারণে একবার দাম বেড়ে গেলে সেটা আর কমার ইতিহাস দেশে নেই। হয়তো ৫০ টাকা বাড়লে ৫টাকা কমতে পারে কখনও সখনও।

শুক্রবার (৫ মে) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, করলা প্রতিকেজি ৮০-১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০-৭০ টাকা, পটল ৫০-৮০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, কাঁকরোল ৬০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি সজনে বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকায়। ১ কেজি পেপে বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ৩৫-৪০ টাকা। প্রতি কেজি লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতিকেজি কাচা মরিচ ১০০-১২০ টাকা।

কম দামি সবজির মধ্যে, প্রতি কেজি পাকা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। মিষ্টিকুমড়া প্রতি পিস কাঁচা ৪০ এবং পাকাটা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় আলু প্রতি কেজি ৩৫-৪০ টাকায়। লেবু হালি ৩৫-৪০ টাকা। আর সব ধরনের শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।

বাজারে দর বেড়েছে আদার। দেশি আদা ২০০ থেকে ২২০ এবং আমদানি করা চায়না আদার কেজি ২৮০থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগেও দেশি আদা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং আমদানি করা আদার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে ছিল।

বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯৯ টাকা, ৫ লিটারের দাম ৯৬০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটারের দাম ১৭৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তেল-চিনির পাশাপাশি চোখ রাঙ্গাচ্ছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুন। ঈদের পর থেকে মসলাজাতীয় পণ্য তিনটির দামও বেড়েছে হু হু করে। আগে দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। যা এখন বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। একইভাবে আমদানি করা চায়না রসুনের কেজি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। আর দেশি রসুনের কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। রোজার ঈদের দুই-এক দিন পরও চায়না রসুনের কেজি ছিল ১৩০ টাকার আশপাশে। আর দেশি রসুন বিত্রিক্র হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।

খুচরা বাজারে কোথাও মিলছে না প্যাকেটজাত চিনি। খোলা চিনি কিনতে হলে খুঁজতে হচ্ছে দুই-চার দোকান। কয়েক দিনের ব্যবধানে দাম আরও বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজিপ্রতি। যা গত সপ্তাহে ১২০-১২৫ টাকার মধ্যে ছিল।

অন্যদিকে, বাজারে ঈদের মধ্যে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম কমেনি। বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা। এর সঙ্গে গত দুই দিন ধরে বাড়ছে ডিমের দাম। ১০ টাকা বেড়ে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।

ঈদের আগে ৭৫০ টাকা কেজিতে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হলেও ঈদের সময় তা হঠাৎ বেড়ে ৮০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। সেই বাড়তি দামেই এখনো বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। বিক্রেতারা বলছেন, গরুর দাম বেশি, সব ধরনের খরচও বেশি। তাই ৮০০ টাকায় বিক্রি না করলে লোকসান হয়ে যায়। অন্যদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, ঈদের অজুহাতে গরুর মাংসের দাম বাড়ানোর পর এখনো বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে।

মাছের দামও বাড়তি যাচ্ছে বাজারে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, শিং মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাঙাস মাছ প্রতি কেজি ২২০ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, চিংড়ি আকার ভেদে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, পাবদা মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, বড় টেংরা প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, শোল মাছ আকার ভেদে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, কাতল মাছ প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


এখনও যেন ঈদের বাজার, সবকিছুরই বাড়তি দাম

Update Time : ০৬:৩৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সকল নিত্যপণ্য।ঈদের সময় যে দাম বেড়েছে সেটা আর কমার নাম নেই। এর ফলে নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। তেল, চিনি, ডিম, আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও সবজি সবকিছুরই দাম বাড়তি। ঈদুল ফিতরের আগে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দামও কমেনি।

কোনো কারণে একবার দাম বেড়ে গেলে সেটা আর কমার ইতিহাস দেশে নেই। হয়তো ৫০ টাকা বাড়লে ৫টাকা কমতে পারে কখনও সখনও।

শুক্রবার (৫ মে) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, করলা প্রতিকেজি ৮০-১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০-৭০ টাকা, পটল ৫০-৮০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, কাঁকরোল ৬০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি সজনে বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকায়। ১ কেজি পেপে বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ৩৫-৪০ টাকা। প্রতি কেজি লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতিকেজি কাচা মরিচ ১০০-১২০ টাকা।

কম দামি সবজির মধ্যে, প্রতি কেজি পাকা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। মিষ্টিকুমড়া প্রতি পিস কাঁচা ৪০ এবং পাকাটা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় আলু প্রতি কেজি ৩৫-৪০ টাকায়। লেবু হালি ৩৫-৪০ টাকা। আর সব ধরনের শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।

বাজারে দর বেড়েছে আদার। দেশি আদা ২০০ থেকে ২২০ এবং আমদানি করা চায়না আদার কেজি ২৮০থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগেও দেশি আদা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং আমদানি করা আদার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে ছিল।

বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯৯ টাকা, ৫ লিটারের দাম ৯৬০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটারের দাম ১৭৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তেল-চিনির পাশাপাশি চোখ রাঙ্গাচ্ছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুন। ঈদের পর থেকে মসলাজাতীয় পণ্য তিনটির দামও বেড়েছে হু হু করে। আগে দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। যা এখন বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। একইভাবে আমদানি করা চায়না রসুনের কেজি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। আর দেশি রসুনের কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। রোজার ঈদের দুই-এক দিন পরও চায়না রসুনের কেজি ছিল ১৩০ টাকার আশপাশে। আর দেশি রসুন বিত্রিক্র হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।

খুচরা বাজারে কোথাও মিলছে না প্যাকেটজাত চিনি। খোলা চিনি কিনতে হলে খুঁজতে হচ্ছে দুই-চার দোকান। কয়েক দিনের ব্যবধানে দাম আরও বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজিপ্রতি। যা গত সপ্তাহে ১২০-১২৫ টাকার মধ্যে ছিল।

অন্যদিকে, বাজারে ঈদের মধ্যে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম কমেনি। বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা। এর সঙ্গে গত দুই দিন ধরে বাড়ছে ডিমের দাম। ১০ টাকা বেড়ে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।

ঈদের আগে ৭৫০ টাকা কেজিতে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হলেও ঈদের সময় তা হঠাৎ বেড়ে ৮০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। সেই বাড়তি দামেই এখনো বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। বিক্রেতারা বলছেন, গরুর দাম বেশি, সব ধরনের খরচও বেশি। তাই ৮০০ টাকায় বিক্রি না করলে লোকসান হয়ে যায়। অন্যদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, ঈদের অজুহাতে গরুর মাংসের দাম বাড়ানোর পর এখনো বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে।

মাছের দামও বাড়তি যাচ্ছে বাজারে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, শিং মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাঙাস মাছ প্রতি কেজি ২২০ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, চিংড়ি আকার ভেদে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, পাবদা মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, বড় টেংরা প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, শোল মাছ আকার ভেদে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, কাতল মাছ প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।