বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক, ফ্ল্যাগ রুলস সংশোধন

  • Update Time : ১১:১১:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩
  • / 111

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

এখন থেকে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে উড়বে জাতীয় পতাকা। ওই দিনটিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক করে সম্প্রতি ‘জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২’ সংশোধন করেছে সরকার। সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সই করা পতাকাবিধির সংশোধনী ২৬ এপ্রিল গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এর ফলে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি ৪৮ বছর পর আবারও আইনি কাঠামোয় এলো। অবশ্য সরকার গত তিন বছর ধরে পতাকা রুলের বিধান মতে নির্বাহী আদেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন জাতীয় শিশু দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নির্দেশনা দিয়ে আসছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় পতাকা-সংক্রান্ত বিধিমালা জারি করা হয়। ‘দ্য পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ ফ্ল্যাগ রুলস, ১৯৭২’ শিরোনামের এই বিধিমালায় জাতীয় পতাকার রঙ, আকার এবং উত্তোলনের নিয়ম সুনির্দিষ্ট করা ছাড়াও সরকারিভাবে পতাকা উত্তোলনের কয়েকটি দিন নির্ধারণ করা হয়।

ওই বিধিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ, স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ, বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর এবং সরকার ঘোষিত অন্য যেকোনও দিবসে, সরকার প্রজ্ঞাপিত অন্য যেকোনও দিবসে বাংলাদেশের সরকারি, বেসরকারি ভবন ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের প্রাঙ্গণে এবং কনসুলার কেন্দ্রগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা বাধ্যতামূলক বিষয় ছিল। তবে, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৭৬ সালের ১০ আগস্ট জাতীয় পতাকা বিধিমালায় এক সংশোধনী এনে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পতাকা উত্তোলনের বিধান বিলোপ করা হয়। নতুন বিধিতে মহানবী (সা.)-এর জন্ম দিবস (ঈদে মিলাদুন্নবী), স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও সরকার প্রজ্ঞাপিত অন্য যেকোনও দিবসে পতাকা উত্তোলনের কথা বলা হয়।

সর্বশেষ সংশোধনী এনে জাতির পিতার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ১৭ মার্চ জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধানটি পতাকাবিধিতে অন্তর্ভুক্ত হলো। এর আগে ২০২১ সালে বিধি সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিনটিতে পতাকা উত্তোলনের বাধ্যবাধকতা করা হয়।

অবশ্য বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পতাকা উত্তোলনের বাধ্যবাধকতা করে বিধিমালা সংশোধনীর আগে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে বিধিমালার (সরকার ঘোষিত যেকোনও দিবসে) আলোকে নির্বাহী আদেশে ১৭ মার্চ পতাকা উত্তোলনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে পতাকাবিধিতে উল্লিখিত দিনগুলোতে পতাকা উত্তোলন ছাড়াও ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং সরকার ঘোষিত অন্য কোনও দিবসে পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান রয়েছে। পতাকা রুল তৈরির শুরুতে কেবল জাতীয় শহীদ দিবস ও সরকার ঘোষিত অন্য কোনও দিবসে পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান ছিল। পরে ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি পতাকাবিধিতে সংশোধনী এনে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান যুক্ত হয়। এর আগে অবশ্য সরকার নির্বাহী আদেশে শোক দিবসে পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশনা দিয়ে আসছিল।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক, ফ্ল্যাগ রুলস সংশোধন

Update Time : ১১:১১:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

এখন থেকে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে উড়বে জাতীয় পতাকা। ওই দিনটিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক করে সম্প্রতি ‘জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২’ সংশোধন করেছে সরকার। সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সই করা পতাকাবিধির সংশোধনী ২৬ এপ্রিল গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এর ফলে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি ৪৮ বছর পর আবারও আইনি কাঠামোয় এলো। অবশ্য সরকার গত তিন বছর ধরে পতাকা রুলের বিধান মতে নির্বাহী আদেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন জাতীয় শিশু দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নির্দেশনা দিয়ে আসছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় পতাকা-সংক্রান্ত বিধিমালা জারি করা হয়। ‘দ্য পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ ফ্ল্যাগ রুলস, ১৯৭২’ শিরোনামের এই বিধিমালায় জাতীয় পতাকার রঙ, আকার এবং উত্তোলনের নিয়ম সুনির্দিষ্ট করা ছাড়াও সরকারিভাবে পতাকা উত্তোলনের কয়েকটি দিন নির্ধারণ করা হয়।

ওই বিধিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ, স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ, বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর এবং সরকার ঘোষিত অন্য যেকোনও দিবসে, সরকার প্রজ্ঞাপিত অন্য যেকোনও দিবসে বাংলাদেশের সরকারি, বেসরকারি ভবন ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের প্রাঙ্গণে এবং কনসুলার কেন্দ্রগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা বাধ্যতামূলক বিষয় ছিল। তবে, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৭৬ সালের ১০ আগস্ট জাতীয় পতাকা বিধিমালায় এক সংশোধনী এনে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পতাকা উত্তোলনের বিধান বিলোপ করা হয়। নতুন বিধিতে মহানবী (সা.)-এর জন্ম দিবস (ঈদে মিলাদুন্নবী), স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও সরকার প্রজ্ঞাপিত অন্য যেকোনও দিবসে পতাকা উত্তোলনের কথা বলা হয়।

সর্বশেষ সংশোধনী এনে জাতির পিতার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ১৭ মার্চ জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধানটি পতাকাবিধিতে অন্তর্ভুক্ত হলো। এর আগে ২০২১ সালে বিধি সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিনটিতে পতাকা উত্তোলনের বাধ্যবাধকতা করা হয়।

অবশ্য বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পতাকা উত্তোলনের বাধ্যবাধকতা করে বিধিমালা সংশোধনীর আগে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে বিধিমালার (সরকার ঘোষিত যেকোনও দিবসে) আলোকে নির্বাহী আদেশে ১৭ মার্চ পতাকা উত্তোলনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে পতাকাবিধিতে উল্লিখিত দিনগুলোতে পতাকা উত্তোলন ছাড়াও ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং সরকার ঘোষিত অন্য কোনও দিবসে পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান রয়েছে। পতাকা রুল তৈরির শুরুতে কেবল জাতীয় শহীদ দিবস ও সরকার ঘোষিত অন্য কোনও দিবসে পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান ছিল। পরে ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি পতাকাবিধিতে সংশোধনী এনে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান যুক্ত হয়। এর আগে অবশ্য সরকার নির্বাহী আদেশে শোক দিবসে পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশনা দিয়ে আসছিল।