পতনের চাপে লাখ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি বিনিয়োগকারীদের

  • Update Time : ০২:৩৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪
  • / 48

গত ৭ সপ্তাহ টানা পতনের পর বিদায়ী সপ্তাহে সামান্য উত্থান হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। এর জেরে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বা বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কিছুটা বেড়েছে। তবে গত আড়াই মাসে যে পরিমাণ দরপতন হয়েছে, তাতে এখনো সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিত ক্ষতির পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকার বেশি।

পতনের চাপে দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা ঈদের পর শেয়ারবাজার কোন দিকে মোড় নেবে, সেই সমীকরণই কষছেন। ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে, না পুষিয়ে উঠতে পারবেন, সেই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁদের মাথায়।

এই বিষয়ে শেয়ারবাজারে প্রবীণ বিনিয়োগকারী হাসান মাহমুদ শেয়ারনিউজকে বলেন, ঈদের পর বাজার কোন দিকে যাবে, সেটাই এখন চিন্তার বিষয়। যদি ঘুরে দাঁড়ায়, তাহলে হয়তো কিছুটা লোকসান পুষিয়ে ওঠা যাবে। আর তা না হলে ক্ষতি আরও বাড়বে। সেটা হলে আমার মনে হয়, অনেক বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে দেবেন।

তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ঈদের পর বাজার সামনের দিকেই এগুবে। কারণ এতোদিন বিএসইসি’র চেয়ারম্যানের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিরোধিতা করে একটি পক্ষ বাজার ডাম্পিং করেছেন। যেহেতু চেয়ারম্যানের চুক্তির মেয়াদ ফয়সালা হয়ে গেছে, সেহেতু এখন তারাও বাজারে তোলার উদ্যোগে সামিল হবেন। আর বিরোধিতকা করার সাহস পাবেন না। এছাড়া, বাজার এখন সর্বোচ্চ তলানিতে। পেছনে যাওয়ার আর সুযোগ নেই।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদায়ী সপ্তাহের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৯০৮ কোটি টাকায়, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ছিল ৬ লাখ ৭৯ হাজার ২২৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৭৯ কোটি টাকা।

চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারির পর থেকে শেয়ারবাজারে পতন শুরু হয়। দীর্ঘদিন ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ারের দাম এক জায়গায় আটকে রাখার পর গত ১৮ জানুয়ারি ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর বড় দরপতন হয়।

সেটা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই ১৮ ফেব্রুয়ারি ২২টি কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে নিয়ে যাওয়ায় আবার দরপতনের মধ্যে পড়ে যায় বাজার। এরপর বিভিন্ন গুজব, আলোচনা ও উৎকণ্ঠার মধ্যে কেবল দরপতন ত্বরান্বিত হয়েছে, শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

গত ১৭ জানুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। ধারাবাহিকভাবে কমে গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর আগে সেটি দাঁড়ায় ৬ লাখ ৭৯ হাজার ২২৯ কোটি টাকায়। অর্থাৎ ডিএসই বাজার মূলধন হারায় ১ লাখ ৯ হাজার ২২০ কোটি টাকা।

গত সপ্তাহের উত্থানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৭৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৭ জানুয়ারির সঙ্গে তুলনা করলে ডিএসইর বাজার মূলধন এখনো ১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে কম রয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


পতনের চাপে লাখ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি বিনিয়োগকারীদের

Update Time : ০২:৩৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪

গত ৭ সপ্তাহ টানা পতনের পর বিদায়ী সপ্তাহে সামান্য উত্থান হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। এর জেরে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বা বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কিছুটা বেড়েছে। তবে গত আড়াই মাসে যে পরিমাণ দরপতন হয়েছে, তাতে এখনো সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিত ক্ষতির পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকার বেশি।

পতনের চাপে দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা ঈদের পর শেয়ারবাজার কোন দিকে মোড় নেবে, সেই সমীকরণই কষছেন। ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে, না পুষিয়ে উঠতে পারবেন, সেই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁদের মাথায়।

এই বিষয়ে শেয়ারবাজারে প্রবীণ বিনিয়োগকারী হাসান মাহমুদ শেয়ারনিউজকে বলেন, ঈদের পর বাজার কোন দিকে যাবে, সেটাই এখন চিন্তার বিষয়। যদি ঘুরে দাঁড়ায়, তাহলে হয়তো কিছুটা লোকসান পুষিয়ে ওঠা যাবে। আর তা না হলে ক্ষতি আরও বাড়বে। সেটা হলে আমার মনে হয়, অনেক বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে দেবেন।

তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ঈদের পর বাজার সামনের দিকেই এগুবে। কারণ এতোদিন বিএসইসি’র চেয়ারম্যানের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিরোধিতা করে একটি পক্ষ বাজার ডাম্পিং করেছেন। যেহেতু চেয়ারম্যানের চুক্তির মেয়াদ ফয়সালা হয়ে গেছে, সেহেতু এখন তারাও বাজারে তোলার উদ্যোগে সামিল হবেন। আর বিরোধিতকা করার সাহস পাবেন না। এছাড়া, বাজার এখন সর্বোচ্চ তলানিতে। পেছনে যাওয়ার আর সুযোগ নেই।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদায়ী সপ্তাহের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৯০৮ কোটি টাকায়, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ছিল ৬ লাখ ৭৯ হাজার ২২৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৭৯ কোটি টাকা।

চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারির পর থেকে শেয়ারবাজারে পতন শুরু হয়। দীর্ঘদিন ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ারের দাম এক জায়গায় আটকে রাখার পর গত ১৮ জানুয়ারি ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর বড় দরপতন হয়।

সেটা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই ১৮ ফেব্রুয়ারি ২২টি কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে নিয়ে যাওয়ায় আবার দরপতনের মধ্যে পড়ে যায় বাজার। এরপর বিভিন্ন গুজব, আলোচনা ও উৎকণ্ঠার মধ্যে কেবল দরপতন ত্বরান্বিত হয়েছে, শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

গত ১৭ জানুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। ধারাবাহিকভাবে কমে গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর আগে সেটি দাঁড়ায় ৬ লাখ ৭৯ হাজার ২২৯ কোটি টাকায়। অর্থাৎ ডিএসই বাজার মূলধন হারায় ১ লাখ ৯ হাজার ২২০ কোটি টাকা।

গত সপ্তাহের উত্থানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৭৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৭ জানুয়ারির সঙ্গে তুলনা করলে ডিএসইর বাজার মূলধন এখনো ১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে কম রয়েছে।