এসকে সিনহার বাড়ি ক্রোকের ব্যবস্থা নি‌চ্ছে দুদক

  • Update Time : ১০:০৮:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
  • / 121

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আদাল‌তের নি‌র্দেশনা অনুযায়ী সাবেক প্রধান বিচারপতি সু‌রেন্দ্র কুমারের (এসকে সিনহার) কেনা যুক্তরাষ্ট্রের বা‌ড়ি ক্রোকের প্রক্রিয়া শুরু কর‌বে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যুক্তরা‌ষ্ট্রের নিউ জার্সি প্যাটার্সন এলাকার ১৭৯ জ্যাপার স্ট্রিটে কেনা বাড়িটি ক্রোক কর‌তে এমএলএআর (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যন্স রিকুয়েস্ট) পাঠানো হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব মাহবুব হোসেন বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, তদন্তকালে এসকে সিনহার যুক্তরাষ্ট্রের বাড়ি ক্রোকসহ সেখানকার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের জন্য আবেদন করা হয়। আদালত সেই বাড়িটি ক্রোকসহ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন। ফলে বাড়িটি ক্রোক বা ব্যাংক হিসাব ফ্রিজসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে শিগগিরই এমএলএআর পাঠাবেন।

তি‌নি বলেন, এসকে সিনহা বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অর্জিত অর্থ হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করে। এ টাকা দিয়ে ২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার ডলারে (৮৬ টাকা ডলার হিসেবে বাংলাদেশি টাকায় যা ২ কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার) সিনহার জন্য তিন তলা একটি বাড়ি কেনেন তার ভাই অনন্ত কুমার।

স‌চিব আরও বলেন, অবৈধ উপায় সম্পদ অর্জন ও তা পাচারের দায়ে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) এ আইনে গত বছর মামলাটি দায়ের করা হয়। ওই মামলায় এসকে সিনহাসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে ১১ বছরে সাজা ও অর্থদণ্ড দেন আদালত।

এর আগে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুদকের দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ২০ ফেব্রুয়ারি এসকে সিনহা ও তার ভাইয়ের যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক আনোয়ার প্রধান।

দুদক জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে ২০১৮ সালের জুনে একটি বাড়ি কেনেন এসকে সিনহার ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহা। অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে অনন্ত প্রায় দুই লাখ ডলার ঋণ নিয়ে দেড় লাখ ডলারে বাড়িটি কিনেছেন। কাছকাছি সময়ে অনন্ত কুমার সিনহা আরও একটি বাড়ি কেনেন প্রায় ৩ লাখ ডলার খরচ করে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে অনন্ত সিনহার অ্যাকাউন্টে (৮৫৮০০৩৩৭৫) জমা হয় প্রায় ২ লাখ ডলার। সেই বছরের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে একই ব্যাংকের একই অ্যাকাউন্টে আরও প্রায় ৬০ হাজার ডলার ঢুকে। টাকা আসে ইন্দোনেশিয়া ও কানাডা থেকে। ছোট ভাই অনন্ত প্রায় দেড় লাখ ডলারের চেক সংগ্রহ করতে ভাই এসকে সিনহাকে নিয়ে ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে গিয়েছিলেন। দুদক বলছে, এ অর্থ সিনহার; যা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হয়েছিল।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


এসকে সিনহার বাড়ি ক্রোকের ব্যবস্থা নি‌চ্ছে দুদক

Update Time : ১০:০৮:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আদাল‌তের নি‌র্দেশনা অনুযায়ী সাবেক প্রধান বিচারপতি সু‌রেন্দ্র কুমারের (এসকে সিনহার) কেনা যুক্তরাষ্ট্রের বা‌ড়ি ক্রোকের প্রক্রিয়া শুরু কর‌বে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যুক্তরা‌ষ্ট্রের নিউ জার্সি প্যাটার্সন এলাকার ১৭৯ জ্যাপার স্ট্রিটে কেনা বাড়িটি ক্রোক কর‌তে এমএলএআর (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যন্স রিকুয়েস্ট) পাঠানো হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব মাহবুব হোসেন বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, তদন্তকালে এসকে সিনহার যুক্তরাষ্ট্রের বাড়ি ক্রোকসহ সেখানকার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের জন্য আবেদন করা হয়। আদালত সেই বাড়িটি ক্রোকসহ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন। ফলে বাড়িটি ক্রোক বা ব্যাংক হিসাব ফ্রিজসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে শিগগিরই এমএলএআর পাঠাবেন।

তি‌নি বলেন, এসকে সিনহা বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অর্জিত অর্থ হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করে। এ টাকা দিয়ে ২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার ডলারে (৮৬ টাকা ডলার হিসেবে বাংলাদেশি টাকায় যা ২ কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার) সিনহার জন্য তিন তলা একটি বাড়ি কেনেন তার ভাই অনন্ত কুমার।

স‌চিব আরও বলেন, অবৈধ উপায় সম্পদ অর্জন ও তা পাচারের দায়ে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) এ আইনে গত বছর মামলাটি দায়ের করা হয়। ওই মামলায় এসকে সিনহাসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে ১১ বছরে সাজা ও অর্থদণ্ড দেন আদালত।

এর আগে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুদকের দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ২০ ফেব্রুয়ারি এসকে সিনহা ও তার ভাইয়ের যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক আনোয়ার প্রধান।

দুদক জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে ২০১৮ সালের জুনে একটি বাড়ি কেনেন এসকে সিনহার ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহা। অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে অনন্ত প্রায় দুই লাখ ডলার ঋণ নিয়ে দেড় লাখ ডলারে বাড়িটি কিনেছেন। কাছকাছি সময়ে অনন্ত কুমার সিনহা আরও একটি বাড়ি কেনেন প্রায় ৩ লাখ ডলার খরচ করে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে অনন্ত সিনহার অ্যাকাউন্টে (৮৫৮০০৩৩৭৫) জমা হয় প্রায় ২ লাখ ডলার। সেই বছরের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে একই ব্যাংকের একই অ্যাকাউন্টে আরও প্রায় ৬০ হাজার ডলার ঢুকে। টাকা আসে ইন্দোনেশিয়া ও কানাডা থেকে। ছোট ভাই অনন্ত প্রায় দেড় লাখ ডলারের চেক সংগ্রহ করতে ভাই এসকে সিনহাকে নিয়ে ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে গিয়েছিলেন। দুদক বলছে, এ অর্থ সিনহার; যা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হয়েছিল।