আমি গর্বিত, আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’: জাফর ইকবাল মুন্না
- Update Time : ০২:৪৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ২০২১
- / 414
জাফর ইকবাল মুন্না:
আমি চাঁদপুরের মানুষ। মেঘনা বিধৌত পলি-মাটিতে আমার জন্ম।মুক্তিযোদ্ধা পিতার সন্তান হয়ে আজন্ম লালিত স্বপ্ন এবং আদর্শ বঙ্গবন্ধু ,বাংলাদেশ,লাল সবুজ পতাকা।
এক বীর-মুক্তিযোদ্ধার ঘরে, স্বাধীন দেশের আলো-বাতাসে বেড়ে উঠি আমি চাঁদপুরে। শিশু কালে মাঝে মাঝে নিজেকে প্রশ্ন করতাম? শস্য শ্যামল সবুজে ঘেরা এই স্বাধীন দেশ, এই পতাকা কিভাবে কারা অর্জন করেছে, কেনই বা তারা যুদ্ধ করেছে। সময়ের সাথে-সাথে বিভিন্ন বইয়ের মাধ্যমে জানিতে পারি বাংলার ইতিহাস জানিতে পারি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস,
জানিতে পারি বীর বাঙ্গালির নিঃস্বার্থ পরার্থ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের ইতিহাস।
আর নিরালা ভাবতাম আমার বাবাও কি এমন ত্যাগী ছিল? হঠৎ একদিন- ছুটে গেলাম, আমার পিতার নিকট, জানিতে চাইলাম, অনেক আগ্রহ মনে নিয়ে!
বাবা আপনি কেনো গিয়েছিলেন সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে? কথাটি বলতেই বাবার চোখে ছলছল করছে জল, বিনম্র কন্ঠে বাবা বললো, এ দেশের জন্য একটি স্বাধীন পতাকার জন্য এক স্বাধীন জাতির জন্য।
অবশেষে অশ্রুজলে বলতে থাকে বাবা তার আত্মত্যাগের কথা, বলতে থাকে গর্বিত সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বস্ব ত্যাগের কথা,১৯৭১-র ২৫মার্চ যুদ্ধ শুরু হওয়ার অনেক আগে উত্তাল হয়ে উঠেছিলো বিভিন্ন দাবিতে সমগ্র পূর্ব বাংলা, এক পর্যায় নিষ্ঠুরতম পাকবাহিনীর শক্ত আঘাতে বে-দিশা হয়ে পড়ে নিঃশক্তি, বিনম্র বাঙ্গালি জাতি। বঙ্গবন্ধুর বজ্র কন্ঠের ডাকে অগ্নিকল্পে চিত্তে ঝাপিয়ে পড়ে মহাযুদ্ধে বীর বাঙ্গালি অজস্র নওজোয়ান, বর্বর আঘাতে অনাহারে বাঙ্গালির লাশের গন্ধে ভারী হয় সমগ্র বাংলা, তবু-ও হতাশায় থেমে যায় নাই মুক্তিযোদ্ধাদের পথচলা! পেটমরা নিশীথক্ষণে সংগ্রামে নিহত হয়েছে ৩০ লক্ষ প্রাণ।সেদিন শপথ নিয়েছিল আমার পিতা সহ সকল মুক্তিযোদ্ধা।
প্রদীপ্ত সূর্যের প্রত্যাশায় বিলিয়ে দিব এ প্রাণ, তবু আনবো ফিরে দেশের মান, চূর্ণবিচূর্ণ করে শত্রুদের সকল আস্তানা গুড়িয়ে দায় তাবু, জীবন বাজি রেখে অজস্র প্রাণের বিনিময়ে দেশের অতন্দ্র প্রহরী প্রতিঘাতী বীর ছিনিয়ে আনে আলোকিত বিজয়, অকুতোভয় চিত্তে যারা এনেছে স্বাধীনতা, সেই বীরের ঘরে আমার জন্ম আমি ধন্য আমি গর্বিত আমি এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পদার্পনে সান্বিদ্ধ পেয়েছি একজন ভাষাবীর এর কন্যা ডাক্তার দীপু মনি।বঙ্গবন্ধু আমার আদর্শ,বঙ্গবন্ধু কন্যা আমার প্রেরণা, আর ভাষাবীর কন্যা দীপু মনি আমার পথ চলার নিশানা। চলিতে চলিতে যখনই হোচট খেয়েছি তখনই ছোট ভাই এর স্নেহে আগলে রেখেছেন প্রিয় আপা। যাঁর ছায়া তলে থেকে নিজেকে ধন্য মনে করি।
শাসনে তিনি বড় বোন তুল্য,স্নেহের পরশে পাই বোনের মমতা। আপনি দীর্ঘজীবি হোন,
আপনার স্নেহের পরশ আমার পাথেয়।
যারা জীবন দিয়ে স্বাধীনতা দিয়ে গেছে, তাদের রক্তে কেনা স্বাধীনতা কি আমরা রক্ষা করতে পেরেছি? প্রশ্ন রেখে গেলাম এই নব্য জাতির নিকট!ওরা নির্ভীক মনোহর শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি,অভিনন্দন -অভ্যথর্না জানাই সকল মুক্তিযোদ্ধাদের খ্যাতি জীবন কে, আয়ুস্কাম করি ঐ সৃষ্টিকর্তার নিকট।
জন্ম যদি হইগো আবার করি প্রার্থনা বাংলা ছাড়া স্বর্গ দেশে জন্ম দিওনা, এই দেশেরই মাটির গন্ধে মুগ্ধ দেহ প্রাণ এই দেশেরই জন্য বিলে দিতে পারি জান।
লেখক: কার্য-নির্বাহী সদস্য,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।