শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারে প্রস্তাবনা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ

  • Update Time : ০৮:১৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 64

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করতে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা দিয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান থেকে উত্থিত প্ল্যাটফর্ম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ। নিজেকে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ও রাজনীতিমুক্ত হিসেবে দাবি করা শিক্ষকদের এই প্ল্যাটফর্মটি প্রশাসনের ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে আমলাতান্ত্রিক চর্চা ও দীর্ঘসূত্রিতা থেকে মুক্তিরও প্রস্তাব দিয়েছে।

এছাড়া সংগঠনটি ক্ষমতা কাঠামোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরিচালনা কমিটি এবং উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন, প্রভোস্ট ও প্রক্টর নির্বাচনের রূপরেখা দিয়েছে ।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব প্রস্তাবনা প্রকাশ করে সংগঠনটি।

‘শিক্ষা-ভাবনা-আমাদের প্রস্তাব’ এবং ‘প্রশাসন ও ক্ষমতা কাঠামোর পুনর্বিন্যাস’ নামে দুই পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে শিক্ষকদের এই প্ল্যাটফর্ম।

প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু; একজন শিক্ষকদের বিপরীতে শিক্ষার্থীদের অনুপাত অন্তত ৪০ সংখ্যায় নিয়ে আসা; বাজার চাহিদার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন বিভাগে ভর্তি ৪০ জনের মধ্যে রাখা; পিএইচডি অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মাসিক অন্তত ৫০ হাজার টাকা বেতন দেওয়া; শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরি ও ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা করা।

এছাড়াও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বি-ধাপ পদ্ধতি গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রথমে উচ্চতর ডিগ্রি বিবেচনায় একাডেমিক কমিটির একটি শর্টলিস্ট তৈরি করা এবং পরে শিক্ষার্থীদের সাথে সংলাপ ও প্রশ্ন উত্তর এবং নিয়োগ বোর্ডের সাথে সাক্ষাতকার গ্রহণ করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান ও জনসংখ্যার বিকেন্দ্রীকরণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে এ প্রস্তাবে।

আলোচক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত বিচারে সমাজের প্রতিষ্ঠান। এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে। ফলে তারা যেভাবে চাইবে, সেভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় চলবে।

আলোচক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু শিক্ষক নন, ছাত্রদের স্টেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের সাথে রাষ্ট্রের সংস্কার জড়িয়ে আছে। রাষ্ট্র যদি সংস্কার না হয়, তাহলে সবকিছু পুনরায় ফিরে আসার বিপদ আছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠার জন্য যা যা দরকার, তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে। তবে রাজনীতির কারণে গত কয়েক বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সার্টিফিকেট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে লিখিত প্রস্তাবনা পাঠ করেন ড. শাহমান মৈশান, ড. খোরশেদ আলম, ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও সমম্বয়ক আব্দুল কাদের।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারে প্রস্তাবনা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ

Update Time : ০৮:১৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করতে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা দিয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান থেকে উত্থিত প্ল্যাটফর্ম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ। নিজেকে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ও রাজনীতিমুক্ত হিসেবে দাবি করা শিক্ষকদের এই প্ল্যাটফর্মটি প্রশাসনের ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে আমলাতান্ত্রিক চর্চা ও দীর্ঘসূত্রিতা থেকে মুক্তিরও প্রস্তাব দিয়েছে।

এছাড়া সংগঠনটি ক্ষমতা কাঠামোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরিচালনা কমিটি এবং উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন, প্রভোস্ট ও প্রক্টর নির্বাচনের রূপরেখা দিয়েছে ।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব প্রস্তাবনা প্রকাশ করে সংগঠনটি।

‘শিক্ষা-ভাবনা-আমাদের প্রস্তাব’ এবং ‘প্রশাসন ও ক্ষমতা কাঠামোর পুনর্বিন্যাস’ নামে দুই পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে শিক্ষকদের এই প্ল্যাটফর্ম।

প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু; একজন শিক্ষকদের বিপরীতে শিক্ষার্থীদের অনুপাত অন্তত ৪০ সংখ্যায় নিয়ে আসা; বাজার চাহিদার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন বিভাগে ভর্তি ৪০ জনের মধ্যে রাখা; পিএইচডি অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মাসিক অন্তত ৫০ হাজার টাকা বেতন দেওয়া; শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরি ও ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা করা।

এছাড়াও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বি-ধাপ পদ্ধতি গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রথমে উচ্চতর ডিগ্রি বিবেচনায় একাডেমিক কমিটির একটি শর্টলিস্ট তৈরি করা এবং পরে শিক্ষার্থীদের সাথে সংলাপ ও প্রশ্ন উত্তর এবং নিয়োগ বোর্ডের সাথে সাক্ষাতকার গ্রহণ করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান ও জনসংখ্যার বিকেন্দ্রীকরণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে এ প্রস্তাবে।

আলোচক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত বিচারে সমাজের প্রতিষ্ঠান। এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে। ফলে তারা যেভাবে চাইবে, সেভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় চলবে।

আলোচক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু শিক্ষক নন, ছাত্রদের স্টেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের সাথে রাষ্ট্রের সংস্কার জড়িয়ে আছে। রাষ্ট্র যদি সংস্কার না হয়, তাহলে সবকিছু পুনরায় ফিরে আসার বিপদ আছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠার জন্য যা যা দরকার, তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে। তবে রাজনীতির কারণে গত কয়েক বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সার্টিফিকেট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে লিখিত প্রস্তাবনা পাঠ করেন ড. শাহমান মৈশান, ড. খোরশেদ আলম, ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও সমম্বয়ক আব্দুল কাদের।