মার্চ ফর জাস্টিস : শিক্ষার্থীকে ছাড়াতে গিয়ে আহত ঢাবি শিক্ষিকা
- Update Time : ১০:১৭:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
- / 53
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে “মার্চ ফর জাস্টিস” কর্মসূচিতে পুলিশ কর্তৃক এক শিক্ষার্থীকে আটকের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একজন নারী শিক্ষক।
বুধবার(৩১ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দোয়েল চত্বরের পাশে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে ছাত্র ও শিক্ষকদের সম্মিলিত সমাবেশ চলাকালে এক শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক আটক করতে আসে পুলিশ।
এতে বাধা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নুসরাত জাহান চৌধুরী এবং প্রভাষক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া।
এসময় পুলিশের ধাক্কায় আহত হোন শিক্ষক শেহরীন আমিন। এই শিক্ষকের হাত মুচড়ে যায় এবং হাঁটুতে ব্যথা পান তিনি । বর্তমানে তিনি বাসায় গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জানা গেছে, এক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যেতে থাকে পুলিশ। কিন্তু ওই শিক্ষার্থীর হাত ধরে রাখেন শিক্ষক শেহরীন আমিন। তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন অধ্যাপক নুসরাত জাহান চৌধুরী।
পুলিশের এক কর্মকর্তা তখন বারবার বলেন, ‘আমি এ শিক্ষার্থীকে চেক করে ছেড়ে দেব। ’ শিক্ষক শেহরিন আমিন বলেন, ‘এরা আমার শিক্ষার্থী। আমি হাত ছাড়ব না। আচ্ছা ভাই একটু বলেন, ও কী করেছে? ও তো কিছুই করেনি। ’
পরে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা শুধু মোবাইল চেক করে ছেড়ে দেব। তখন শেহরীন আমিন বলেন, আপনি তো ফোন চেক করতে পারেন না। ’
এ সময় পুলিশ ওই শিক্ষার্থী অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে শেহরীন আমিন ও অধ্যাপক নুসরাত চৌধুরী সবার সামনে তাকে চেক করতে বলেন। ওই শিক্ষার্থীও পুলিশের সাথে যেতে চাচ্ছিলেন না। পুলিশের ওই সদস্য শিক্ষার্থীকে বলেন, ‘আমরা কিন্তু ফোর্স অ্যাপ্লাই করতে বাধ্য হবো। আপনি কি চান, আমরা ফোর্স অ্যাপ্লাই করি?’
পরে এক পর্যায়ে পুলিশ ওই শিক্ষার্থীকে ধস্তাধস্তি করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে শিক্ষক শেহরিন আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, ক্যাম্পাস এলাকার মধ্য থেকে তো কোনো শিক্ষার্থীকে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া পুলিশ আটক করতে পারে না। আমি সেটাই জানতে চেয়েছিলাম এবং বাধা দিয়েছিলাম। তারা আমার হাতে মোচড় দিয়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছেন। তারপর ছেলেটাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গেছেন। জানি না তার এখন কী অবস্থা !
অধ্যাপক নুসরাত চৌধুরী বলেন, আমরা এখানে কেবল দাঁড়াতে এসেছিলাম। আমাদের কী এখানে দাঁড়ানোর অধিকার নেই?
তিনি বলেন, এরকম সময়ে শিক্ষার্থীদের জন্য দাঁড়াতে না পারলে, আমি মনে করি না ১২০ জন শিক্ষার্থীর সামনে দাঁড়িয়ে ক্লাস নেওয়ার নৈতিক অধিকার আমার থাকে। আমি সে অধিকার বোধ হয় হারিয়ে ফেলছি।
মার্চ ফর জাস্টিসে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আমরা বিবেকের তাড়নায় অংশ নিয়েছি। শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক, তাদের উপর নির্যাতন করার অধিকার কারো নেই। আমরা তাদের দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে আজ রাস্তায় নেমে এসেছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, বিষয়টা আমি মাত্র জানতে পেরেছি। গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আমাদের সহকারী প্রক্টররা ওখানে আছেন। তারাও বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করছেন।