ঢাবিতে কেবলমাত্র জন্মগতভাবে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের অধিকারীরাই ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় আবেদন করতে পারবে

  • Update Time : ০৬:৩৯:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৪
  • / 302

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় শুধু জন্মগতভাবে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের অধিকারী শিক্ষার্থীরাই ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। স্বেচ্ছায় নিজেকে পরিবর্তন বা বিকৃত করা কোন ট্রান্স নারী বা পুরুষ এই কোটায় আবেদনের সুযোগ পাবেন না। আর এ ক্ষেত্রে কোটা শনাক্তকরণে সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রদত্ত হিজড়া (গেজেট নং সকম/কর্ম- ১শা/হিজড়া-১৫-২০১৩-৪০) পরিচয়পত্র অবশ্যই দাখিল করতে হবে বলেও জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর ২১/১২/২০২৩ তারিখের পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় ভর্তি বিষয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্টভাবে জানাচ্ছে যে, ২০২২-২০২৩ সেশন থেকে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটা প্রচলন করা হয়। কেবলমাত্র জন্মগতভাবে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের অধিকারী শিক্ষার্থীরা ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশোধিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। একইসাথে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর একটি স্মারকলিপিও প্রদান করে তারা।

স্মারকলিপিতে উল্লিখিত শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো ছিল- অনতিবিলম্বে ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করা; অতি দ্রুত এই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা; হিজরা জনগোষ্ঠীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বিঘ্নে পড়াশোনার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া এবং ট্রান্সজেন্ডার পরিচয়ধারীদের কোটা ব্যবস্থায় আনার মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডার মতবাদকে প্রমোট করে আইন এবং সংবিধান বিরোধী কাজ করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষমা চাওয়া প্রভৃতি।

কিন্তু এ বিষয়ে ঢাবি প্রশাসন লিখিত নিশ্চয়তা এবং ট্রান্সজেন্ডার শব্দ বাতিল না করায় গত ৩ ডিসেম্বর পুনরায় “অবস্থান কর্মসূচি” গ্রহণ করেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে বিকেল ৫টায় উপাচার্যের নেতৃত্বে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে মিটিং করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টার আগে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় সন্ধ্যার পরে “গণ অবস্থান কর্মসূচি” ঘোষণা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷ এই কর্মসূচি বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলমান থাকার কথা ছিল। এসবের পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ঢাবিতে কেবলমাত্র জন্মগতভাবে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের অধিকারীরাই ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় আবেদন করতে পারবে

Update Time : ০৬:৩৯:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৪

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় শুধু জন্মগতভাবে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের অধিকারী শিক্ষার্থীরাই ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। স্বেচ্ছায় নিজেকে পরিবর্তন বা বিকৃত করা কোন ট্রান্স নারী বা পুরুষ এই কোটায় আবেদনের সুযোগ পাবেন না। আর এ ক্ষেত্রে কোটা শনাক্তকরণে সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রদত্ত হিজড়া (গেজেট নং সকম/কর্ম- ১শা/হিজড়া-১৫-২০১৩-৪০) পরিচয়পত্র অবশ্যই দাখিল করতে হবে বলেও জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর ২১/১২/২০২৩ তারিখের পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় ভর্তি বিষয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্টভাবে জানাচ্ছে যে, ২০২২-২০২৩ সেশন থেকে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটা প্রচলন করা হয়। কেবলমাত্র জন্মগতভাবে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের অধিকারী শিক্ষার্থীরা ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশোধিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। একইসাথে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর একটি স্মারকলিপিও প্রদান করে তারা।

স্মারকলিপিতে উল্লিখিত শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো ছিল- অনতিবিলম্বে ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করা; অতি দ্রুত এই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা; হিজরা জনগোষ্ঠীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বিঘ্নে পড়াশোনার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া এবং ট্রান্সজেন্ডার পরিচয়ধারীদের কোটা ব্যবস্থায় আনার মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডার মতবাদকে প্রমোট করে আইন এবং সংবিধান বিরোধী কাজ করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষমা চাওয়া প্রভৃতি।

কিন্তু এ বিষয়ে ঢাবি প্রশাসন লিখিত নিশ্চয়তা এবং ট্রান্সজেন্ডার শব্দ বাতিল না করায় গত ৩ ডিসেম্বর পুনরায় “অবস্থান কর্মসূচি” গ্রহণ করেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে বিকেল ৫টায় উপাচার্যের নেতৃত্বে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে মিটিং করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টার আগে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় সন্ধ্যার পরে “গণ অবস্থান কর্মসূচি” ঘোষণা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷ এই কর্মসূচি বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলমান থাকার কথা ছিল। এসবের পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।