৪৩তম বিসিএসে বাকৃবির ১৫৫ ক্যাডার

  • Update Time : ১২:৪১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জানুয়ারী ২০২৪
  • / 183

৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) থেকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য ১৫৫ জন শিক্ষার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। একটি অনলাইন জরিপের সর্বশেষ তথ্যের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকৃবির সাবেক শিক্ষার্থী এবং পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান।

গত মঙ্গলবার ৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। যেখানে এবার ২ হাজার ১৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।

মো. মিজানুর রহমান জানান, এবার বাকৃবি থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডারে ১ জন, প্রশাসন ক্যাডারে ১৮ জন, পুলিশ ক্যাডারে ৬ জন, কর ক্যাডারে ৫ জন, অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডারে ১ জন, তথ্য ক্যাডারে ২ জন, লাইভ স্টক ক্যাডারে ৫৫ জন, মৎস্য ক্যাডারে ১০, কৃষি ক্যাডারে ৫৫ জন ও কৃষি প্রভাষক ২ জন সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। গত বছরের তুলনায় এবার প্রশাসন ক্যাডারের সংখ্যা কিছুটা কমেছে জানান তিনি। ১৫৫ জন একদম সঠিক বলা যাবে না, কারণ অনেকেই হইতো অনলাইন জরিপে অংশ নেননি। সংখ্যটা কিছু বাড়তে পারে।

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান আরও বলেন, কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হওয়ার কারণে বাকৃবি থেকে বরাবরই টেকনিক্যাল ক্যাডারে অনেক বেশি চাকরি পেয়ে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে পড়াশোনার পরিবেশ অনেক ভালো হওয়ার কারণে চাকরিপ্রার্থীরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে। করোনা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে চাকরিপ্রার্থীরা এবার আরও বেশি পরিশ্রম করেছেন। একইসঙ্গে ৪০তম বিসিএস থেকে কোটা পদ্ধতি উঠে যাওয়ার কারণে সাধারণ ক্যাডারে এবার বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে বলে মনে করি। ৪১তম বিসিএসে ক্যাডার সংখ্যা আরও বেশি ছিল। এবার কিছুটা কম, তবে সামনে আরও বেশি শিক্ষার্থী বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হবেন বলে আশা রাখি।

৪৩তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে প্রথম হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন মাহদী হাসান। এ ছাড়াও তিনি ৪১তম বিসিএসেও বন ক্যাডারে ১ম হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির বিষয়ে বলেন, প্রস্তুতি এমনভাবে নিতে হবে যেন পরীক্ষার আগে আগে পূর্বের পড়াগুলো রিভিশন দিয়ে যাওয়া যায়। এ জন্য আগে থেকেই গুছিয়ে পড়া ভালো। ভালো ক্যাডার পেতে হলে মূল পরীক্ষা হলো লিখিত। শুরুতেই ২৮-৪৪তম লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। ইংরেজিতে বেশি জোর দিতে পারেন। এই বিষয়েই অধিকাংশ পরীক্ষার্থী দুর্বল হয়ে থাকে। পাশাপাশি ২০০ মার্কের বিষয়গুলো (ইংরেজি, বাংলা ও বাংলাদেশ) ভালো করার বিকল্প নেই। স্ট্রং জোনে আরও স্ট্রং হতে হবে। যত পারা যায় পাশাপাশি দুর্বল সাবজেক্টে যাতে একদম ধস না হয়ে এভারেজ মার্ক পাওয়া যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ডাটা ও এক্সক্লুসিভ তথ্যগুলো আলাদা ছোট করে লিখে নিতে হবে। রিটেনে প্রশ্ন কমন পাওয়া টার্গেট না করে টপিক বুঝে কালেক্টেড তথ্য সুবিধামতো জায়গায় দিতে পারলে ভালো হয়। সর্বোপরি সৃষ্টিকর্তাকে স্বরণ করতে হবে আর রিজিকে বিশ্বাস রাখতে হবে।

৪৩তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন মো. মেহেফুজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সবাই বলত পররাষ্ট্র ক্যাডার চয়েস দিয়ে ভাইভাতে ভালো না পারলে নাকি ফেল করিয়ে দেয়। তাই বেশিরভাগই প্রশাসনকেই প্রথম চয়েস হিসেবে কমফরটেবল ফিল করে। আমি ছিলাম তার বিপরীতে। পররাষ্ট্রতেই নিজের স্বপ্নগুলো সাজিয়েছিলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, বাকৃবির যেসব শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আশা করি, তারা নিজেদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা ও সততার সঙ্গে কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুনাম বয়ে আনবে। পাশাপাশি সবার প্রতি আমার আহ্বান থাকবে যে, শুধু বিসিএস নয়, বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা অর্জন করে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


৪৩তম বিসিএসে বাকৃবির ১৫৫ ক্যাডার

Update Time : ১২:৪১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জানুয়ারী ২০২৪

৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) থেকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য ১৫৫ জন শিক্ষার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। একটি অনলাইন জরিপের সর্বশেষ তথ্যের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকৃবির সাবেক শিক্ষার্থী এবং পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান।

গত মঙ্গলবার ৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। যেখানে এবার ২ হাজার ১৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।

মো. মিজানুর রহমান জানান, এবার বাকৃবি থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডারে ১ জন, প্রশাসন ক্যাডারে ১৮ জন, পুলিশ ক্যাডারে ৬ জন, কর ক্যাডারে ৫ জন, অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডারে ১ জন, তথ্য ক্যাডারে ২ জন, লাইভ স্টক ক্যাডারে ৫৫ জন, মৎস্য ক্যাডারে ১০, কৃষি ক্যাডারে ৫৫ জন ও কৃষি প্রভাষক ২ জন সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। গত বছরের তুলনায় এবার প্রশাসন ক্যাডারের সংখ্যা কিছুটা কমেছে জানান তিনি। ১৫৫ জন একদম সঠিক বলা যাবে না, কারণ অনেকেই হইতো অনলাইন জরিপে অংশ নেননি। সংখ্যটা কিছু বাড়তে পারে।

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান আরও বলেন, কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হওয়ার কারণে বাকৃবি থেকে বরাবরই টেকনিক্যাল ক্যাডারে অনেক বেশি চাকরি পেয়ে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে পড়াশোনার পরিবেশ অনেক ভালো হওয়ার কারণে চাকরিপ্রার্থীরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে। করোনা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে চাকরিপ্রার্থীরা এবার আরও বেশি পরিশ্রম করেছেন। একইসঙ্গে ৪০তম বিসিএস থেকে কোটা পদ্ধতি উঠে যাওয়ার কারণে সাধারণ ক্যাডারে এবার বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে বলে মনে করি। ৪১তম বিসিএসে ক্যাডার সংখ্যা আরও বেশি ছিল। এবার কিছুটা কম, তবে সামনে আরও বেশি শিক্ষার্থী বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হবেন বলে আশা রাখি।

৪৩তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে প্রথম হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন মাহদী হাসান। এ ছাড়াও তিনি ৪১তম বিসিএসেও বন ক্যাডারে ১ম হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির বিষয়ে বলেন, প্রস্তুতি এমনভাবে নিতে হবে যেন পরীক্ষার আগে আগে পূর্বের পড়াগুলো রিভিশন দিয়ে যাওয়া যায়। এ জন্য আগে থেকেই গুছিয়ে পড়া ভালো। ভালো ক্যাডার পেতে হলে মূল পরীক্ষা হলো লিখিত। শুরুতেই ২৮-৪৪তম লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। ইংরেজিতে বেশি জোর দিতে পারেন। এই বিষয়েই অধিকাংশ পরীক্ষার্থী দুর্বল হয়ে থাকে। পাশাপাশি ২০০ মার্কের বিষয়গুলো (ইংরেজি, বাংলা ও বাংলাদেশ) ভালো করার বিকল্প নেই। স্ট্রং জোনে আরও স্ট্রং হতে হবে। যত পারা যায় পাশাপাশি দুর্বল সাবজেক্টে যাতে একদম ধস না হয়ে এভারেজ মার্ক পাওয়া যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ডাটা ও এক্সক্লুসিভ তথ্যগুলো আলাদা ছোট করে লিখে নিতে হবে। রিটেনে প্রশ্ন কমন পাওয়া টার্গেট না করে টপিক বুঝে কালেক্টেড তথ্য সুবিধামতো জায়গায় দিতে পারলে ভালো হয়। সর্বোপরি সৃষ্টিকর্তাকে স্বরণ করতে হবে আর রিজিকে বিশ্বাস রাখতে হবে।

৪৩তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন মো. মেহেফুজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সবাই বলত পররাষ্ট্র ক্যাডার চয়েস দিয়ে ভাইভাতে ভালো না পারলে নাকি ফেল করিয়ে দেয়। তাই বেশিরভাগই প্রশাসনকেই প্রথম চয়েস হিসেবে কমফরটেবল ফিল করে। আমি ছিলাম তার বিপরীতে। পররাষ্ট্রতেই নিজের স্বপ্নগুলো সাজিয়েছিলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, বাকৃবির যেসব শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আশা করি, তারা নিজেদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা ও সততার সঙ্গে কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুনাম বয়ে আনবে। পাশাপাশি সবার প্রতি আমার আহ্বান থাকবে যে, শুধু বিসিএস নয়, বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা অর্জন করে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে হবে।