শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি

  • Update Time : ০৬:০৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩
  • / 112

ঢাবির সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে একই ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে অভিযুক্ত শিক্ষকের অফিস কক্ষে তালা দিয়েছেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তারা এর বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছেন।

বুধবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনার বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাসে র‍্যালি এবং মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা । 

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার(২৮ নভেম্বর) ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী। পরে উপাচার্য অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্ত করবেন বলে ভুক্তভোগীকে জানান।

জানা যায়, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম নুরুল ইসলাম। তিনি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রী পরামর্শের জন্য ওই শিক্ষকের কক্ষে গেলে, তাকে যৌন নিপীড়ন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরে জানুয়ারি মাসে এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল। এর আগে ২০১৪ সালে মে মাসেও এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।   

এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে ইনস্টিটিউট জুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এর প্রতিবাদে ইনস্টিটিউটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দুপুরে ইনস্টিটিউটের অভিযুক্ত শিক্ষকের অফিসে তালা ঝুলিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করেন। এসময় তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিচারের দাবি জানান।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা যেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখানে আন্দোলন করছি তিনি ২০১৪ সাল থেকে আমাদের ইনস্টিটিউটের নারী শিক্ষার্থীদের হ্যারাজ করে আসছে। দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে তিনি ধরনের অরাজকতা করলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করবে। আমরা এই শিক্ষকের বিচার চাই। এই দাবি নিয়েই আজকে আমরা এখানে এসেছি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জাতির পথনির্দেশক। তাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থী কখনো এগুলো আশা করে না। তিনি (অধ্যাপক নুরুল ইসলাম) প্রায়ই শিক্ষার্থীদের নিজ রুমে ডেকে নিয়ে বিভিন্নরকম অশোভন ইঙ্গিত পূর্ণ কথাবার্তা শোনান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র দেওয়ার পরেও তদন্ত মাফিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

মানববন্ধনে উপস্থিত সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এখানে এজন্যই উপস্থিত হয়েছি যে আমাদের ইনস্টিটিউটের একজন অধ্যাপক আমাদের এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতন করেছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা চাই যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি সুষ্ঠু তদন্ত কমিটি গঠন করে এই শিক্ষককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি

Update Time : ০৬:০৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

ঢাবির সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে একই ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে অভিযুক্ত শিক্ষকের অফিস কক্ষে তালা দিয়েছেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তারা এর বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছেন।

বুধবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনার বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাসে র‍্যালি এবং মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা । 

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার(২৮ নভেম্বর) ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী। পরে উপাচার্য অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্ত করবেন বলে ভুক্তভোগীকে জানান।

জানা যায়, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম নুরুল ইসলাম। তিনি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রী পরামর্শের জন্য ওই শিক্ষকের কক্ষে গেলে, তাকে যৌন নিপীড়ন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরে জানুয়ারি মাসে এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল। এর আগে ২০১৪ সালে মে মাসেও এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।   

এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে ইনস্টিটিউট জুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এর প্রতিবাদে ইনস্টিটিউটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দুপুরে ইনস্টিটিউটের অভিযুক্ত শিক্ষকের অফিসে তালা ঝুলিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করেন। এসময় তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিচারের দাবি জানান।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা যেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখানে আন্দোলন করছি তিনি ২০১৪ সাল থেকে আমাদের ইনস্টিটিউটের নারী শিক্ষার্থীদের হ্যারাজ করে আসছে। দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে তিনি ধরনের অরাজকতা করলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করবে। আমরা এই শিক্ষকের বিচার চাই। এই দাবি নিয়েই আজকে আমরা এখানে এসেছি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জাতির পথনির্দেশক। তাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থী কখনো এগুলো আশা করে না। তিনি (অধ্যাপক নুরুল ইসলাম) প্রায়ই শিক্ষার্থীদের নিজ রুমে ডেকে নিয়ে বিভিন্নরকম অশোভন ইঙ্গিত পূর্ণ কথাবার্তা শোনান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র দেওয়ার পরেও তদন্ত মাফিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

মানববন্ধনে উপস্থিত সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এখানে এজন্যই উপস্থিত হয়েছি যে আমাদের ইনস্টিটিউটের একজন অধ্যাপক আমাদের এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতন করেছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা চাই যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি সুষ্ঠু তদন্ত কমিটি গঠন করে এই শিক্ষককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।