ঢাবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ উপলক্ষে বিশাল গণজমায়েত

  • Update Time : ০৪:৪৮:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩
  • / 348

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবসে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।কর্মসূচিতে তারা বিশাল পতাকা নিয়ে সাংস্কৃতিক সেগমেন্ট ও শোভাযাত্রার আয়োজন করেন।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ১২ টায় ঢাবির সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একত্রিত হয়ে সেখান থেকে মার্চ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। 

শোভাযাত্রাটি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে ভিসি চত্বর থেকে ফুলার রোড হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

মার্চ ফর প্যালেস্টাইনের আজকের এই পতাকাটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে ফিলিস্তিনের পক্ষে সবচেয়ে বড় পতাকা বলে অভিহিত করেছেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে ফিলিস্তিনের বড় একটি পতাকা টানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে টাকা সংগ্রহ করেন শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা- লাব্বাইক লাব্বাইক, লাব্বাইক ইয়া আকসা; ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি; ইন্তিফাদা ইন্তিফাদা, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ; জায়োনবাদ নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তিপাক; ফিলিস্তিনের বীর সেনারা, লও লও লও সালাম; বাংলাদেশের পক্ষ থেকে, লও লও লও সালাম ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় স্লোগানের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের সমর্থনে কবিতা আবৃত্তি করতে শোনা যায়।

মার্চে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থী আল আমিন জানান, ফিলিস্তিনে ইসরায়েল যে অমানবিক অত্যাচার করছে সেটা অত্যন্ত মর্মান্তিক। সেখানে মানুষ ঘুমানোর আগে চিন্তা করে আগামী দিনের সকাল দেখতে পারবে কি না। মানবাধিকারের কি বেহাল দশা। নির্বিচারে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা এর অবসান চাই।  আমরা জানিয়ে দিতে চাই আমরা ফিলিস্তিনের পাশে আছি। এজন্যই আজকের এই কর্মসূচি।

শিক্ষার্থী নুসরাত তাবাসসুম বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের আজাদী জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজকের এই মার্চে অংশগ্রহণ করেছি। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের জনগণকে ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করার অনুরোধ জানাই। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণের পাশে থাকার অনুরোধ জানাই।

মার্চ ফর প্যালেস্টাইনে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জয়েন উদ্দিন তন্ময় ‘ইন্তিফাদা’ কবিতা আবৃত্তি করেন।

কবি হাসান রুবায়েত লাব্বাইক ‘লাব্বাইক আল-আকসা’ কবিতা পাঠ করেন। সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী অরূপ রাহি ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ, মা-বোনেরা অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। একজন মুসলিম হিসেবে তাদের ব্যথাটা আমরা অনুভব করতে পারি। বাংলাদেশ সরকারও স্বাধীনতালগ্ন থেকেই ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আসছে। আমরা ফিলিস্তিনিদের এই নির্যাতন অত্যাচারের চিরস্থায়ী সমাধান চাই।

উল্লেখ্য, ২৯ নভেম্বর ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি দিবস। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২৯ নভেম্বরকে ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস হিসেবে গ্রহণ করে। এর ঠিক ১০ বছর পরে ১৯৮৭ সালের ২৯ নভেম্বর ‘ইউনাইটেড নেশনস পার্টিশন প্ল্যান ফর প্যালেস্টাইন’ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এরপর থেকেই মূলত এ দিনটি ‘আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবস’ হিসেবে সারা বিশ্বে পালিত হয়ে আসছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ঢাবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ উপলক্ষে বিশাল গণজমায়েত

Update Time : ০৪:৪৮:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবসে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।কর্মসূচিতে তারা বিশাল পতাকা নিয়ে সাংস্কৃতিক সেগমেন্ট ও শোভাযাত্রার আয়োজন করেন।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ১২ টায় ঢাবির সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একত্রিত হয়ে সেখান থেকে মার্চ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। 

শোভাযাত্রাটি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে ভিসি চত্বর থেকে ফুলার রোড হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

মার্চ ফর প্যালেস্টাইনের আজকের এই পতাকাটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে ফিলিস্তিনের পক্ষে সবচেয়ে বড় পতাকা বলে অভিহিত করেছেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে ফিলিস্তিনের বড় একটি পতাকা টানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে টাকা সংগ্রহ করেন শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা- লাব্বাইক লাব্বাইক, লাব্বাইক ইয়া আকসা; ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি; ইন্তিফাদা ইন্তিফাদা, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ; জায়োনবাদ নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তিপাক; ফিলিস্তিনের বীর সেনারা, লও লও লও সালাম; বাংলাদেশের পক্ষ থেকে, লও লও লও সালাম ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় স্লোগানের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের সমর্থনে কবিতা আবৃত্তি করতে শোনা যায়।

মার্চে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থী আল আমিন জানান, ফিলিস্তিনে ইসরায়েল যে অমানবিক অত্যাচার করছে সেটা অত্যন্ত মর্মান্তিক। সেখানে মানুষ ঘুমানোর আগে চিন্তা করে আগামী দিনের সকাল দেখতে পারবে কি না। মানবাধিকারের কি বেহাল দশা। নির্বিচারে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা এর অবসান চাই।  আমরা জানিয়ে দিতে চাই আমরা ফিলিস্তিনের পাশে আছি। এজন্যই আজকের এই কর্মসূচি।

শিক্ষার্থী নুসরাত তাবাসসুম বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের আজাদী জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজকের এই মার্চে অংশগ্রহণ করেছি। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের জনগণকে ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করার অনুরোধ জানাই। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণের পাশে থাকার অনুরোধ জানাই।

মার্চ ফর প্যালেস্টাইনে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জয়েন উদ্দিন তন্ময় ‘ইন্তিফাদা’ কবিতা আবৃত্তি করেন।

কবি হাসান রুবায়েত লাব্বাইক ‘লাব্বাইক আল-আকসা’ কবিতা পাঠ করেন। সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী অরূপ রাহি ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ, মা-বোনেরা অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। একজন মুসলিম হিসেবে তাদের ব্যথাটা আমরা অনুভব করতে পারি। বাংলাদেশ সরকারও স্বাধীনতালগ্ন থেকেই ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আসছে। আমরা ফিলিস্তিনিদের এই নির্যাতন অত্যাচারের চিরস্থায়ী সমাধান চাই।

উল্লেখ্য, ২৯ নভেম্বর ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি দিবস। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২৯ নভেম্বরকে ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস হিসেবে গ্রহণ করে। এর ঠিক ১০ বছর পরে ১৯৮৭ সালের ২৯ নভেম্বর ‘ইউনাইটেড নেশনস পার্টিশন প্ল্যান ফর প্যালেস্টাইন’ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এরপর থেকেই মূলত এ দিনটি ‘আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবস’ হিসেবে সারা বিশ্বে পালিত হয়ে আসছে।