ক্রান্তিকালেও নিস্তেজ ঢাবি ছাত্রদল ; ‘একতার অভাব’ বলছেন কর্মীরা

  • Update Time : ০২:৪৪:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ নভেম্বর ২০২৩
  • / 146

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

নিঃসন্দেহে রাজনীতির অন্যতম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো। এখন তাদের চ্যালেঞ্জ সরকার পতনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন করা। এ ধরনের চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে গ্রুপিং ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা তাদের। কিছু ক্ষেত্রে তা লক্ষ্য করা গেলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদল যেন একেবারেই নিস্তেজ। ‘একতার অভাবে’র কথা উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করছেন নেতাকর্মীদের কেউ কেউ।

যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে দেশব্যাপী সরকার পতনের আন্দোলন চললেও ঢাবি ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক তেমন শক্ত কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি শাখাটি। মাঝে মধ্যে পোস্টারিং ও ঝটিকা মিছিল দেখা গেলেও তা যেন তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই মনে করিয়ে দেয়।

সর্বশেষ ঢাবি শাখা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয় গত ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর । ঢাবি ছাত্রদল সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলে অন্তত ছয়টি পক্ষ রয়েছে। সাধারণত কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ইচ্ছায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি হয় না। পক্ষগুলোর শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সমন্বয় করেই কমিটি করা হয়। কিন্তু এবারে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ইচ্ছানুযায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাই এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই চাপা অসন্তোষ ছিল সক্রিয় কয়েকটি গ্রুপের মধ্যে। এজন্য ঢাবি ছাত্রদলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে আসেনা কিছু গ্রুপ ।

নবগঠিত এই কমিটির নেতারা (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে শুভেচ্ছা জানাতে আসলে ক্যাম্পাসে মারধরের শিকার হন । এর পর থেকে ক্যাম্পাসে আলাদাভাবে রাজনৈতিক আড্ডা ও অন্যান্য কার্যক্রম চালাতে থাকে ঢাবি ছাত্রদল । এমনকি একই ইস্যুকে কেন্দ্র করে দুই-তিনটি করে মিছিল বা প্রোগ্রাম দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে ।

পরে ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলে গ্রুপিংয়ের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব ও বিভিন্ন চাপে ধীরে ধীরে এক ব্যানারে কাজ করা শুরু করলেও বিভিন্ন কারণে গ্রুপিংয়ের রাজনীতি বারবার দৃশ্যমান হচ্ছে।

যার ফলে ছাত্রদলের এই গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে সক্রিয় কর্মী সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক হলেও দলের মূল ব্যানারে হাতে গোণা বিশ থেকে পঁচিশজন নিয়ে কর্মসূচি করতে হচ্ছে নেতাদের। তাই পর্যাপ্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও জনশক্তির অভাবে ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে প্রোগ্রাম না করতে পারার কথা ইতোমধ্যেই স্বীকার করেছেন ঢাবি ছাত্রদল সম্পাদক আরিফুল ইসলাম।

এদিকে ঢাবি ছাত্রদলের এসব কর্মসূচি নিয়েও রয়েছে সমালোচনা । ঢাবি শাখা ছাত্রদল সর্বশেষ হরতাল ও অবরোধের সমর্থনে দু’টি ঝটিকা মিছিল করেছে চানখারপুল শেখ হাসিনা বার্ণ ইন্সটিটিউটের পাশে এবং কাঁটাবন ঢাল এলাকায়। যেই মিছিল দুটিতে সর্বসাকুল্যে উপস্থিতি ছিল ২০-২৫ জন। আর মিছিলের স্থায়িত্ব এক মিনিটের বেশি নয় ।

স্বল্প সময়ের এই মিছিলেও সামনে দাঁড়ানো নিয়ে ধাক্কাধাক্কি, সভাপতি-সম্পাদককে ঠেলে পিছনে সরিয়ে দেয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছে ।

ঢাবি ছাত্রদলের গ্রুপিংয়ের বিষয়টি আবারও সামনে আসে গত ২৩ সেপ্টেম্বর। ওই দিন গভীর রাতে ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান খন্দকার অনিকের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন, কলাভবন, ডাকসু ক্যাফেটেরিয়াসহ বিভিন্ন দেয়ালে ছাত্রদলের বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত গ্রাফিতি করেন । কিন্তু এই গ্রাফিতির ছবি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করলেও ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানতেন না ।

ক্যাম্পাসের মধ্যে গত ৫ নভেম্বর দিবাগত রাত ও ভোর বেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশ ফটকে তালা দেওয়া ও পোস্টারিং কর্মসূচি পালন করে ঢাবি ছাত্রদল। প্রায় ৮-১০ টি গেটে তালা দিলেও এই কর্মসূচি তারা পালন করে গোপনে। আবার সকাল হলেই এসব তালা ভেঙে ফেলে প্রবেশ ফটক উন্মুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের মত এমন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের এরূপ দশার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে দায়ী করছেন ছাত্রদল কর্মীরা । তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে স্বাধীনভাবে কোনো কাজ করতে বা সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না ঢাবি শাখা ছাত্রদল। যেকোনো বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে তাদের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় নেতারা কাজের অনুমতি দিচ্ছে না অথবা প্রস্তাবগুলো আমলে নিচ্ছে না। ফলে দীর্ঘ সময় পর একই ব্যানারে কাজ করা শাখার গ্রুপগুলো আবারো বিচ্ছিন্নভাবে নিজেদের মতো কর্মকাণ্ড পরিচালনা শুরু করেছে। ফলে শাখার অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের কয়েক জন নেতাকর্মী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ঢাবি ছাত্রদলের ব্যানারে কর্মসূচি করলেও শাখার নেতাদের না জানানোর ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়া বা জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারেনি শাখার সিনিয়র নেতারা। এটি অবশ্যই একটি বড় সাংগঠনিক ব্যর্থতা।

তবে ‘একতার অভাবে’র কথা অস্বীকার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল। তিনি বলেন, ছাত্রদল সবসময়ই ঐক্যবদ্ধ একটি ছাত্র সংগঠন। আমাদের মধ্যে এখন কোনো গ্রুপিং নেই। রাজনীতিতে যখন ক্রিটিক্যাল পরিস্থিতি বিরাজ করে তখন অনেকেই ঝুঁকি নিতে চায় না। দলের দুঃসময়ে যারা রাজনীতি করে অভ্যস্ত তারাই কেবল এসব কর্মসূচিতে আসে।

ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ক্ষমতাসীনরা অনেক সময় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহারা দেয়। সেক্ষেত্রে যার যার সুবিধাজনক স্থানে তারা মিছিলে অংশগ্রহণ করে। এগুলো গ্রুপিংয়ের কোনো বিষয় নয়।

ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম দৈনিক নওরোজকে বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব রয়েছে। এছাড়া নেতাকর্মীদের উপর একাধিক মামলা রয়েছে। তাই অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রোগ্রামে আসতে পারছেন না৷

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ক্রান্তিকালেও নিস্তেজ ঢাবি ছাত্রদল ; ‘একতার অভাব’ বলছেন কর্মীরা

Update Time : ০২:৪৪:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ নভেম্বর ২০২৩

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

নিঃসন্দেহে রাজনীতির অন্যতম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো। এখন তাদের চ্যালেঞ্জ সরকার পতনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন করা। এ ধরনের চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে গ্রুপিং ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা তাদের। কিছু ক্ষেত্রে তা লক্ষ্য করা গেলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদল যেন একেবারেই নিস্তেজ। ‘একতার অভাবে’র কথা উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করছেন নেতাকর্মীদের কেউ কেউ।

যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে দেশব্যাপী সরকার পতনের আন্দোলন চললেও ঢাবি ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক তেমন শক্ত কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি শাখাটি। মাঝে মধ্যে পোস্টারিং ও ঝটিকা মিছিল দেখা গেলেও তা যেন তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই মনে করিয়ে দেয়।

সর্বশেষ ঢাবি শাখা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয় গত ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর । ঢাবি ছাত্রদল সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলে অন্তত ছয়টি পক্ষ রয়েছে। সাধারণত কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ইচ্ছায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি হয় না। পক্ষগুলোর শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সমন্বয় করেই কমিটি করা হয়। কিন্তু এবারে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ইচ্ছানুযায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাই এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই চাপা অসন্তোষ ছিল সক্রিয় কয়েকটি গ্রুপের মধ্যে। এজন্য ঢাবি ছাত্রদলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে আসেনা কিছু গ্রুপ ।

নবগঠিত এই কমিটির নেতারা (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে শুভেচ্ছা জানাতে আসলে ক্যাম্পাসে মারধরের শিকার হন । এর পর থেকে ক্যাম্পাসে আলাদাভাবে রাজনৈতিক আড্ডা ও অন্যান্য কার্যক্রম চালাতে থাকে ঢাবি ছাত্রদল । এমনকি একই ইস্যুকে কেন্দ্র করে দুই-তিনটি করে মিছিল বা প্রোগ্রাম দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে ।

পরে ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলে গ্রুপিংয়ের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব ও বিভিন্ন চাপে ধীরে ধীরে এক ব্যানারে কাজ করা শুরু করলেও বিভিন্ন কারণে গ্রুপিংয়ের রাজনীতি বারবার দৃশ্যমান হচ্ছে।

যার ফলে ছাত্রদলের এই গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে সক্রিয় কর্মী সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক হলেও দলের মূল ব্যানারে হাতে গোণা বিশ থেকে পঁচিশজন নিয়ে কর্মসূচি করতে হচ্ছে নেতাদের। তাই পর্যাপ্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও জনশক্তির অভাবে ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে প্রোগ্রাম না করতে পারার কথা ইতোমধ্যেই স্বীকার করেছেন ঢাবি ছাত্রদল সম্পাদক আরিফুল ইসলাম।

এদিকে ঢাবি ছাত্রদলের এসব কর্মসূচি নিয়েও রয়েছে সমালোচনা । ঢাবি শাখা ছাত্রদল সর্বশেষ হরতাল ও অবরোধের সমর্থনে দু’টি ঝটিকা মিছিল করেছে চানখারপুল শেখ হাসিনা বার্ণ ইন্সটিটিউটের পাশে এবং কাঁটাবন ঢাল এলাকায়। যেই মিছিল দুটিতে সর্বসাকুল্যে উপস্থিতি ছিল ২০-২৫ জন। আর মিছিলের স্থায়িত্ব এক মিনিটের বেশি নয় ।

স্বল্প সময়ের এই মিছিলেও সামনে দাঁড়ানো নিয়ে ধাক্কাধাক্কি, সভাপতি-সম্পাদককে ঠেলে পিছনে সরিয়ে দেয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছে ।

ঢাবি ছাত্রদলের গ্রুপিংয়ের বিষয়টি আবারও সামনে আসে গত ২৩ সেপ্টেম্বর। ওই দিন গভীর রাতে ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান খন্দকার অনিকের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন, কলাভবন, ডাকসু ক্যাফেটেরিয়াসহ বিভিন্ন দেয়ালে ছাত্রদলের বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত গ্রাফিতি করেন । কিন্তু এই গ্রাফিতির ছবি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করলেও ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানতেন না ।

ক্যাম্পাসের মধ্যে গত ৫ নভেম্বর দিবাগত রাত ও ভোর বেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশ ফটকে তালা দেওয়া ও পোস্টারিং কর্মসূচি পালন করে ঢাবি ছাত্রদল। প্রায় ৮-১০ টি গেটে তালা দিলেও এই কর্মসূচি তারা পালন করে গোপনে। আবার সকাল হলেই এসব তালা ভেঙে ফেলে প্রবেশ ফটক উন্মুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের মত এমন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের এরূপ দশার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে দায়ী করছেন ছাত্রদল কর্মীরা । তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে স্বাধীনভাবে কোনো কাজ করতে বা সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না ঢাবি শাখা ছাত্রদল। যেকোনো বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে তাদের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় নেতারা কাজের অনুমতি দিচ্ছে না অথবা প্রস্তাবগুলো আমলে নিচ্ছে না। ফলে দীর্ঘ সময় পর একই ব্যানারে কাজ করা শাখার গ্রুপগুলো আবারো বিচ্ছিন্নভাবে নিজেদের মতো কর্মকাণ্ড পরিচালনা শুরু করেছে। ফলে শাখার অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের কয়েক জন নেতাকর্মী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ঢাবি ছাত্রদলের ব্যানারে কর্মসূচি করলেও শাখার নেতাদের না জানানোর ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়া বা জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারেনি শাখার সিনিয়র নেতারা। এটি অবশ্যই একটি বড় সাংগঠনিক ব্যর্থতা।

তবে ‘একতার অভাবে’র কথা অস্বীকার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল। তিনি বলেন, ছাত্রদল সবসময়ই ঐক্যবদ্ধ একটি ছাত্র সংগঠন। আমাদের মধ্যে এখন কোনো গ্রুপিং নেই। রাজনীতিতে যখন ক্রিটিক্যাল পরিস্থিতি বিরাজ করে তখন অনেকেই ঝুঁকি নিতে চায় না। দলের দুঃসময়ে যারা রাজনীতি করে অভ্যস্ত তারাই কেবল এসব কর্মসূচিতে আসে।

ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ক্ষমতাসীনরা অনেক সময় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহারা দেয়। সেক্ষেত্রে যার যার সুবিধাজনক স্থানে তারা মিছিলে অংশগ্রহণ করে। এগুলো গ্রুপিংয়ের কোনো বিষয় নয়।

ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম দৈনিক নওরোজকে বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব রয়েছে। এছাড়া নেতাকর্মীদের উপর একাধিক মামলা রয়েছে। তাই অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রোগ্রামে আসতে পারছেন না৷