ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : অজ্ঞাত কারণে এখনও শুরু হয়নি ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম

  • Update Time : ০১:০৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩
  • / 202

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) গত জুলাই মাস থেকে শিক্ষক মূল্যায়ন কার্যক্রম বা ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালুর কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তা এখনও চালু করা হয় নি।

গত বছরের ১ নভেম্বর ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় শিক্ষক মূল্যায়ন কার্যক্রম বা ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালুর সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

পরবর্তীতে এ বছরের জুলাই থেকে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালু করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান ঢাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

তবে জুলাই এর পর ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও আলোর মুখ দেখে নি শিক্ষক মূল্যায়ন প্রক্রিয়া৷

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিডি সমাচারকে বলেন, আমি এখন ঢাকার বাইরে আছি। ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে আমার জানা নেই।আইসিটি সেল এটির দায়িত্বে রয়েছে। এ বিষয়ে তারা আপডেট দিতে পারবে।

‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমের উদ্দেশ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ট্রেনিং বা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কি না প্রশ্ন করলে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি নেওয়া হয় নি। তবে বিভাগ পর্যায়ে শিক্ষকদের এ সিস্টেম সম্পর্কে অবহিতকরণ ও পরিচিত করা হয়েছে।

ঢাকায় ফিরে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটির চেষ্টা করা হবে বলেও বিডি সমাচারকে জানান উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ।

জানতে চাইলে ঢাবি আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান বিডি সমাচারকে বলেন, ঢাবি আইসিটি সেল ইতোমধ্যেই ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে এবং এই লক্ষ্যে প্রত্যেক বিভাগের প্রতিনিধিদের অনলাইন এবং অফলাইনে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত। এখন বিভাগগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, শিক্ষক মূল্যায়ন ব্যবস্থা বা ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম কার্যকর হলে অনলাইনে নির্ধারিত ফরমে ৫ টি সূচক ও সংশ্লিষ্ট উপসূচকের আলোকে সম্মানিত শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে পারবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার সামগ্রিক গুণগতমান উন্নয়ন ও শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে টিচিং ইভ্যালুয়েশন কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মতামত বিশিষ্ট জনদের।

সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের অভিমত, ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইন্টারঅ্যাকশন বাড়বে এবং শিক্ষকদের রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি বাড়বে।

পাশাপাশি এ ব্যবস্থা চালু হলে কোন শিক্ষক কেমন পড়ান, তাঁর কোর্সের বিষয়বস্তু কেমন, তিনি সময়মতো ক্লাসে যাচ্ছেন কি-না, কোর্স ম্যাটারিয়ালস সরবরাহ করছে কিনা, মিডটার্ম, এসাইনমেন্ট ঠিকমতো নিচ্ছেন কিনা এবং সেগুলো ঠিকমতো মূল্যায়ন হচ্ছে কিনা- এ সকল বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।

এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সামগ্রিক গুণগত মানোন্নয়ন ও শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে টিচিং ইভ্যালুয়েশন সিস্টেম কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : অজ্ঞাত কারণে এখনও শুরু হয়নি ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম

Update Time : ০১:০৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) গত জুলাই মাস থেকে শিক্ষক মূল্যায়ন কার্যক্রম বা ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালুর কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তা এখনও চালু করা হয় নি।

গত বছরের ১ নভেম্বর ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় শিক্ষক মূল্যায়ন কার্যক্রম বা ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালুর সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

পরবর্তীতে এ বছরের জুলাই থেকে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালু করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান ঢাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

তবে জুলাই এর পর ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও আলোর মুখ দেখে নি শিক্ষক মূল্যায়ন প্রক্রিয়া৷

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিডি সমাচারকে বলেন, আমি এখন ঢাকার বাইরে আছি। ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে আমার জানা নেই।আইসিটি সেল এটির দায়িত্বে রয়েছে। এ বিষয়ে তারা আপডেট দিতে পারবে।

‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমের উদ্দেশ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ট্রেনিং বা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কি না প্রশ্ন করলে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি নেওয়া হয় নি। তবে বিভাগ পর্যায়ে শিক্ষকদের এ সিস্টেম সম্পর্কে অবহিতকরণ ও পরিচিত করা হয়েছে।

ঢাকায় ফিরে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটির চেষ্টা করা হবে বলেও বিডি সমাচারকে জানান উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ।

জানতে চাইলে ঢাবি আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান বিডি সমাচারকে বলেন, ঢাবি আইসিটি সেল ইতোমধ্যেই ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে এবং এই লক্ষ্যে প্রত্যেক বিভাগের প্রতিনিধিদের অনলাইন এবং অফলাইনে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত। এখন বিভাগগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, শিক্ষক মূল্যায়ন ব্যবস্থা বা ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম কার্যকর হলে অনলাইনে নির্ধারিত ফরমে ৫ টি সূচক ও সংশ্লিষ্ট উপসূচকের আলোকে সম্মানিত শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে পারবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার সামগ্রিক গুণগতমান উন্নয়ন ও শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে টিচিং ইভ্যালুয়েশন কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মতামত বিশিষ্ট জনদের।

সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের অভিমত, ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইন্টারঅ্যাকশন বাড়বে এবং শিক্ষকদের রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি বাড়বে।

পাশাপাশি এ ব্যবস্থা চালু হলে কোন শিক্ষক কেমন পড়ান, তাঁর কোর্সের বিষয়বস্তু কেমন, তিনি সময়মতো ক্লাসে যাচ্ছেন কি-না, কোর্স ম্যাটারিয়ালস সরবরাহ করছে কিনা, মিডটার্ম, এসাইনমেন্ট ঠিকমতো নিচ্ছেন কিনা এবং সেগুলো ঠিকমতো মূল্যায়ন হচ্ছে কিনা- এ সকল বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।

এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সামগ্রিক গুণগত মানোন্নয়ন ও শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে টিচিং ইভ্যালুয়েশন সিস্টেম কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে ।