ছাত্রলীগের আলোচনা সভা বয়কট করে প্রতিবাদ জানালেন গণমাধ্যমকর্মীরা

  • Update Time : ১১:৩৩:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩
  • / 206

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি:

ছয় দফা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। উক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদানকালে ক্যামেরাম্যানরা মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে ভিডিও করায় সাংবাদিকদেরকে কটাক্ষ করেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। এর প্রতিবাদস্বরূপ উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন।

পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। উক্ত বিষয়টিকে তিনি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

আজ মঙ্গলবার(৬ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এ ঘটনা ঘটে।

আলোচনা সভার এক পর্যায়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডায়াসে আসেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। এসময় কয়েকজন ক্যামেরাম্যান ভিডিও করার জন্য মঞ্চে উঠে সৈকতের সামনে চলে আসেন। তখন তানভীর হাসান সৈকত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের সাংবাদিকদের দিনদিন বিবেক কমে যাচ্ছে। আমি কথা বলছি, আর তারা আমার সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে। এটা হচ্ছে যে, আমাদের অবক্ষয়। জাতিগতভাবে এটা একটা অবক্ষয়ের দৃষ্টান্ত।’

তখন সাংবাদিকদের কয়েকজন বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে সৈকত বলেন, ‘নো নো নো, আপনি আমার সামনে কেন ব্লক করবেন? দিস ইজ নট অ্যা ব্লগিং। ইউ নো? ব্লক কাকে বলে, ব্লগিং কাকে বলে, এটা সম্পর্কে জানেন? আপনি যদি জার্নালিজম সম্পর্কে জেনে থাকেন, ব্লক আর ব্লগিং সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। একজন বক্তব্য দেবে তার সামনে আপনি এসে ব্লক করে দাঁড়াতে পারেন না।’

এসময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন উপস্থিত ছিলেন। 

এক পর্যায়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন তাকে থামতে ইশারা করেন। সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানও চেয়ার থেকে উঠে তাকে থামার অনুরোধ করেন। তখনও সৈকত বলতে থাকেন, ‘না না, এটা জানতে হবে। এটা জেনারেল নলেজ। তাকে জানতে হবে।’

এমন আচরণে তানভীর হাসান সৈকতের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করেন উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক। তারা বলেন, টেলিভিশনের জন্য মূলত ভিডিও দরকার হয়, ক্যামেরাপারসনরা তো ভিডিও নেবেন। আজই শুধু ভিডিও নিয়েছে বিষয়টি এমন নয়। দর্শকসারির ভিডিও তো নিতে হবে। আর সৈকত পুরো সাংবাদিক সমাজ নিয়ে কথা বলেছেন, যেটি খুবই দুঃখজনক ।

তবে এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকত বলেন, আমার মনে হয় না আমি কোনো অন্যায় করেছি। আমি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলাম তখন কয়েকজন সাংবাদিক আমার সামনে দাঁড়িয়ে অডিয়েন্সের ভিডিও করছিলেন। এর ফলে আমাকে অডিয়েন্স দেখতে পারছিল না, আমিও তাদের দেখতে পাচ্ছিলাম না।

সৈকত আরও বলেন আমি কয়েকবার তাদের সরে যেতে বলি কিন্তু তারা শোনেননি। পরে আমি বলেছি সবার কমনসেন্স থাকা দরকার, কোথায় দাঁড়াতে হবে, কোথায় দাঁড়াতে হবে না এটা জানতে হবে। এটা বলে আমি কোনো অপরাধ করিনি।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই আলোচনা সভার প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত হন। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান এ আলোচনায় অংশ নেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ছাত্রলীগের আলোচনা সভা বয়কট করে প্রতিবাদ জানালেন গণমাধ্যমকর্মীরা

Update Time : ১১:৩৩:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি:

ছয় দফা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। উক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদানকালে ক্যামেরাম্যানরা মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে ভিডিও করায় সাংবাদিকদেরকে কটাক্ষ করেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। এর প্রতিবাদস্বরূপ উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন।

পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। উক্ত বিষয়টিকে তিনি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

আজ মঙ্গলবার(৬ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এ ঘটনা ঘটে।

আলোচনা সভার এক পর্যায়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডায়াসে আসেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। এসময় কয়েকজন ক্যামেরাম্যান ভিডিও করার জন্য মঞ্চে উঠে সৈকতের সামনে চলে আসেন। তখন তানভীর হাসান সৈকত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের সাংবাদিকদের দিনদিন বিবেক কমে যাচ্ছে। আমি কথা বলছি, আর তারা আমার সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে। এটা হচ্ছে যে, আমাদের অবক্ষয়। জাতিগতভাবে এটা একটা অবক্ষয়ের দৃষ্টান্ত।’

তখন সাংবাদিকদের কয়েকজন বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে সৈকত বলেন, ‘নো নো নো, আপনি আমার সামনে কেন ব্লক করবেন? দিস ইজ নট অ্যা ব্লগিং। ইউ নো? ব্লক কাকে বলে, ব্লগিং কাকে বলে, এটা সম্পর্কে জানেন? আপনি যদি জার্নালিজম সম্পর্কে জেনে থাকেন, ব্লক আর ব্লগিং সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। একজন বক্তব্য দেবে তার সামনে আপনি এসে ব্লক করে দাঁড়াতে পারেন না।’

এসময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন উপস্থিত ছিলেন। 

এক পর্যায়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন তাকে থামতে ইশারা করেন। সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানও চেয়ার থেকে উঠে তাকে থামার অনুরোধ করেন। তখনও সৈকত বলতে থাকেন, ‘না না, এটা জানতে হবে। এটা জেনারেল নলেজ। তাকে জানতে হবে।’

এমন আচরণে তানভীর হাসান সৈকতের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করেন উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক। তারা বলেন, টেলিভিশনের জন্য মূলত ভিডিও দরকার হয়, ক্যামেরাপারসনরা তো ভিডিও নেবেন। আজই শুধু ভিডিও নিয়েছে বিষয়টি এমন নয়। দর্শকসারির ভিডিও তো নিতে হবে। আর সৈকত পুরো সাংবাদিক সমাজ নিয়ে কথা বলেছেন, যেটি খুবই দুঃখজনক ।

তবে এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকত বলেন, আমার মনে হয় না আমি কোনো অন্যায় করেছি। আমি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলাম তখন কয়েকজন সাংবাদিক আমার সামনে দাঁড়িয়ে অডিয়েন্সের ভিডিও করছিলেন। এর ফলে আমাকে অডিয়েন্স দেখতে পারছিল না, আমিও তাদের দেখতে পাচ্ছিলাম না।

সৈকত আরও বলেন আমি কয়েকবার তাদের সরে যেতে বলি কিন্তু তারা শোনেননি। পরে আমি বলেছি সবার কমনসেন্স থাকা দরকার, কোথায় দাঁড়াতে হবে, কোথায় দাঁড়াতে হবে না এটা জানতে হবে। এটা বলে আমি কোনো অপরাধ করিনি।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই আলোচনা সভার প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত হন। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান এ আলোচনায় অংশ নেন।