ঢাবিতে নতুন নীতিমালা : গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি প্রমাণিত হলে হতে পারে চাকরিচ্যুতি
- Update Time : ০৬:১৮:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩
- / 340
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি প্রমাণিত হলে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী চাকরিচ্যুতি, ডিগ্রি বাতিল, পদাবনতি, দীর্ঘ সময় কাজ থেকে বিরত রাখা এবং জরিমানাসহ বিভিন্ন শাস্তির বিধান সংক্রান্ত নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।
গবেষণা ও প্রকাশনায় স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘দ্য রুলস ফর দ্য প্রিভেনশন অব প্লেইজারিজম’ শীর্ষক এই নীতিমালাটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ নীতিমালার অনুমোদন দেওয়া হয়।
সিন্ডিকেটে অনুমোদিত চৌর্যবৃত্তির নীতিমালার বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্যরা বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘দ্য রুলস ফর দ্য প্রিভেনশন অব প্লেইজারিজম’ শীর্ষক নীতিমালাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে ডিনস কমিটির সভায় এটি উত্থাপন করা হয়।
গতকাল সিন্ডিকেটও এর অনুমোদন দেয়। বাংলাদেশে এ ধরনের নীতিমালা এটাই প্রথম। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি প্রমাণিত হলে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী চাকরিচ্যুতি, ডিগ্রি বাতিল, পদাবনতি, দীর্ঘ সময় কাজ থেকে বিরত রাখা এবং জরিমানাসহ বিভিন্ন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে নীতিমালায়।
পাশাপাশি গতকালের সিন্ডিকেট সভায় অননুমোদিতভাবে দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করার অভিযোগে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সহকারী অধ্যাপক ক্ষণিকা গোপের শাস্তি নির্ধারণে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে।
দুই সিন্ডিকেট সদস্যের ভাষ্য, বিনা অনুমতিতে দীর্ঘ সময় বিদেশে অবস্থান করার অভিযোগ জানাজানি হলে গত বছর ক্ষণিকার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। গতকালের সিন্ডিকেট সভায় সেই কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। পরে শাস্তি নির্ধারণে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। যদিও গত বছরের অক্টোবরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক, অধ্যাপক মোসা. রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে গবেষণা প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ অধিকতর তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাবি সিন্ডিকেটের দুজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোসা. রেবেকা সুলতানা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের জার্নাল অব সোশিওলজির (সমাজবিজ্ঞান পত্রিকা) ২০২০ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সংখ্যায় একটি প্রবন্ধ লেখেন। পরে গত বছরের নভেম্বরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের সভাপতি মো. আখতারুজ্জামানের কাছে একটি চিঠি লেখেন। ফরিদ আহমেদ তাঁর চিঠিতে প্রবন্ধটিতে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ তোলেন। ফরিদ আহমেদ দাবি করেন, প্রবন্ধটিতে রেবেকা সুলতানা কমপক্ষে ৫৩ শতাংশ চৌর্যবৃত্তি করেছেন। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।