হিন্দি গান-সিনেমা দেখেই অফিস করেন বশেমুরবিপ্রবি’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা
- Update Time : ০৫:৫২:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ মার্চ ২০২২
- / 251
বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিহার কান্তি বিশ্বাস অফিসে নিয়মিত হিন্দি গান বাজিয়ে অফিস করেন।
‘ ক্যায়সা বানি, ক্যায়সা বানি,,, ফুলরে বিনা চাটনি ক্যায়সা বানি,,,, ‘তুমছে মুহাব্বাত হায়,,,,, এমন পুরানো গান প্রায় বিলুপ্তির পথে। এসব গানের চল প্রায় উঠে গেলেও নিয়মিত অফিস রুমে উচ্চশব্দে এরকম গান বাজান তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায় যে, ঐ কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস আওয়ারে হিন্দি গান বাজিয়ে থাকেন। শিক্ষার্থী ও তার সহকর্মীদের দাবি শুধু গান নয়, অফিস চলাকালীন সময়ে নিয়মিত হিন্দি সিনেমা দেখা তার রোজকার অভ্যাস। এছাড়াও ঐ বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে তার গালিগালাজসহ অসদাচরণ প্রদর্শনের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নীহার কান্তি বিশ্বাসের এমন অসদাচরণের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এক শিক্ষার্থী ( নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) মার্কেটিং বিভাগের কুড়িয়ে পাওয়া বই জমা দিতে গেলে এসব চিত্র দৃষ্টি গোচর হয়। এসময় ঐ শিক্ষার্থীদের সাথে উচ্চস্বরে বাকবিতন্ডাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি নেতিবাচক কথা বলতে থাকেন। এসময় ঐ শিক্ষার্থী ও সাথে থাকা তার বন্ধু বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক ফোরামের এক সদস্যকে তিনি মানসিক নির্যাতন করেন৷ তারা অফিস রুমে গান বাজানো ও অসদাচরণের প্রতিবাদ জানাতে গেলে একপর্যায়ে তিনি তাদের প্রতি চড়াও হয়ে ওঠেন। ক্ষিপ্ত হয়ে বলতে থাকেন, আমার অফিসে আমি গান শুনি, যা ইচ্ছে তাই করব। আমি নীহার। গোপালগঞ্জ আমার বাড়ি। কেউ আমার কিছু করতে চাইলে করুক। কোন শিক্ষার্থী সাংবাদিক এগুলো দেখবার সময় আমার নাই।
পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা রুমের সামনে থাকা মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান তাপস বালাকে তাৎক্ষণিক নিয়ে আসলেও ঐ কর্মকর্তা গান শোনা অব্যাহত রাখেন ।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ( নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, “গত মঙ্গলবার (৮ফেব্রুয়ারি) আমাদের ভাইভা চলছিল। ভাইভা শেষে ফেরার পথে মার্কেটিং বিভাগের একটি বই কুড়িয়ে পাই৷ পরে তা জমা দিতে গেলে ঐ বিভাগের অফিস কর্মকর্তা নীহার কান্তি বিশ্বাস আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহারসহ হুমকি দেন। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
মার্কেটিং বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী নবী বলেন, “নীহার কান্তি বিশ্বাসের নাম আমাদের বিভাগের প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে এক বিরক্তির নাম। তিনি প্রতিটি শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। তিনি সবসময় স্থানীয় পাওয়ার দেখানোর চেষ্টা করেন। এবিষয়ে আমাদের শিক্ষকেরাও অবহিত।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নীহার কান্তি বিশ্বাস বলেন,”গণমাধ্যমে কোন মতামত আমি করতে চাই না আমার অফিসে আমি গান শুনি কি না শুনি এটা জবাবদিহিতা আমার কেন দেওয়া লাগবে? এ নিয়ে আমি রেজিস্ট্রারের সাথে বুঝব।”
মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান তাপস বালা বলেন, “আমাদের বিভাগের অফিস কর্মকর্তার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ পত্র দিয়েছে এটা জানাতে পেরেছি। সিসিটিভির ফুটেজ ও রেজিস্ট্রারের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মোরাদ হোসেন জানান, “ভুক্তভোগী শিক্ষর্থীদের পক্ষে অভিযোগ পত্র জমা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুবের সাথে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, এর আগে নীহার কান্তি বিশ্বাস অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি পদন্নোতি পেয়ে অফিস কর্মকর্তা হয়েছেন ।