অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে: ভূমি সচিব
- Update Time : ০৯:২১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
- / 159
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ বলেছেন অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলোর যথাযথ সংশোধন প্রস্তাব দেওয়া হবে যেন পরবর্তীতে আর এ বিষয়ে সমস্যার সৃষ্টি না হয়। মাননীয় ভূমিমন্ত্রীর এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে।
.
ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ আজ সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১ এর অধিকতর সংশোধনী’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
.
উল্লেখ্য, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১ এর উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকালে চিহ্নিত সমস্যাগুলো হচ্ছে – (ক) অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজ কর্তৃক প্রদত্ত কতিপয় সিদ্ধান্ত/রায় আইনগত কারণে পরবর্তী আপিলের সুযোগ হতে বঞ্চিত রয়েছে; (খ) প্রকাশিত প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তির (‘ক’ lতপশিল) তালিকায় কতিপয় ভুল হওয়া এবং কতিপয় সম্পত্তি বাদ পড়ে যাওয়ায় জনস্বার্থে প্রকাশিত তালিকার সংশোধনী এবং বাদ পড়া সম্পত্তির তালিকা প্রকাশের প্রয়োজন রয়েছে।
.
উক্তরূপ সংশোধন ও তালিকা প্রকাশের সময়সীমা ২৬/০২/২০১৪ তারিখে অতিক্রান্ত হয়েছে। (গ) প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তিতে আইনের ধারা ১০ এর বিধান মোতাবেক দাবীদারগণের দাবীর আইনগত সময়সীমা বেশিরভাগক্ষেত্রে ৩১/১২/২০১৩ তারিখের এবং সংশোধনী তালিকার ক্ষেত্রে ২৩/১২/২০১৪ তারিখে অতিক্রান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক দাবীদার দাবী করতে পারছে না। (ঘ) বিদ্যমান lআইনের ধারা ১৮ এর উপধারা (৪) অনুযায়ী সিদ্ধান্ত বা রায় প্রদানের ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে আপিলের বিধান রয়েছে।
.
এক্ষেত্রে বিলম্বে রায় দেয়ায় বা আদেশের সার্টিফায়েড কপি বিলম্বে প্রদান করায় আইন অনুযায়ী ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে আপিল করা সম্ভব হয় না। (ঙ) বিদ্যমান আইনের ধারা ২৬ এর বিধান অনুযায়ী অদাবীকৃত এবং দাবী অপ্রমাণিত সম্পত্তিকে সরকারি সম্পত্তি বলা হয়েছে। কিন্তু উক্ত সরকারি সম্পত্তির রেকর্ড সংশোধন ও নিষ্পত্তির বিষয়ে স্পষ্ট বিধান নেই।
.
ভূমি মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ সালেহউদ্দীন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আজকের কর্মশালায় ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সহকারী কমিশনার (ভূমি), ভিপি কৌসুলি, অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। ১৯ জন অংশগ্রহণকারী চারটি পৃথক দলে ভাগ হয়ে অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক উপর্যুক্ত পাঁচটি সমস্যার সমাধান প্রস্তাব তৈরি ও উপস্থাপনা করেন।
.
উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে যেসকল লোক পাকিস্তান ত্যাগ করে ভারতে গিয়ে বসবাস করছিল তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার শত্রু সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭৪ সাল থেকে শত্রু সম্পত্তির নতুন নাম দেওয়া হয় অর্পিত সম্পত্তি। অর্পিত সম্পত্তি হিসাবে তালিকাভুক্ত সম্পত্তিসমূহ বৈধ মালিকদের নিকট প্রত্যর্পণের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রথম মেয়াদে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১’ প্রণয়ন করা হয়।
.
পরবর্তীতে অর্পিত সম্পত্তিসমূহ আইনানুগভাবে প্রকৃত মালিককে প্রত্যর্পণের জন্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন অর্পিত সম্পত্তি ‘ক’ তালিকার গেজেটে এবং অন্যান্য অর্পিত সম্পত্তি ‘খ’ তালিকার গেজেটে প্রকাশ করা হয়। স্বল্প সময়ের মধ্যে এ বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করতে গিয়ে ক্ষেত্রভেদে প্রকাশিত গেজেটে কিছু ভুল-ত্রুটি থেকে যায় এবং ক্ষেত্রভেদে কতিপয় প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তি প্রকাশিত গেজেটে বাদ পড়ে যায়।
.
উপর্যুক্ত প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তির বাদপড়া ও সংশোধনী তালিকার গেজেট প্রকাশের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা একাধিকবার আইন সংশোধনের মাধ্যমে বৃদ্ধি করে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। আইন সংশোধনের মাধ্যমে বর্ধিত সময়সীমার (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪) মধ্যে কতিপয় প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তি বাদপড়া ও সংশোধনী তালিকার গেজেট প্রকাশের বহির্ভূত থাকে। একাধিকার বাদপড়া ও সংশোধনী তালিকার গেজেট প্রকাশের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা বৃদ্ধি করা হলেও প্রায়শই ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
.
সংশ্লিষ্ট সেবাগ্রহীতা ও বৈধ মালিকগণ যেন অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক সমস্যায় দ্রুত সমাধান পেতে পারেন সেজন্য আইনে আরও কিছু সংশোধনী আনার কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।
Tag :