স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যা থাকছে

  • Update Time : ০১:১৫:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / 139

‘একুশ’ থেকে একাত্তর ছিল সংগ্রামমুখর বাংলা। এরপর একাত্তর থেকে আরেক একুশ- উন্নয়ন ও এগিয়ে যাওয়ার এক সুদীর্ঘ পরিক্রমা। এবারের একুশ তথা ২০২১ মানেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এক এক করে ৫০ বছর পার করতে চলেছে স্বাধীন বাংলাদেশ। উদযাপনটা যে বাঁধ মানবে না, তা তো জানা কথা! আর তাই এবার থাকছে বছরব্যাপী বিশেষ আয়োজন।

শুরুই হবে টানা ১০ দিনের চোখ ধাঁধানো অনুষ্ঠান দিয়ে। স্বাধীনতার ১০ দিন আগেই কিন্তু ১৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন! উৎসবও ডানা মেলে দ্বিগুণ! স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও সেই সঙ্গে মুজিববর্ষ- জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে যে অনুষ্ঠানটা হতে যাচ্ছে তার খসড়া ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত।

উৎসব শুরুর অনুষ্ঠান চলবে ১৭ মার্চ থেকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২৬ মার্চ পর্যন্ত। আর এতে ১৯৭১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেডিসন স্কয়ারে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর একমাত্র জীবিত শিল্পী বব ডিলানকে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। আসতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। বিদেশিদের মধ্যে যারা ঢাকায় আসতে পারবেন না তাদের ভিডিও বার্তা সংগ্রহের কাজও চলছে। প্রচার করা হবে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। যাবতীয় আয়োজনে ইতোমধ্যেই সম্মতি মিলেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানিয়েছেন এসব তথ্য।

কমিটি সূত্রে আরও জানা গেছে, এ দুটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি দিক নিয়ে এখনও নানা পরিকল্পনা চলছে। চলছে বৈঠকে পর বৈঠক। অনুষ্ঠান আয়োজনসহ নিরাপত্তার বিভিন্ন দিকও সাজানো হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে এ অনুষ্ঠান হবে। তবে জেলা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশনগুলোও বাদ যাবে না। সেখানেও চলবে উৎসব। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠান যেন চলতে থাকে সেই নির্দেশ দেওয়ার কাজও চলছে। সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সকল বিভাগ, জেলা উপজেলা এমনকি সিটি করপোরেশনগুলোকে এসব অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

২০২০ সালের মার্চে শুরু হওয়া করোনা মহামারির কারণে দেশের সকল প্রতিষ্ঠান টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটির কারণে বন্ধ ছিল। এ কারণে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কোনও বড় অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়নি।

এখন করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে বলে ১৭ মার্চ থেকে উদযাপনের সকল আয়োজন চূড়ান্ত করছে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। সরকার ২০১৩ সাল থেকে দিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করছে। গত বছর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির জন্মশতবর্ষ স্মরণীয় করে রাখতে ‘মুজিব শতবর্ষ’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিন থেকে শতবর্ষের বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল। অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারিত ছিল ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পর্যন্ত। করোনাভাইরাসের কারণে পরিকল্পিত বড় অনুষ্ঠানগুলো হয়নি। সে কারণে মুজিব শতবর্ষের মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যা থাকছে

Update Time : ০১:১৫:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১

‘একুশ’ থেকে একাত্তর ছিল সংগ্রামমুখর বাংলা। এরপর একাত্তর থেকে আরেক একুশ- উন্নয়ন ও এগিয়ে যাওয়ার এক সুদীর্ঘ পরিক্রমা। এবারের একুশ তথা ২০২১ মানেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এক এক করে ৫০ বছর পার করতে চলেছে স্বাধীন বাংলাদেশ। উদযাপনটা যে বাঁধ মানবে না, তা তো জানা কথা! আর তাই এবার থাকছে বছরব্যাপী বিশেষ আয়োজন।

শুরুই হবে টানা ১০ দিনের চোখ ধাঁধানো অনুষ্ঠান দিয়ে। স্বাধীনতার ১০ দিন আগেই কিন্তু ১৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন! উৎসবও ডানা মেলে দ্বিগুণ! স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও সেই সঙ্গে মুজিববর্ষ- জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে যে অনুষ্ঠানটা হতে যাচ্ছে তার খসড়া ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত।

উৎসব শুরুর অনুষ্ঠান চলবে ১৭ মার্চ থেকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২৬ মার্চ পর্যন্ত। আর এতে ১৯৭১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেডিসন স্কয়ারে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর একমাত্র জীবিত শিল্পী বব ডিলানকে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। আসতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। বিদেশিদের মধ্যে যারা ঢাকায় আসতে পারবেন না তাদের ভিডিও বার্তা সংগ্রহের কাজও চলছে। প্রচার করা হবে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। যাবতীয় আয়োজনে ইতোমধ্যেই সম্মতি মিলেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানিয়েছেন এসব তথ্য।

কমিটি সূত্রে আরও জানা গেছে, এ দুটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি দিক নিয়ে এখনও নানা পরিকল্পনা চলছে। চলছে বৈঠকে পর বৈঠক। অনুষ্ঠান আয়োজনসহ নিরাপত্তার বিভিন্ন দিকও সাজানো হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে এ অনুষ্ঠান হবে। তবে জেলা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশনগুলোও বাদ যাবে না। সেখানেও চলবে উৎসব। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠান যেন চলতে থাকে সেই নির্দেশ দেওয়ার কাজও চলছে। সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সকল বিভাগ, জেলা উপজেলা এমনকি সিটি করপোরেশনগুলোকে এসব অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

২০২০ সালের মার্চে শুরু হওয়া করোনা মহামারির কারণে দেশের সকল প্রতিষ্ঠান টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটির কারণে বন্ধ ছিল। এ কারণে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কোনও বড় অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়নি।

এখন করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে বলে ১৭ মার্চ থেকে উদযাপনের সকল আয়োজন চূড়ান্ত করছে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। সরকার ২০১৩ সাল থেকে দিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করছে। গত বছর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির জন্মশতবর্ষ স্মরণীয় করে রাখতে ‘মুজিব শতবর্ষ’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিন থেকে শতবর্ষের বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল। অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারিত ছিল ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পর্যন্ত। করোনাভাইরাসের কারণে পরিকল্পিত বড় অনুষ্ঠানগুলো হয়নি। সে কারণে মুজিব শতবর্ষের মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।