আজ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন

  • Update Time : ০১:৪২:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১
  • / 130

উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হতে যাচ্ছে। এই সিটির সবকটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ করা হবে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে আজ বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ। ইতোমধ্যে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটানাও ঘটেছে।

তবে সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর।

নির্বাচন ঘিরে এমন টানটান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রচার। মাঠে নেমেছেন পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরাও। এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী বাদে আরও চারটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে চসিক নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা ও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী একই বছরের ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটিতে ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। করোনা মহামারির কারণে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে গত ২১ মার্চ প্রথম দফায় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন স্থগিত করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১৪ জুলাই পুনরায় চসিক নির্বাচন স্থগিত করা হয়।

এই সময়ে চসিকের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে। প্রশাসকের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে ২৭ জানুয়ারি ভোটের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

চসিক নির্বাচন প্রসঙ্গে সিনিয়র সচিব বলেন, রিটার্নিং অফিসার এবং পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাহিদা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সে পরিমাণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং তাদের কাছে বাজেটও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। কেউ শাস্তিযোগ্য অপরাধ করলে তাকে শাস্তি দিতে প্রতি দুটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। আমরা মনে করি যে, যত রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন তার সবটুকুই সেখানে নেওয়া আছে।

তিনি বলেন, বাইরের লোক যারা ওই এলাকার ভোটার না, ভোটকেন্দ্রে এসে গণ্ডগোল করতে পারে— এ রকম কাজ যাতে করতে না পারে সেজন্য শহরে প্রবেশ করার যে রাস্তাগুলো আছে সেখানে পুলিশি পাহারা থাকবে; যাতে করে ভোটার ছাড়া অন্যকোনো লোকজন ভোটকেন্দ্রে এসে কোনো গণ্ডগোল করতে না পারে বা ভোটকেন্দ্রের বাইরেও যাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো রকম বাধার সৃষ্টি করতে না পারে। আমরা মনে করি যে, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে করার জন্য যা যা করার দরকার তার সব ধরনের ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশন নিয়েছে।

সহিংসতার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা প্রথম দিকে হয়েছিল। তারপর সেখানে সবাই খুব সতর্ক হয়ে গেছেন। এরপর আল্লাহর রহমতে আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা আশা করি ওই ধরনের কোনো ঘটনা আর ঘটবে না। যাতে না ঘটে তার জন্য এই প্রস্তুতি। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১০ হাজারের উপরে সদস্য সেখানে নিয়োজিত আছেন। ওই ধরনের আর কোনো ঘটনা ঘটবে না বলেই আমরা মনে করি।

সচিব আরও বলেন, সবসময় গোয়েন্দা বিভাগ থেকে আমাদের জানানো হয় কোন কোন কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা যখন সেই কেন্দ্রগুলোর তালিকা দেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং পুলিশ প্রশাসন সেই অনুযায়ী সদস্য মোতায়েন করেন। যেখানে সাধারণ সেখানে ১৬ জন করে এবং যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে ১৮ জন থাকবেন এবং সেখানে অস্ত্র বেশি থাকবে। এছাড়াও টহলে যারা থাকবেন এবং টহল ছাড়াও কিছু কিছু এলাকা নিয়ে জোনের মতো করেও থাকবে। পাঁচ বা দশটা কেন্দ্র নিয়ে একটি জোন থাকবে। সেখান থেকে প্রয়োজনে যেন সহযোগিতা করতে পারেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


আজ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন

Update Time : ০১:৪২:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১

উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হতে যাচ্ছে। এই সিটির সবকটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ করা হবে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে আজ বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ। ইতোমধ্যে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটানাও ঘটেছে।

তবে সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর।

নির্বাচন ঘিরে এমন টানটান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রচার। মাঠে নেমেছেন পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরাও। এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী বাদে আরও চারটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে চসিক নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা ও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী একই বছরের ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটিতে ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। করোনা মহামারির কারণে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে গত ২১ মার্চ প্রথম দফায় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন স্থগিত করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১৪ জুলাই পুনরায় চসিক নির্বাচন স্থগিত করা হয়।

এই সময়ে চসিকের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে। প্রশাসকের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে ২৭ জানুয়ারি ভোটের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

চসিক নির্বাচন প্রসঙ্গে সিনিয়র সচিব বলেন, রিটার্নিং অফিসার এবং পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাহিদা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সে পরিমাণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং তাদের কাছে বাজেটও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। কেউ শাস্তিযোগ্য অপরাধ করলে তাকে শাস্তি দিতে প্রতি দুটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। আমরা মনে করি যে, যত রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন তার সবটুকুই সেখানে নেওয়া আছে।

তিনি বলেন, বাইরের লোক যারা ওই এলাকার ভোটার না, ভোটকেন্দ্রে এসে গণ্ডগোল করতে পারে— এ রকম কাজ যাতে করতে না পারে সেজন্য শহরে প্রবেশ করার যে রাস্তাগুলো আছে সেখানে পুলিশি পাহারা থাকবে; যাতে করে ভোটার ছাড়া অন্যকোনো লোকজন ভোটকেন্দ্রে এসে কোনো গণ্ডগোল করতে না পারে বা ভোটকেন্দ্রের বাইরেও যাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো রকম বাধার সৃষ্টি করতে না পারে। আমরা মনে করি যে, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে করার জন্য যা যা করার দরকার তার সব ধরনের ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশন নিয়েছে।

সহিংসতার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা প্রথম দিকে হয়েছিল। তারপর সেখানে সবাই খুব সতর্ক হয়ে গেছেন। এরপর আল্লাহর রহমতে আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা আশা করি ওই ধরনের কোনো ঘটনা আর ঘটবে না। যাতে না ঘটে তার জন্য এই প্রস্তুতি। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১০ হাজারের উপরে সদস্য সেখানে নিয়োজিত আছেন। ওই ধরনের আর কোনো ঘটনা ঘটবে না বলেই আমরা মনে করি।

সচিব আরও বলেন, সবসময় গোয়েন্দা বিভাগ থেকে আমাদের জানানো হয় কোন কোন কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা যখন সেই কেন্দ্রগুলোর তালিকা দেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং পুলিশ প্রশাসন সেই অনুযায়ী সদস্য মোতায়েন করেন। যেখানে সাধারণ সেখানে ১৬ জন করে এবং যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে ১৮ জন থাকবেন এবং সেখানে অস্ত্র বেশি থাকবে। এছাড়াও টহলে যারা থাকবেন এবং টহল ছাড়াও কিছু কিছু এলাকা নিয়ে জোনের মতো করেও থাকবে। পাঁচ বা দশটা কেন্দ্র নিয়ে একটি জোন থাকবে। সেখান থেকে প্রয়োজনে যেন সহযোগিতা করতে পারেন।