একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে চায়: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
- Update Time : ০৮:১১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২১
- / 163
স্টাফ রিপোর্টার:
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান এমপি বলেছেন, যে কোন মতবিরোধ বা মতভিন্নতা আলাপ আলোচনা করে সমাধান করা যায়। আলোচনার মাধ্যমে যে সমাধান আসে সেখানেই সকলের কল্যাণ নিহিত থাকে।
.
তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় বিষয়ে উস্কানি দিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায়। এ বিষয়ে দেশে আলেম,ইমাম, খতীবসহ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে সচেতন থাকতে হবে।
.
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্মীয় বিষয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল। তিনি ওলামা মাশায়েখদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে করোনা মহামারীর মধ্যে হাফেজিয়া, নূরানী মাদ্রাসা এবং কওমী মাদ্রাসা সমূহ চালু রাখার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তিনি ভেবেছেন, নিয়মিত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত,পবিত্র হাদিসের অধ্যায়ন করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে নিয়মিতভাবে দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা করোনাভাইরাস থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করবেন। আলহামদুলিল্লাহ, অন্যান্য দেশের তুলনায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের দেশকে করোনা পরিস্থিতিতে অনেক ভালো রেখেছেন।
.
প্রতিমন্ত্রী আজ সকালে এডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়াম, টাউন হল, ময়মনসিংহ এ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয় আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিভাগীয় শহরে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জীবন ও কর্ম এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় তাঁর অবদান’’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
.
.
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক ও অবিচ্ছেদ্য সত্ত্বা। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানা অপরিহার্য। বিশেষ করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা, আদর্শ এবং কর্ম আমাদেরকে জ্ঞানের পথে পরিচালিত করবে।জাতির পিতার জীবন ও কর্ম সম্পর্কে বেশি বেশি আলোচনা আমাদেরকে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে আলোকিত করবে।
.
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন উদার চেতনার অধিকারী একজন খাঁটি ঈমানদার মুসলমান।তিনি কখনও ইসলামকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেননি। মানবতাবাদী নেতা হিসেবে তিনি বাংলাদেশকে সকল ধর্মের মানুষের জন্য শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সদা সচেষ্ট ছিলেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী তঁার বক্তব্যে আরও বলেন, জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
.
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট নিজ নিজ সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও কল্যাণে বহুকমূখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গীর্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, উন্নয়ন, মেরামত ও সংস্কারে বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রকল্প/কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং অনুদান প্রদান করে যাচ্ছে। যার সুফল সকল সম্প্রদায়ের জনগণ ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছে।
.
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্প সমূহের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে প্রাক-প্রাথমিক ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান করে ধর্মীয় ও নৈতিকতাসম্পন্ন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে তথা উন্নত জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকের বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি একটি কাংখিত বিষয়, যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার এদেশে যে কোন মূল্যে বজায় রাখতে বদ্ধ পরিকর। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতার মূলনীতি যুক্ত করে মূলত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর করে গিয়েছেন। তারই সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আদর্শ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আজকের পৃথিবীতে যে দেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী যত বেশী নিরাপদও ভালো অবস্থায় আছে সে দেশকে ততটা সভ্য ও উন্নত দেশ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে।
.
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়সমূহের কল্যাণ ও নিরাপত্তা বিধানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আমরা একটি সভ্য দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কাজ করে যাব, ইনশাআল্লাহ।
.
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান এনডিসি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি ব্যারিস্টার মো: হারুন অর রশিদ বিপিএম, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক, মো: মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার, ময়মনসিংহ, মোহা:আহমার উজ্জামান পিপিএম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর পরিচালক ড. আব্দুস ছালাম প্রমুখ।
Tag :