করোনা মোকাবেলায় যুবকদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
- Update Time : ০৮:২৯:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জুলাই ২০২০
- / 158
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় যুবকদের স্থিতিশীল ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ধারণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার বিকেলে দু’দিন-ব্যাপী ‘ঢাকা-ওআইসি ইয়থ ক্যাপিটাল ২০২০’ এর অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি। এসময় করোনা মহামারি কবল থেকে মানবতার মৌলিক অস্তিত্ব রক্ষায় বিশ্বব্যাপী আরো সহযোগিতারও আহ্বান জানান তিনি। খবর বাসসের
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যুবকদের স্থিতিশীল ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ধারণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে নিজেদের সম্পৃক্ত করার সূবর্ণ সুযোগ রয়েছে। প্রাণবন্ত যুবকরা তা দেখাতে সক্ষম হবে বলে আমরা আশা করি।’
তিনি আরো বলেন, দেখা যাচ্ছে যে, প্রাকৃতিক পরিবেশের লালিত মানুষ এই মহামারির সঙ্গে ভালোভাবেই লড়াই করছে। তাই আমাদের অবশ্যই দৈনন্দিন জীবনে মৌলিক প্রকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা পুনর্গঠনের’ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন এভাবে হতে পারে-
প্রথমত: উদ্বেগের কারণে সুরক্ষাবাদের নামে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে আরও নিয়ন্ত্রণ, অভিবাসন ও ভিসা নীতিমালায় আরো কঠোর হতে পারে। তবে, এটি মহামারি মোকাবিলার জন্য বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে।
দ্বিতীয়ত: এটা পরিস্কার যে কোভিট-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি ২০০৮-২০০৯ এর অর্থনৈতিক সঙ্কটকে ছাড়াবে। তবে, নেটওয়ার্কযুক্ত অর্থায়ন ও সম্পদ সৃষ্টির নতুন মাত্রা যোগ করবে।
তৃতীয়ত: এরূপ অর্থনীতির ওপর এতবড় অভিঘাত গত কয়েক দশকেও দেখা যায়নি। শুধুমাত্র ১০ এপ্রিলের মধ্যে বিশ্বের সরকারগুলো বিশ্বব্যাপী ১০. ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি উদ্বীপনা পরিকল্পনা ঘোষনা করেছিলো। এটি আটটি মার্শাল প্লানের সমতুল্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি সর্বত্র – সরকার, প্রাইভেট সেক্টর, আন্তর্জাতিক কমিউনিটি এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দের কাছে অস্বাভাবিক দাবি জানাচ্ছে। একটি সঙ্কটের সময়ে কি ধরনের নেতৃত্ব প্রয়োজন তা পুননির্ধারিত পরিকল্পনায় হয় না বরং এই প্রক্রিয়ায় জড়িত মানুষের আচরণ ও মানসিকতায় তা গড়ে ওঠে। কোভিড-১৯ চূর্ণবিচূর্ণ মাত্রার রৌপ্য রেখা তুল্য ঠুনকো বাধাগুলি দূর করে কর্মক্ষেত্রে উদ্ভাবনের গতি ও মাত্রা যোগ করতে বাধ্য করছে। এর বিকল্প হিসেবে আমরা অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান নিতে পারি এবং এই বিপর্যস্থ পরিস্থিতিতে সবধরণের বাধা মোকাবিলা করে আমরা উদ্ভাবনের জন্য নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে নমনীয়তা ও গতিশীলতা আনতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জনসংখ্যা ব্যবসা ও কৃষিক্ষেত্রের দূর্বলতা কাটিয়ে ঊঠতে ১২. ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘোষণা করেছে যা জিডিপির ৩.৭ শতাংশ। খাদ্যে নিরাপত্তা অর্জন, স্বাস্থ্য ও সেনিটেশন উন্নতি ও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ ও নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
আগামী তিন দশকে বিশ্বব্যাপী তিনটি দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির একটি হিসেবে বিশ্বব্যাপী মূল্যায়ন অভিক্ষেপণ বাংলাদেশের দিকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২৬ তম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ২৩ তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর জন্য তার সরকারের ভিশন-২০২১ এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি শুধুমাত্র ৫৩ মিলিয়ন তরুণের ডিজিটাল সৃজনশীলতা উন্মোচনের নীলনকশা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের প্রাক-কোভিড-১৯ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮.১৩ শতাংশ পর্যন্ত দ্রুত ট্র্যাক করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোর পূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তিনি ওআইসি এবং এর সকল সদস্য রাষ্ট্রকে বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত এই জনগোষ্ঠীর প্রতি তাদের উদার সহায়তা প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জানান। নিয়মতান্ত্রিকভাবে অস্বীকার করা সত্ত্বেও, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাহায্যে তাদের মাতৃভূমিতে তাদের নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।