সেই মানবিক পুলিশ অফিসার, নাজমুল হান্নানের ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস

  • Update Time : ০৬:১৪:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০
  • / 517
মানবিক পুলিশ অফিসার, নাজমুল হান্নানের ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। করোনা ক্রান্তিকালে নিজের বেতন রেশন দিয়ে ছিন্নমুলের মানুষদের রাতের আধারে রান্নাকরে খাইয়ে ইতোপুর্বে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছেন, মানুষের অনেক প্রশংসা, ভালোবাসা পেয়েছেন সেই মানবিক পুলিশ অফিসার নাজমুল হান্নান তার ব্যাক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বর্তমান করোনা এবং করোনা ব্যাবসা নিয়ে একটি চমৎকার স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
.
লেখাটি নিন্মে পাঠকদের উদ্দেশ্যে হুবাহু তুলে ধরা হলো:
.
জনস্রোতে তাহারাই আমার প্রেম!
.
মানুষ হরেক রুপি, সিংহের কথা বলে। কিন্তু আসলে পছন্দ করে গাঁধাকে। অধীনস্থ কাজের লোক যদি খুব সাহসী স্পষ্টভাষী চড়ামেজাজী হয় তাহলে নিশ্চয়ই বসের পছন্দ হবে না। বস চায় গাধার মতো ভারবাহী কাউকে পেতে। যে মুখ বুজে সারাদিন কাজ করে যাবে। আবার মানুষের মধ্যে প্রচন্ড রকম দ্বিচারিতা কাজ করে।
.
যেমন গরু আমাদের এতো উপকারী প্রাণী। কিন্তু কাউকে গরু বলে দেখুন না কী অবস্থা হয়! আপনি যদি কোন মানুষের বাচ্চাকে সাবাশ গরুর বাচ্চা বলে অভিনন্দিত করতে যান তাহলে একটা রক্তারক্তি ঘটনা ঘটে যাবে। কিন্তু আপনি যদি বলেন, সাবাশ বাঘের বাচ্চা তাহলে আনন্দে সে আত্মহারা হয়ে সাথে সাথে আপনাকে সালাম ঠুকবে কিংবা বুকে জড়িয়ে ধরবে।
.
বাঘ আমার সরাসরি কী উপকারটা করে! দেখা হলেই তো হামলে পরে ঘাড় মটকে রক্ত চুষে নিবে।তারপরও বাঘের বাচ্চা বললে আমাদের বুকের ছাতিখান তিনখান হয়ে যায়। অন্যদিকে গরু সারাবছর আমাদের কত উপকার করে। দুধ, জৈব পদার্থসহ লাঙ্গল দিয়ে হাল চাষে কত কাজই না করে। এতো উপকারী একটা প্রাণীর নামে বললেই দফা রফা!এর জন্যই বলা হয় এক মানুষের চরিত্রে নানা চরিত্র সবসময় বিরাজমান।
.
কোভিড-১৯ এর আগে আমরা ঘরে থাকতে চেয়েছি। এখন আমরা বাইরে থাকতে চাই। যে পুলিশ ভাইটি ,সহ আইনশৃংখলায় নিয়োজিত সকল সদস্য, সাংবাদিক,ডাক্তার,নার্স সহ সেবামুলক পেশায় নিয়জিত, রাস্তায় দাঁড়িয়ে করোনাকে জীবনের ঝুকি নিয়ে ঠেকিয়ে রাখতে গিয়ে,অসহায়দের পাশে দাড়াতে গিয়ে, চিকিৎসা,সেবা দিতে গিয়ে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছে,মারা গিয়েছে, জনস্রোতে তাহারাই আমার প্রেম। স্যালুট জানাই তাদেরকে।
.
আমি কোন কবিকেও দেখিনি বাতাসে এম মৃত্যুগন্ধী দেখেও, বুকে প্রচন্ড সাহস নিয়ে নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে জীবনের কাব্য লিখতে। তোমাদের ভাই কলিজা আছে। এটা শুধু মাতাল সুফিদের থাকে, দেশের এই ক্রান্তিকালে কেহ জীবন যুদ্ধ করে, মরে আর কেহ এই মরণঘাতী নিয়ে রমরমা ব্যাবসা করে, সাহেদ সাবরিনারা রুপ আর রুপেয়ার জৌলুসে কত সুন্দর করে কথা বলে।
.
এরকমের প্রতারণা না করলেও বা তাদের এমন কি ক্ষতি হত? ভেতরে এরা কাউকে ভয় পায় না। না সৃষ্টিকর্তাকে না রাষ্ট্রের আইনকে। আমরা এমন একটা রাষ্ট্র বানাই যেখানে সবাই মিলে শ্রম দিবো। কিন্তু যার যতটুকু আছে সাধ্যমত দিব দেশকে দেশের মানুষকে, যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই গ্রহণ করবো।
.
আমরা কোন প্রানীর বাচ্চা না হয়ে প্রকৃত মানুষের বাচ্চা হই। তাহলেই মন খুলে বলতে পারবো, আমার সোনার বাংলা- আমি তোমায় ভালোবাসি,,,। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, সচেতন হউন।
.
ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত
নাজমুল হান্নান (মানবিক পুলিশ অফিসার)
উপ-পুলিশ পরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ।
.
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সেই মানবিক পুলিশ অফিসার, নাজমুল হান্নানের ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস

Update Time : ০৬:১৪:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০
মানবিক পুলিশ অফিসার, নাজমুল হান্নানের ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। করোনা ক্রান্তিকালে নিজের বেতন রেশন দিয়ে ছিন্নমুলের মানুষদের রাতের আধারে রান্নাকরে খাইয়ে ইতোপুর্বে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছেন, মানুষের অনেক প্রশংসা, ভালোবাসা পেয়েছেন সেই মানবিক পুলিশ অফিসার নাজমুল হান্নান তার ব্যাক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বর্তমান করোনা এবং করোনা ব্যাবসা নিয়ে একটি চমৎকার স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
.
লেখাটি নিন্মে পাঠকদের উদ্দেশ্যে হুবাহু তুলে ধরা হলো:
.
জনস্রোতে তাহারাই আমার প্রেম!
.
মানুষ হরেক রুপি, সিংহের কথা বলে। কিন্তু আসলে পছন্দ করে গাঁধাকে। অধীনস্থ কাজের লোক যদি খুব সাহসী স্পষ্টভাষী চড়ামেজাজী হয় তাহলে নিশ্চয়ই বসের পছন্দ হবে না। বস চায় গাধার মতো ভারবাহী কাউকে পেতে। যে মুখ বুজে সারাদিন কাজ করে যাবে। আবার মানুষের মধ্যে প্রচন্ড রকম দ্বিচারিতা কাজ করে।
.
যেমন গরু আমাদের এতো উপকারী প্রাণী। কিন্তু কাউকে গরু বলে দেখুন না কী অবস্থা হয়! আপনি যদি কোন মানুষের বাচ্চাকে সাবাশ গরুর বাচ্চা বলে অভিনন্দিত করতে যান তাহলে একটা রক্তারক্তি ঘটনা ঘটে যাবে। কিন্তু আপনি যদি বলেন, সাবাশ বাঘের বাচ্চা তাহলে আনন্দে সে আত্মহারা হয়ে সাথে সাথে আপনাকে সালাম ঠুকবে কিংবা বুকে জড়িয়ে ধরবে।
.
বাঘ আমার সরাসরি কী উপকারটা করে! দেখা হলেই তো হামলে পরে ঘাড় মটকে রক্ত চুষে নিবে।তারপরও বাঘের বাচ্চা বললে আমাদের বুকের ছাতিখান তিনখান হয়ে যায়। অন্যদিকে গরু সারাবছর আমাদের কত উপকার করে। দুধ, জৈব পদার্থসহ লাঙ্গল দিয়ে হাল চাষে কত কাজই না করে। এতো উপকারী একটা প্রাণীর নামে বললেই দফা রফা!এর জন্যই বলা হয় এক মানুষের চরিত্রে নানা চরিত্র সবসময় বিরাজমান।
.
কোভিড-১৯ এর আগে আমরা ঘরে থাকতে চেয়েছি। এখন আমরা বাইরে থাকতে চাই। যে পুলিশ ভাইটি ,সহ আইনশৃংখলায় নিয়োজিত সকল সদস্য, সাংবাদিক,ডাক্তার,নার্স সহ সেবামুলক পেশায় নিয়জিত, রাস্তায় দাঁড়িয়ে করোনাকে জীবনের ঝুকি নিয়ে ঠেকিয়ে রাখতে গিয়ে,অসহায়দের পাশে দাড়াতে গিয়ে, চিকিৎসা,সেবা দিতে গিয়ে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছে,মারা গিয়েছে, জনস্রোতে তাহারাই আমার প্রেম। স্যালুট জানাই তাদেরকে।
.
আমি কোন কবিকেও দেখিনি বাতাসে এম মৃত্যুগন্ধী দেখেও, বুকে প্রচন্ড সাহস নিয়ে নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে জীবনের কাব্য লিখতে। তোমাদের ভাই কলিজা আছে। এটা শুধু মাতাল সুফিদের থাকে, দেশের এই ক্রান্তিকালে কেহ জীবন যুদ্ধ করে, মরে আর কেহ এই মরণঘাতী নিয়ে রমরমা ব্যাবসা করে, সাহেদ সাবরিনারা রুপ আর রুপেয়ার জৌলুসে কত সুন্দর করে কথা বলে।
.
এরকমের প্রতারণা না করলেও বা তাদের এমন কি ক্ষতি হত? ভেতরে এরা কাউকে ভয় পায় না। না সৃষ্টিকর্তাকে না রাষ্ট্রের আইনকে। আমরা এমন একটা রাষ্ট্র বানাই যেখানে সবাই মিলে শ্রম দিবো। কিন্তু যার যতটুকু আছে সাধ্যমত দিব দেশকে দেশের মানুষকে, যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই গ্রহণ করবো।
.
আমরা কোন প্রানীর বাচ্চা না হয়ে প্রকৃত মানুষের বাচ্চা হই। তাহলেই মন খুলে বলতে পারবো, আমার সোনার বাংলা- আমি তোমায় ভালোবাসি,,,। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, সচেতন হউন।
.
ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত
নাজমুল হান্নান (মানবিক পুলিশ অফিসার)
উপ-পুলিশ পরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ।
.