চসিকের সড়কবাতি জ্বালানোতে সোয়া দুই কোটি টাকা সাশ্রয়: চসিক মেয়র

  • Update Time : ০৫:৫০:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০
  • / 195

নিজস্ব প্র‌তি‌বেদক:

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নিজস্ব জনবল নিয়োগ না করে নগরীর সড়কবাতি জ্বালানো-নেভানোতে মসজিদ-মন্দিরসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে সুইচ অন-অফের দায়িত্ব ইমাম-মুয়াজ্জিন পুরোহিতদের হাতে তুলে দেয়ায় সিটি করপোরেশনের বার্ষিক বেতন-ভাতা ও বিদ্যুৎ বাবদ সোয়া দুই কোটি টাকারও বেশি খরচ সাশ্রয় হচ্ছে।

এ ছাড়াও সড়কবাতির সুইচ অন-অফের বর্তমান পদ্ধতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়োজনীয় জনবলের চাহিদার চাপ কমানোর পাশাপাশি মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের প্রধানদের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনের তাগিদ তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম মিলনায়তনে নগরীর সড়ক বাতির সুইচ অন-অফকারী মসজিদের ইমাম- মুয়াজ্জিন ও মন্দিরের পুরোহিতদের সম্মানীভাতা প্রধান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, সড়ক বাতি জ্বালানো-নেভানোর বর্তমান পদ্ধতির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। ১৯৯৪ সালের আগে সিটি করপোরেশনের দৈনিক ভিত্তিক লোকবল দ্বারা সুইচ অফ-অন করার ব্যবস্থা ছিল। একই ব্যক্তি দ্বারা ১০/১৫টি সুইচ অফ-অন করায় দৈনিক কমপক্ষে দুই ঘন্টা বিদ্যুৎ অপচয় হতো। বর্তমান পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি করপোরেশনের আর্থিক সাশ্রয় হচ্ছে। তাই পদ্ধতিটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি জনকল্যাণমুখী সফল ও কার্যকর উদ্যোগ।

মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের প্রধানদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, আপনারা সমাজের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। আপনাদের কথা সবাই শুনেন ও বুঝতে চেষ্টা করেন। আপনারা যেভাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সড়ক বাতি অফ-অন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়ে সমাজকে সেবা দিচ্ছেন একইভাবে করোনাকালে জনসেচতনতা বৃদ্ধিতেও দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

উল্লেখ্য যে, ১৯৯৪ সালের আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ১৮টি ওয়ার্ড এলাকায় সড়ক বাতির ব্যবস্থা ছিল। পরবর্তীতে ৪১টি ওয়ার্ড এলাকায় আলো সেবা প্রদান কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সম্প্রসারিত হয়। যার সংখ্যা বর্তমানে সোডিয়াম ও এলইডি বাতিসহ ৫১ হাজার ৫৭৩টি। বর্তমানে ১৪২৯টি সুইচিং পয়েন্ট মসজিদ-মন্দিরে স্থাপন করা হয়েছে। এজন্য ইমাম, মুয়াজ্জিন ও পুরোহিতদের সম্মানিভাতা বাবদ ব্যয় হচ্ছে ৩৫ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা।

এই একই সুইচিং পয়েন্টগুলোতে পূর্বের নিয়মানুযায়ী দৈনিক ভিত্তিক লোকবল দ্বারা অন-অফ করা হলে বার্ষিক ব্যয় হবে এক কোটি ৮৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০০ টাকা। বর্তমান পদ্ধতিতে সুইচ অফ-অন করানোর ফলে বেতন বাবদ বার্ষিক সাশ্রয় হচ্ছে এক কোটি ২৯ লাখ ৫৬ হাজার ৩০০ টাকা। বিদ্যুৎ বাবদ সাশ্রয় হচ্ছে ৯৮ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫০ টাকা। সর্বমোট বার্ষিক সাশ্রয়ের পরিমাণ হলো দুই কোটি ২৭ লাখ ৯৩ হাজার ৫০ টাকা।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ জোবায়েরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মানী প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কান্তি দাশ, প্রকৌশলী আনোয়ারুল হক চৌধুরী ও জাহিদুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


চসিকের সড়কবাতি জ্বালানোতে সোয়া দুই কোটি টাকা সাশ্রয়: চসিক মেয়র

Update Time : ০৫:৫০:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০

নিজস্ব প্র‌তি‌বেদক:

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নিজস্ব জনবল নিয়োগ না করে নগরীর সড়কবাতি জ্বালানো-নেভানোতে মসজিদ-মন্দিরসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে সুইচ অন-অফের দায়িত্ব ইমাম-মুয়াজ্জিন পুরোহিতদের হাতে তুলে দেয়ায় সিটি করপোরেশনের বার্ষিক বেতন-ভাতা ও বিদ্যুৎ বাবদ সোয়া দুই কোটি টাকারও বেশি খরচ সাশ্রয় হচ্ছে।

এ ছাড়াও সড়কবাতির সুইচ অন-অফের বর্তমান পদ্ধতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়োজনীয় জনবলের চাহিদার চাপ কমানোর পাশাপাশি মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের প্রধানদের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনের তাগিদ তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম মিলনায়তনে নগরীর সড়ক বাতির সুইচ অন-অফকারী মসজিদের ইমাম- মুয়াজ্জিন ও মন্দিরের পুরোহিতদের সম্মানীভাতা প্রধান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, সড়ক বাতি জ্বালানো-নেভানোর বর্তমান পদ্ধতির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। ১৯৯৪ সালের আগে সিটি করপোরেশনের দৈনিক ভিত্তিক লোকবল দ্বারা সুইচ অফ-অন করার ব্যবস্থা ছিল। একই ব্যক্তি দ্বারা ১০/১৫টি সুইচ অফ-অন করায় দৈনিক কমপক্ষে দুই ঘন্টা বিদ্যুৎ অপচয় হতো। বর্তমান পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি করপোরেশনের আর্থিক সাশ্রয় হচ্ছে। তাই পদ্ধতিটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি জনকল্যাণমুখী সফল ও কার্যকর উদ্যোগ।

মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের প্রধানদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, আপনারা সমাজের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। আপনাদের কথা সবাই শুনেন ও বুঝতে চেষ্টা করেন। আপনারা যেভাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সড়ক বাতি অফ-অন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়ে সমাজকে সেবা দিচ্ছেন একইভাবে করোনাকালে জনসেচতনতা বৃদ্ধিতেও দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

উল্লেখ্য যে, ১৯৯৪ সালের আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ১৮টি ওয়ার্ড এলাকায় সড়ক বাতির ব্যবস্থা ছিল। পরবর্তীতে ৪১টি ওয়ার্ড এলাকায় আলো সেবা প্রদান কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সম্প্রসারিত হয়। যার সংখ্যা বর্তমানে সোডিয়াম ও এলইডি বাতিসহ ৫১ হাজার ৫৭৩টি। বর্তমানে ১৪২৯টি সুইচিং পয়েন্ট মসজিদ-মন্দিরে স্থাপন করা হয়েছে। এজন্য ইমাম, মুয়াজ্জিন ও পুরোহিতদের সম্মানিভাতা বাবদ ব্যয় হচ্ছে ৩৫ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা।

এই একই সুইচিং পয়েন্টগুলোতে পূর্বের নিয়মানুযায়ী দৈনিক ভিত্তিক লোকবল দ্বারা অন-অফ করা হলে বার্ষিক ব্যয় হবে এক কোটি ৮৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০০ টাকা। বর্তমান পদ্ধতিতে সুইচ অফ-অন করানোর ফলে বেতন বাবদ বার্ষিক সাশ্রয় হচ্ছে এক কোটি ২৯ লাখ ৫৬ হাজার ৩০০ টাকা। বিদ্যুৎ বাবদ সাশ্রয় হচ্ছে ৯৮ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫০ টাকা। সর্বমোট বার্ষিক সাশ্রয়ের পরিমাণ হলো দুই কোটি ২৭ লাখ ৯৩ হাজার ৫০ টাকা।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ জোবায়েরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মানী প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কান্তি দাশ, প্রকৌশলী আনোয়ারুল হক চৌধুরী ও জাহিদুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।