ভারতীয় সাংবাদিকের উদ্যোগে ৫ বছর পর দেশে ফিরছেন পূরবী

  • Update Time : ০৩:৪২:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুন ২০২০
  • / 125

হারিয়ে যাওয়ার ৫ বছর পর পরিবারের সন্ধান পেলেন যশোরের পূরবী মহলদার নামক এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী। ভারতের আসাম রাজ্যের হরিনগরে ঘুরে বেড়ানো পূরবী অবশেষে যশোরের অভয়নগরের একতারপুরে ফিরতে যাচ্ছেন।

আগামী ৩০ জুন সিলেটের করিমগঞ্জের সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন। ভারতের এক সংবাদকর্মীর উদ্যোগ এবং যশোরের পুলিশ প্রশাসন ও রাইটস যশোর’র সহযোগিতায় তিনি পরিবারে স্বামী-সন্তানের কাছে ফিরবেন।

রাইটস যশোরের তথ্য কর্মকর্তা বজলুর রহমান জানান, পূরবী মহলদার প্রায় ৫ বছর আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর পরিবারে ফেরেননি। তার স্বামী-সন্তানেরা অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও তাকে খুঁজে পাননি।

এদিকে, তার সন্ধান প্রকাশ্যে আনেন ভারতের সংবাদকর্মী সুজন দেবরায়। সুজনের আত্মীয় ধ্রুব দাস ও তার বন্ধুরা প্রথমে পূরবী মহলদারকে কাছাড়ের হরিনগরে ঘুরতে দেখে তাকে পাগল মনে করেন। তারপরও তার নাম-ঠিকানা বের করার চেষ্টা করেন তারা।

চেষ্টা সফলও হয়। কথার এক পর্যায়ে তার পূরবী নামের সাথে বেরিয়ে আসে বাংলাদেশের যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার একতারপুর গ্রামের নাম। এবার ধ্রুব বিষয়টি রবিনহুড আর্মির সদস্য সাংবাদিক সুজনকে জানালে সুজন দেবরায় পূরবীর পরিবারের সন্ধানের প্রচেষ্টা শুরু করেন।

সুজন তার ফেসবুক পেজে পূরবীর ছবি ও নাম-ঠিকানাসহ একটি পোস্ট করে বাংলাদেশি বন্ধুদের সহায়তা চান। একই সাথে যশোরের পুলিশ সুপার আশরাফ উদ্দিনের সাথে তার ঠিকানা নিশ্চিত করতে যোগাযোগ করেন।

পুলিশ সুপারও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে পদক্ষেপ নেন। কাজে লাগান পুলিশ সদস্যদের। দুই দিনের মাথায় পূরবী মহলদারের প্রকৃত ঠিকানা ও স্বামী মহীতোষ মহলদার ও সন্তান জয় মহলদারের খোঁজ মেলে।

এবার পুলিশ সুপার আশরাফ উদ্দিন পূরবীকে ভারত থেকে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে রাইটস যশোর-এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিকের সহযোগিতা চান। কাজ শুরু করে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোর।

ভারত বাংলাদেশের হাইকমিশনের মাধ্যমে পত্র আদান-প্রদানের পর আসামের গোহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাই কমিশনার ডক্টর মোহাম্মদ তানভীর মনসুরের সহযোগিতায় আগামী ৩০ জুন ভারত থেকে পূরবী মহলদারের বাংলাদেশে ফেরার দিনক্ষণ ঠিক হয়। তিনি সিলেটের করিমগঞ্জের সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আইনী প্রক্রিয়া শেষে স্বামীর কাছে হস্তান্তরিত হবেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ভারতীয় সাংবাদিকের উদ্যোগে ৫ বছর পর দেশে ফিরছেন পূরবী

Update Time : ০৩:৪২:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুন ২০২০

হারিয়ে যাওয়ার ৫ বছর পর পরিবারের সন্ধান পেলেন যশোরের পূরবী মহলদার নামক এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী। ভারতের আসাম রাজ্যের হরিনগরে ঘুরে বেড়ানো পূরবী অবশেষে যশোরের অভয়নগরের একতারপুরে ফিরতে যাচ্ছেন।

আগামী ৩০ জুন সিলেটের করিমগঞ্জের সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন। ভারতের এক সংবাদকর্মীর উদ্যোগ এবং যশোরের পুলিশ প্রশাসন ও রাইটস যশোর’র সহযোগিতায় তিনি পরিবারে স্বামী-সন্তানের কাছে ফিরবেন।

রাইটস যশোরের তথ্য কর্মকর্তা বজলুর রহমান জানান, পূরবী মহলদার প্রায় ৫ বছর আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর পরিবারে ফেরেননি। তার স্বামী-সন্তানেরা অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও তাকে খুঁজে পাননি।

এদিকে, তার সন্ধান প্রকাশ্যে আনেন ভারতের সংবাদকর্মী সুজন দেবরায়। সুজনের আত্মীয় ধ্রুব দাস ও তার বন্ধুরা প্রথমে পূরবী মহলদারকে কাছাড়ের হরিনগরে ঘুরতে দেখে তাকে পাগল মনে করেন। তারপরও তার নাম-ঠিকানা বের করার চেষ্টা করেন তারা।

চেষ্টা সফলও হয়। কথার এক পর্যায়ে তার পূরবী নামের সাথে বেরিয়ে আসে বাংলাদেশের যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার একতারপুর গ্রামের নাম। এবার ধ্রুব বিষয়টি রবিনহুড আর্মির সদস্য সাংবাদিক সুজনকে জানালে সুজন দেবরায় পূরবীর পরিবারের সন্ধানের প্রচেষ্টা শুরু করেন।

সুজন তার ফেসবুক পেজে পূরবীর ছবি ও নাম-ঠিকানাসহ একটি পোস্ট করে বাংলাদেশি বন্ধুদের সহায়তা চান। একই সাথে যশোরের পুলিশ সুপার আশরাফ উদ্দিনের সাথে তার ঠিকানা নিশ্চিত করতে যোগাযোগ করেন।

পুলিশ সুপারও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে পদক্ষেপ নেন। কাজে লাগান পুলিশ সদস্যদের। দুই দিনের মাথায় পূরবী মহলদারের প্রকৃত ঠিকানা ও স্বামী মহীতোষ মহলদার ও সন্তান জয় মহলদারের খোঁজ মেলে।

এবার পুলিশ সুপার আশরাফ উদ্দিন পূরবীকে ভারত থেকে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে রাইটস যশোর-এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিকের সহযোগিতা চান। কাজ শুরু করে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোর।

ভারত বাংলাদেশের হাইকমিশনের মাধ্যমে পত্র আদান-প্রদানের পর আসামের গোহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাই কমিশনার ডক্টর মোহাম্মদ তানভীর মনসুরের সহযোগিতায় আগামী ৩০ জুন ভারত থেকে পূরবী মহলদারের বাংলাদেশে ফেরার দিনক্ষণ ঠিক হয়। তিনি সিলেটের করিমগঞ্জের সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আইনী প্রক্রিয়া শেষে স্বামীর কাছে হস্তান্তরিত হবেন।