শর্ত মানেনি ইসকন, বাতিল হবে প্রবর্তকের সঙ্গে চুক্তি
- Update Time : ১০:৪৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১
- / 183
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জমি আত্মসাৎ, শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে ভক্তদের দানের অর্থ লোপাটসহ নানান কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে ইসকনের সঙ্গে হওয়া চুক্তি বাতিলের জন্য আইনগত প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে প্রবর্তক সংঘ।
শনিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হল মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রবর্তক ও ইসকন উভয়পক্ষের মৌখিক আবেদনের প্রেক্ষিতে অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ঢাকায় গত ২ এপ্রিল সমঝোতা বৈঠক ডাকেন। কিন্তু সেখানে ইসকন কর্তৃপক্ষ উপস্থিত হয়নি। এ অবস্থার মধ্যে গত ১৩-১৬ মে ইসকন নবনির্মিত প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির উদ্বোধন করেছে প্রবর্তক সংঘের অংশগ্রহণ ছাড়াই।
ইতিমধ্যে প্রবর্তক সংঘ থেকে মন্দিরে ওঠার জন্য ভিতরের সিঁড়িটি ইসকন নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। মন্দিরের আশপাশে চুক্তি বহির্ভূত জায়গায় তারা অনুপ্রবেশ করেছে। বায়েজিদ বোস্তামি সড়ক থেকে মন্দিরে ওঠার পথে ভিতরে নিরাপত্তা চৌকি সংলগ্ন একটি শতবর্ষ প্রাচীন গাছ অপসারণ করেছে। এতে পাহাড়ের মাটি ক্ষয় হচ্ছে। এসব ঘটনায় প্রবর্তক সংঘ থেকে ইসকনের কয়েকজনকে আসামি করে চট্টগ্রাম আদালতে গত ৮ জুন মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসকন নাম ব্যবহার করে প্রবর্তক সংঘের অনুমতি ছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগ, কর্ণফুলী গ্যাস ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কাছে জাল দলিল দিয়ে সংযোগ নেওয়া হয়েছে।
দায়ীদের শাস্তির আওতায় এনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য প্রবর্তক সংঘের পক্ষ থেকে সকল প্রতিষ্ঠানে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া দুদকে প্রবর্তক সংঘের পক্ষ থেকে ইসকনের বিরুদ্ধে গত ১৬ জুন অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসকন কর্তৃপক্ষ প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির নির্মাণে কত টাকা খরচ করেছে তার হিসেব নেই। চুক্তি অনুযায়ী প্রবর্তক-ইসকন যৌথ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভা আহ্বান করে মন্দির নির্মাণের হিসাব ও তার সমর্থনে কাগজপত্র দেখাতে বললে কমিটির সম্পাদক অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মন্দির নির্মাণে যে পাথর ও লৌহ কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে তা কর রেয়াত সুবিধা নিয়ে আমদানি করা হয়েছে। চুক্তি মোতাবেক প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের নামে ব্যাংকে প্রবর্তক সংঘ ও ইসকনের সভাপতি-সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে একাউন্ট খোলার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ইসকন কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
তিনকড়ি চক্রবর্তী বলেন, গত ৩০ মার্চ চট্টগ্রামের সনাতন সম্প্রদায়ের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল-যৌথ চুক্তির শর্ত মোতাবেক প্রবর্তকবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য ইসকনের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে হবে। সেহেতু চুক্তি বাতিলের জন্য প্রবর্তক সংঘ আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণের প্রস্তুতি শেষ করেছে। প্রবর্তকের জমি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার জন্য প্রবর্তক পরিচালনা পরিষদ সশস্ত্র আনসার নিয়োগের জন্য আবেদন জানাচ্ছে। কারণ, এই মন্দির ও জমির একমাত্র মালিক প্রবর্তক সংঘ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রবর্তক সংঘের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালা, সহ-সভাপতি প্রফেসর রনজিৎ কুমার দে, ট্রেজারার ডা. শ্রীপ্রকাশ বিশ্বাস, সদস্য অ্যাডভোকেট স্বভূ প্রসাদ বিশ্বাস, চন্দন ধর, প্রফেসর রনজিত ধর, রূপক ভট্টাচার্য্য, ইঞ্জিনিয়ার ঝুলন কান্তি দাশ, অ্যাডভোকেট অমর প্রসাদ ধর প্রমুখ।