ময়মনসিংহের গৌরীপুরে মোবাইল চুরির অপবাদে ৯ বছরের এক শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দিনভর এলাকায় চলে আলোচনা-সমালোচনা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ফাতেমা বেগম (৪৫) ও ফাতেমার ছেলে হিমেলকে (২৫) গ্রেফতার করেছে গৌরীপুর থানা পুলিশ।
অভিযুক্ত ফাতেমা বেগম ডৌহাখলা ইউনিয়নের তাতকুড়া গ্রামের মৃত বারেকের স্ত্রী।
শিশু নির্যাতন ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গৌরীপুর থানার ওসি খান মো. আব্দুল হালিম সিদ্দিকী। তিনি জানান, গৌরীপুরে দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) প্রকাশ পেয়েছে। শুক্রবার (৪ জুন) দুপুরে রামগোপালপুর ইউনিয়নের মধুবন আদর্শ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যেই গোপন থাকে। পরে নির্যাতনের ভিডিও বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) শেয়ার দিলে জানাজানি হয়।
নির্যাতনের শিকার ওই শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।
এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার শিশু শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, গতমাসের শেষের সপ্তাহে ফাতেমা বেগমের ভাইয়ের স্ত্রী আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গাছ থেকে আম পেড়ে দিতে বলে। পরে সে আম পাড়ার জন্য গাছে উঠলে ফাতেমা ও তার ছেলে হিমেল তাকে পিটিয়ে গাছ থেকে নামায়। এরপর থেকে সে জ্বরে ভোগে।
তিনি আরও বলেন, জ্বর থেকে সেরে উঠলে গত শুক্রবার (৪ জুন) আমি বাড়িতে না থাকায় ফাতেমার ছেলে হিমেল আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে নিয়ে গাছের সঙ্গে গরুর রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করে। পরে আমি বিষয়টি জানতে পেরে ছেলেকে তাদের বাড়িতে গিয়ে রশি খুলে বাড়িতে নিয়ে আসি। এরপর গ্রামের মুরব্বিদের জানালে বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়। তবে মোবাইল চুরির বিষয়টি মিথ্যা দাবি করেছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, আমার স্ত্রী পাঁচ বছর আগে সৌদি আরবে যান। এরপর থেকে ছেলেমেয়েদের নিজেই লালনপালন করছি। বাড়ির বাইরে কাজে গেলে স্থানীয়রা বিভিন্ন কাজ করায়। প্রতিবেশীরাও ছেলেকে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিচার দাবিতে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে মধুবন আদর্শ গ্রামের সভাপতি জামাল আহমেদ বলেন, নির্যাতনের বিষয়টি গত মঙ্গলবার জানতে পেরেছি। বুধবার বিষয়টি নিয়ে বসার কথা ছিল, কিন্তু বসা হয়নি। তিনিও এই নির্যাতনের সঠিক বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মারুফ বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে বিস্তারিত জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।